আজকের তারিখঃ | বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বরিশালে বিসিক উদ্যোক্তা মেলায় স্টল বরাদ্দে অনিয়ম বরিশালে তালাশ বিডি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন বরিশাল কর অফিসের রতন মোল্লার হাতে আলাদিনের চেরাগ,একই কর্মস্থলে ১০ বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ২৩৭ আসনে বিএনপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা নুর, সাকি, মান্নাসহ মিত্রদের জন্য ৬৩ আসন ফাঁকা রেখেছে বিএনপি তিন আসনে লড়বেন বেগম খালেদা জিয়া ১ হাজার ৮৯ ইবতেদায়ি মাদরাসা অনুমোদন পেয়েছে এমপিওভুক্তির জামায়াত মানুষের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না : নুরুল কবির বরিশালের ১৬টি আসনে বিএনপির প্রার্থী যারা বরিশালে সাংবাদিকতার নামে চাঁদাবাজি ও অপসাংবাদিকতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ ৩৫ সংগঠন গণপূর্তের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সমবায় বিভাগের সংস্কার জরুরি,ফরিদপুরে সমবায় বিভাগের হয়রানি আর কূটকৌশল ভোটে কোটি টাকা খরচকারীদের চক্র ভাংতে হবে - ঝালকাঠিতে ব্যারিস্টার ফুয়াদ জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে হবে-হাসনাত আবদুল্লাহ দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা ঝুকিপূর্ণ,আটকে আছে ১৭শ কিলোমিটার সড়ক মেরামত ও উন্নয়ন কাজ বরিশালে পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় অটোচালক নিহত বরিশালে বিএনপি'র লিফলেট বিতরণ অপসোনিন শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ বাকেরগঞ্জের রাঙামাটি নদী থেকে হাত-পা বাঁধা যুবকের লাশ উদ্ধার বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের বরিশাল শাখার উদ্বোধন

বরিশালে বিসিক উদ্যোক্তা মেলায় স্টল বরাদ্দে অনিয়ম

রিপোর্টারের নাম: বরিশাল খবর
  • সংবাদ প্রকাশের তারিখ : Nov 9, 2025 ইং
  • ৭৮১ বার
ছবির ক্যাপশন: মেলাঙ্গনে খোলা আকাসের নীচে স্টল বরাদ্দ ।

মামুনুর রশীদ নোমানী: বাংলাদেশ ক্ষদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) বরিশালের আয়োজনে দশ দিন ব্যাপী উদ্যোক্তা মেলা শুরু হয়েছে বেলস পার্কে। স্টল বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম,দুর্নীতি ও ঘুস বানিজ্যের অভিযোগ খোদ বিসিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেই।তথ্য গোপন।উদ্যোক্তা মেলা আয়োজনের নির্দেশিকা অমান্য করে স্টল বরাদ্দে।একই ব্যাক্তিকে চারটি স্টল ,একজনকে দুটি স্টল বরাদ্দে দেয়া হয়েছে।এভাবে ৬ জনকে দেয়া হয়েছে ১৬টি স্টল। চারটি একজনকে দিয়ে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া একটি স্টল ১২ হাজার টাকা নিয়ে স্টল বরাদ্দে ভয়াবহ দুর্নীতি হয়েছে।এভাবেই প্রতিটি স্টল বরাদ্দে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বিসিক বরিশাল জেলা কার্যালয়ের প্রমোশন কর্মকর্তা মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম (আসাদ)। তিনি অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে স্টল দেয়ার জন্য জহির ও রাজিব নামে দুজনকে দ্বায়িত্ব দিয়েছেন।স্টল বরাদ্দে জালিয়াতি ও প্রতারনার মাধ্যমে এক ব্যক্তিকে একাধিক স্টল দেয়ার প্রমানও রয়েছে।খোলা আকাসের নীচে উদ্যোক্তাদের স্টল বরাদ্দ দিয়ে নজির স্থাপন করেছেন তিনি।

৬ জনকে ১৬ স্টল বরাদ্ধ:

বিসিক বরিশাল জেলা কার্যালয়ের প্রমোশন কর্মকর্তা মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম (আসাদ) এর বিরুদ্ধে প্রতারনা ও তথ্য গোপন করে ৬ জনকে ১৬ টি স্টল বরাদ্দ দিয়েছেন।এই দুর্নীতি ও অনিয়ম করেছেন দুজনকে দিয়ে। তারা হলেন,জহির ও রাজিব।
৭৯ ও ৮০ নম্বরসহ চারটি স্টল একজনকে দেয়া হয়।৬১ নম্বর স্টল থেকে ৬৪ নম্বর স্টল বরাদ্দ দেয়া হয় একজনকে।৫৯ ও ৬০ নম্বর স্টল দেয়া হয় একজনকে।১৬ ও ১৭ নম্বর স্টল দেয়া হয়েছে একজনকে।১৮ ও ১৯ নম্বর স্টলও দেয়া হয়েছে একজনকে।৩০ ও ৩১নম্বর স্টল দেয়া হয় একজনকে।
২২ ও ২৩ নং স্টলও একই ভাবে একজনকে দেয়া হয়েছে।তবে বিসিক কর্মকর্তা জেনেও ভিন্ন নামে বরাদ্দ দিয়ে দুটি ও চারটি দোকান একত্র করে স্টল সাজিয়েছেন দোকানীরা।

স্টল থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় :

দশ দিন ব্যাপী বরিশালে বিসিক উদ্যোক্তা মেলায় স্টল থেকে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। মেলায় বিসিক নিবন্ধিত উদ্যোক্তা থেকে পাচঁ হাজার ও সাধারনদের থেকে ৯০০০ হাজার টাকা কাগজে কলমে নির্ধারন করা হলেও অনেকেই নির্ধারিত ফি দিয়ে স্টল নিতে পারেনি।
সমির দাস। সমির কসমেটিক্স। স্টল নম্বর ৩৫।তিনি পুনাকের নামে বরাদ্দের স্টলটি নিয়েছেন ১২ হাজার টাকা দিয়ে।এভাবেই সাগরকে চারটি স্টল দিয়ে নিয়েছেন ৫০ হাজার টাকা।একই ভাবে কনজ্যুমার,ক্রোকারিজ,বিদেশী পণ্য,কমফোর্টার,গার্মেন্টস পণ্যের স্টল বরাদ্দ দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।ফলে অনেক উদ্যোক্তাই স্টল নিতে পারেনি।

স্টল বরাদ্ধে অনিয়ম:

যেসব স্টল মালিকরা ঘুস দিয়ে স্টল নিয়েছেন তাদের দেয়া হয়েছে ভালো জায়গা দেখে।যারা ঘুস দেয়নি তাদের স্টল দেয়া হয়েছে কোনা-কাঞ্চিতে।কয়েকটি স্টলের নামে মাত্র লটারী হলেও অধিকাংশ স্টল দেয়া হয়েছে ঘুস দাতাদের চাহিদানুযায়ী।ইচ্ছেমত স্টল বরাদ্ধ দেয়ার তথ্য প্রমান এ প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।নয় ছয়ের মাধ্যমে স্টল বরাদ্দ নিয়ে ক্ষুব্ধ উদ্যোক্তারা।

বিদেশী পণ্য বিক্রি:

বিসিক উদ্যোক্তা মেলায় স্টল মালিকদের অংশগ্রহণের জন্য বিসিকের রয়েছে নির্দেশিকা। এই নির্দেশিকার ৯ নং পৃষ্টায় অংশগ্রহনের শর্তাবলীর ৪ নং ক্রমিকে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে,বিদেশী পণ্য মেলায় প্রদর্শন,বিক্রয় করা যাবেনা।শর্ত অমান্যকারীদের কোনরুপ নোটিশ ছাড়াই মেলা চলাকালীন বরাদ্দকৃত স্টল বাতিল করা হবে।অথচ মেলার ২৬ নম্বর স্টলে চায়না পণ্য কমফোর্টার,৩০ ও ৩১ নম্বর স্টলে চায়না পণ্য,৪৭ নম্বর স্টলে ভারতীয় শাড়ি,৫৩ নম্বর স্টলে ভারতীয় কাস্মিরী শাল, ৫৬ ও ৫৭ নম্বর স্টলে চায়না পণ্য,৫৯ ও ৬০ নম্বর স্টলে চায়না পন্য,৬১ নম্বর স্টলে বার্মিজ আচার,১৪ নম্বর স্টলে চায়না পুতুল,১৬ নম্বর স্টলে চায়না পণ্য,১৮ নম্বর স্টলে ভারতীয় ও চায়না পণ্য,২২ ও ২৩ নম্বর স্টলে চায়ন্য পণ্য বিক্রি করতে দেখা গেছে।বিসিক কর্মকর্তাদের সামনে বিদেশী পণ্য বিক্রি হলেও নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা।

স্টলের তথ্যে গড়মিল :

বিসিক প্রকাশিত স্টলের তালিকায় ৬৫টি স্টলের কথা উল্লেখ করা হলেও খোলা আকাসের নীচে একটি স্টলসহ মোট ৮২টি স্টল রয়েছে মেলায়।সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে ৭০টি।স্টল বরাদ্দে বিসিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন উদ্যোক্তা ও স্টল মালিকরা। নির্ধারিত হারের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তারা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন বরিশাল জেলার উপ-মহা ব্যবস্থাপক মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, আমি ঢাকায় রয়েছি।অফিসে এসে তথ্য নিন। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন বরিশাল জেলা কার্যালয়ের প্রমোশন কর্মকর্তা মোজাহিদুল ইসলাম (আসাদ) বলেন, আমি উধ্বর্তন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া কোন বক্তব্য দিতে পারবোনা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন স্টল মালিক জানান, অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিসিকের মেলা বিষয়ক নির্দেশিকা অনুযায়ী একটি স্টল ৮/৮ ফুট হওয়ার কথা। কিন্তু তারা সেই মাপ ফলো করেনি।এছাড়া স্টলে একটি ফ্যানও দেয়নি। মেলাটি আসাদ স্যার নিজের ইচ্ছানুযায়ী করেছেন।গেটের সামনে অবৈধ দোকান পাট বসিয়েছেন।তিনি বলেন,মেলাটির জন্য কোন প্রচার -প্রচারনা করেন নি।অথচ প্রচার প্রচারনার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন,ব্যানার,ফেস্টুন,লিফলেট,পোস্টার দেয়ার কথা নির্দেশিকায় উল্লেখ রয়েছে।

নিম্নমানের পণ্যে ঠাঁসা এই মেলা:

আরেক স্টল মালিক বলেন,৫০টির বেশি স্টল বরাদ্দ দেয়ার কথা নয়। কিন্তু দেয়া হয়েছে ৮২টি স্টল। তিনি বলেন, অনেক কষ্টে দিগুন টাকা দিয়েছি একটি স্টলের জন্য। আমার মতো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার পক্ষে অনেক কষ্টের। উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, বাইরের নিম্নমানের পণ্যে ঠাঁসা এই মেলা। এরকম ভাসমান দোকানির কারণে বড় লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের।

জানা গেছে, দেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পোদ্যোক্তাদের পণ্যের প্রচার, প্রসার ও বিপণনে মেলা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করে বিসিক। অথচ বিসিকের যে নিয়ম রয়েছে, বরিশালের এই মেলায় তা মানা হয়নি।

মেলায় মানহীন পণ্য:

মেলায় স্টল ঘুরে দেখা গেছে, দোকানিরা ঢাকার চক বাজারের পণ্য,বিদেশী পণ্য,মানহীন পণ্য, প্রসাধনী,সাজসজ্জার পণ্য সবকিছুই আছে মেলায়। তবে স্থানীয় একজন উদ্যোক্তার একটি স্টল দেখা যায়। সেখানে রয়েছে নারিকেলের আইচা দিয়ে তৈরি নানা ধরনের তৈজসপত্র।

মেলা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে আগতদেরও। গৃহবধু মাহফুজা বলেন, নামে বিসিক মেলা। এখানে মানহীন পণ্যে স্টলগুলো সয়লাব। বিসিকের কোনও শর্তই মানা হচ্ছে না। নিম্নমানের স্বল্প মূল্যের পণ্যে ঠকানো হচ্ছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের। বিসিক মেলার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে করা হচ্ছে অবৈধ বাণিজ্য।উল্লেখ্য,বরিশালে বিসিক উদোক্তা মেলা শুরু হয়েছে ৬ নভেম্বর। স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫ নভেম্বর রাতে।

এ ব্যাপারে বিসিকের বিপনন বিভাগের উপ মহাব্যাবস্থাপক শেফালী খাতুন বলেন,আপনার কাছ থেকে নোট নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। মেলায় বিদেশী পণ্য বিক্রির কোন সুযোগ নেই।স্টল বরাদ্দে অনিয়ম হলে কঠিন ব্যবস্থা নিব।

 


কমেন্ট বক্স

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

সম্পাদক ও সিইও: মামুনুর রশীদ নোমানী

বরিশাল খবর অফিস: সিএন্ডবি রোড, বরিশাল

ইমেইল: nomanibsl@gmail.com

মোবাইল: 01713799669 / 01712596354

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি

© বরিশাল খবর সর্বস্ব সংরক্ষিত

Developed by : BDIX ROOT