শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ



বাংলাদেশে মৃৎশিল্প আবহমান গ্রাম-বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৭:৪৩ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

বাংলাদেশে মৃৎশিল্প আবহমান গ্রাম-বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য

প্লাবনী ইয়াসমিন ॥ মৃৎশিল্প মানবসভ্যতার অন্যতম প্রাচীন একটি শিল্পকলা। মৃৎপাত্র নির্মাণ থেকেই আদিম মানুষের শৈল্পিক চিন্তাভাবনার প্রকাশ ঘটে। বলা যায়, প্রয়োজনের তাগিদে মাটির দ্বারা মৃৎপাত্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে মৃৎশিল্পীরা সূচনা করেন এক সভ্য যুগের। মৃৎপাত্র সৃষ্টির সময়কাল জানা না গেলেও ধারণা করা হয় নব্যপ্রস্তর যুগে মানুষ মৃৎপাত্র নির্মাণ করে। বিশ্বব্যাপী প্রতœতাত্ত্বিক উৎখননের ফলে প্রাপ্ত নিদর্শন মৃৎশিল্পের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলাদেশে মৃৎশিল্প আবহমান গ্রাম-বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য। বাংলার ইতিহাসে মৃৎশিল্পকে পাল যুগের কুম্ভকাররা সমৃদ্ধ করে। প্রবাদ আছে, কাঁদা মাটি করিয়া শাসন, কুম্ভকার গড়ায় মাটির বাসন। প্রয়োজনের তাগিদে মানুষ মৃৎপাত্র তৈরি করলেও, সেগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য রঙ ও তুলির ব্যবহার করে আঁকেন ফুল, লতাপাতা। এই নান্দনিক মৃতপাত্রে এর প্রভাব পড়ে রান্নাঘরে প্রস্তুত করা খাবার পরিবেশনে; অর্থাৎ খাবারের স্বাদ যাই হোক না কেন; পরিবেশিত খাবার দেখা মাত্র চেখে দেখবার ইচ্ছা জাগবে। বাংলা সংস্কৃতিতে রয়েছে বারো মাসে তের পার্বণ। এ উপলক্ষে গৃহিনীরা তৈরি করেন পিঠা, সন্দেশ সহ নানা উপাদেয় খাবার। তারা খাদ্যদ্রব্যকে আরও দৃষ্টিনন্দন করার জন্য ব্যবহার করতে শুরু ছাঁচ। ফলে গৃহিনীরা স্বল্প সময়ে তৈরি করতে পারে নজরকাড়া আকৃতিতে সন্দেশ।
বাংলার মিষ্টির ইতিহাসে সন্দেশ অন্যতম। ছাঁচ প্রাচীন বাংলার এক লোকশিল্প এবং মৃৎশিল্পের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সন্দেশের উৎপত্তি নিয়ে নানা মত প্রচলিত থাকলেও ধারণা করা হয়। মিষ্টির দোকানে ছাঁচে নান্দনিক নকশার ক্ষীর, ছানার নান্দনিক সন্দেশের পাশাপাশি অন্দরমহলে বসে বউঝিরা তৈরি অনবদ্যা নকশার সন্দেশ ও পিঠা। প্রথমদিকে বাড়ির মেয়ে-বউরা খেজুরকাঁটা, চামচ শলা বা কাঠির সাহায্যে পিঠা ও সন্দেশে ফুটিয়ে তুলতেন দৃষ্টিনন্দন নকশা। অল্পশ্রমে, কম সময়ে সহজেই যাতে মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরি করা যায়- এই ভাবনা থেকেই মুলত ছাঁচ তৈরি হয়। প্রথমে কে বা কারা ছাঁচ তৈরি করেছিলেন তার সঠিক জানা না গেলেও ধারণা করা হয়, ষোড়শ শতকে ভারতবর্ষে পর্তুগিজদের নিত্য খাদ্যতালিকায় অন্যতম হলো জমাট বাঁধা দুধ- যা চিজ বা পনির নামেই পরিচিত। পশ্চিমবঙ্গের হুগলির বান্ডেলে প্রথম বাণিজ্যকেন্দ্র গড়ে তোলে। এরপরে চট্টগ্রাম বন্দরে তারা কুঠি তৈরি করে। এই চট্টগ্রামের কিছু বাঙালিকে তারা চিজ বানানোর কাজে নিয়োগ করে। বাংলার কারিগররা চিজ বানাতে গিয়ে ছানা বানানো শিখে ফেলে। সেই ছানার সঙ্গে চিনি মিশিয়ে নতুন একটি খাদ্যদ্রব্যে রূপান্তর করে- যা পরবর্তীতে সন্দেশ নামে পরিচিতি লাভ করে। এই মিষ্টি বা সন্দেশের নান্দনিক রূপে ফুটিয়ে তুলতে রয়েছে বাংলার মৃৎশিল্পীর মুন্সিয়ানা।

প্রথমদিকে ময়রার তৈরি সন্দেশে কোন নকশার উপস্থিতি দেখা যায় না। বর্তমানে হরেক রকম ছাঁচের তৈরি মিষ্টি শুধুমাত্র মিষ্টির দোকানেই নয়; বাড়ি তৈরি মিষ্টি সহ অন্যান্য খাবারে দেখা মেলে। ছাঁচ শুধুমাত্র মিষ্টি তৈরিতেই নয়, আমসত্ত্বের ছাঁচ, টকঝাল ক্যা-ি, মাছ-মাংসের ম- বা কিমা দিয়ে তৈরী খাবারে ব্যবহৃত করে বাড়ির বউ-ঝিরা।

অতীতে বাংলার ঘরে ঘরে মা বোনেরা বানাতেন নারকেল সন্দেশ, বিভিন্ন রকমের ডালের বা বিভিন্ন ধরনের সবজির সন্দেশ, ক্ষীরের বা ছানার সন্দেশ। গৃহস্থালী অন্যান্য কাজের অবসর সময়ে গৃহিণীরা শিল্পচর্চা করতো। সূচিকর্ম ও অন্যান্য কুটির শিল্পের পাশাপাশি কোন এক সময়ে সৃষ্টি হয়েছিল এই মাটির ছাঁচশিল্পের। এসব শিল্পীদের নাম ধাম অজ্ঞাত রইলেও তাদের শৈল্পিক চিন্তা ও ভাবনার প্রকাশ আজও আমাদের মাঝে গেঁথে আছে। ছাঁচ শিল্পীরা বিভিন্ন সামাজিক ঘটনাকে নকশায় ফুটিয়ে তুলতেন। বিভিন্ন সামাজিক রীতিনীতি, সামাজিক ঘটনা, চরিত্র খোদিত করো ছাঁচে। বিয়ের অনুষ্ঠানে গোটা মাছের সন্দেশ, গায়ে-হলুদ এবং ফুলশয্যার সন্দেশ তো এখনো ব্যাবহার হয়। এছাড়াও জামাইষষ্ঠী, ভাইফোঁটা সন্দেশ তো আছেই! এসেছে বিভিন্ন পশু-পাখির ছাঁচ। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিল বিভিন্ন সন্দেশের ছাঁচ ব্যবহার।সন্দেশের সৌন্দর্য নকশায়! ছাঁচে তোলা প্রতœ ফলক-মূর্তি গুলি তার প্রমাণ। খাদ্যবস্তুকে কেন্দ্র করে রূপ সজ্জাটিও বড়ো বিচিত্র। একদিকে নকশা-চিত্র আর অন্য দিকে খাদ্যবস্তু; এই দু’য়ের মেলবন্ধন হল নকশাকাঁটা সন্দেশ ছাঁচ। এই ছাঁচে ঢেলে তৈরি হয় সন্দেশ, হালুয়া, পিঠা,নাড়ু ,বিস্কুট। বিবাহ অনুষ্ঠান এবং লোক উৎসবগুলিকে সমবেতভাবে সাজিয়ে তুলতে; আর সম্মানিত অতিথি ও প্রিয় আপনজনদের আপ্যায়নের কথা ভেবেই এ ছাঁচগুলি তৈরি হতো। যা আজ দুর্লভ। নকশাকৃত সন্দেশের চাহিদা রয়েছে তুঙ্গে। আমি সন্দেশ ছাঁচ নিয়ে যখন কাজ শুরু তখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে সন্দেশের ছাঁচের অনুলিপি সংগ্রহ করেছি। আমার কাছে ৫৬ টি সন্দেশ ছাঁচ আছে, তার প্রতিটিই বহু বছর পুরনো, ৫০-৭৫-৮০-৯০-১৫০ বছরে পুরনো। ছাঁচ সংগ্রহ করার সময় বুঝতে পেরেছি এ দেশের গ্রামের নারীদের মধ্যে কত বড় শিল্পীমন বিরাজমা এবং তাঁরা মনের কত গভীর থেকে সন্দেশের ছাঁচ নির্মাণ করেন বা করতেন।’ বাংলার নানা জেলায় বিভিন্ন রকমের সন্দেশের ইতিহাস বাংলার ঐতিহ্য, গর্ব।

আঠারো শতকের মাঝামাঝি সময়। তখন স্বাধীনতা সংগ্রামে উত্তাল ভারতবর্ষ। সেই সংগ্রামের বীজ প্রবাহিত হলো এই ছাঁচের মধ্যেও। ময়রাগণ ‘বন্দেমাতরম’ সন্দেশ তৈরি করে বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে গোপনে বিক্রি করে; স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রচার ও উপনিবেশিক বৃটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ এই সন্দেশের উতপত্তি। এরপরে বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে কারিগরেরা বানাতে শুরু করে নিত্যনতুন ছাঁচ। এইভাবেই বিভিন্ন সন্দেশের ছাঁচ হয়ে উঠেছিল সমাজের এক ঐতিহাসিক দর্পণ। সেই প্রথা আজও বর্তমান। এই ‘বন্দেমাতরম’ ছাঁচই আমার অনুপ্রেরণা। এই ধারণা থেকেই আমিই প্রথম “জয় বাংলা” ছাঁচ তৈরি করি- যা আমাদের বাংলাদেশের গৌরবময় রাজনৈতিক ইতিহাসের প্রথম ছাঁচ।
জয় বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান। সেই ছোটবেলা থেকেই জয় বাংলা স্লোগানটি শুনে আসছি। সেদিন এর মর্মার্থ অনুধাবন করতে না পারলে জয় বাংলা শুনলে বা উচ্চারণ করলে কোন কাজ সাহস আর উদ্যম বেড়ে যায়। জয় বাংলা বাঙালির তীব্র, সংহত ও তাৎপর্যপূর্ণ স্লোগান- যার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে রাজনীতি, সংস্কৃতি, দেশ, ভাষার সৌন্দর্য ও আবেগ।

বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের বাঙালি অধ্যুষিত পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম ত্রিপুরা, বরাক উপত্যকার লোকেরাও বাঙালির ঐক্য বোঝাতে জয় বাংলা বাক্যটি ব্যবহৃত হয়। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা ছিলেন মাদারীপুরের স্কুল শিক্ষক পূর্ণচন্দ্র দাসের কারামুক্তি উপলক্ষে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২২ সালে তার ভাঙার গান কাব্যে ‘পূর্ণ-অভিনন্দন’ কবিতায় সর্বপ্রথম জয় বাঙলা শব্দ যুগল ব্যবহার করে লেখেন-
‘জয় বাঙলা”র পূর্ণচন্দ্র, জয় জয় আদি অন্তরীণ,
জয় যুগে যুগে আসা সেনাপতি, জয় প্রাণ অন্তহীন।
এছাড়াও কাজী নজরুল ইসলামের সম্পাদনায় প্রকাশিত নবপর্যায় (১৯৪০) নবযুগ পত্রিকার ৩রা বৈশাখ ১৩৪৯ বঙ্গাব্দ (১৯৪২) সংখ্যায় ‘বাঙালির বাঙলা’ নামে প্রকাশিত প্রবন্ধে লিখেছেন-
বাঙালিকে, বাঙালির ছেলেমেয়েকে ছেলেবেলা থেকে
শুধু এই এক মন্ত্র শেখাও;
এই পবিত্র বাংলাদেশ
বাঙালির-আমাদের।
দিয়া ‘প্রহারেণ ধনঞ্জয়’
তাড়াব আমরা করি না ভয়
যত পরদেশী দস্যু ডাকাত
রামাদের গামা’দের
বাঙলা বাঙালির হোক। বাঙালির জয় হোক। বাঙালির জয় হোক।
কবি নজরুলের কাব্যে উৎপত্তির পর কালক্রমে এটি স্লোগানে পরিণত হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই স্লোগান আমাদের মুক্তিসংগ্রামে প্রবলভাবে প্রেরণা যুগিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে ১৫ই সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে শিক্ষা দিবস (১৭ মার্চ) পালনের জন্য সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ- আয়োজিত সভায় তৎকালীন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আফতাব আহমেদ ও চিশতী হেলালুর রহমান জয় বাংলা স্লোগানটি সর্বপ্রথম উচ্চারণ করেন।

১৯৭০ সালের ১৯ জানুয়ারি ঢাকা শহরের পল্টনের এক জনসভায় ছাত্রনেতা সিরাজুল আলম খান তার ভাষণে সর্বপ্রথম “জয় বাংলা” স্লোগানটি উচ্চারণ করেছিলেন বলে প্রচলিত আছে।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক জনসভার ভাষণে জয় বাংলা স্লোগানটি উচ্চারণ করে ভাষণ সমাপ্ত করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা সফল অপারেশন শেষে বা যুদ্ধ জয়ের পর চিৎকার করে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে জয় উদযাপন করতো। জয়বাংলা সন্দেশ ছাঁচটি সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব ভাবনার প্রকাশ।
শিল্পের প্রতি রয়েছে আমার দুর্বার আকর্ষণ। ছোটবেলায় মাটি দিয়ে কলা, আপেল, পেয়ারা, আম… ইত্যাদি বানাতাম। যাপিত জীবন নানা চড়াই উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হলেও শিল্পীমন সুপ্ত অবস্থায় রয়ে গেছে। হঠাৎ একদিন কোন এক পত্রিকার পাতায় বন্দেমাতরম সন্দেশ নিয়ে একটি নিবন্ধ পড়ার পরে সন্দেশ ছাঁচ নিয়ে আরও জানার আগ্রহ বোধ করি। ঐতিহাসিক ছাঁচ সম্পর্কে জানার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন মৃৎশিল্পীদের প্রতিষ্ঠান ভিজিট করি। এসময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৫৬টি সন্দেশের ছাঁচের অনুলিপি সংগ্রহ করি- যার প্রতিটিই বহু বছর পুরনো, ৫০-১৫০ বছরের পুরনো। ছাঁচ সংগ্রহ করার সময় বুঝতে পেরেছি এ দেশের গ্রামের নারীদের হৃদয়ে শিল্প প্রত্থিত আছে। তারা মনের কত গভীর থেকে সন্দেশের ছাঁচ নির্মাণ করেন বা করতেন। নানা রকমের ছাঁচের দেখা মিললেও আমাদের বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন ছাঁচের দেখা পাইনি। কিছুটা কষ্ট পেলেও পরক্ষণেই ভাবি, আমি কেন তৈরি করছি না। এই থেকে আমার মৃৎকারিগর হিসেবে প্রথম মাটি হাতে নেওয়া। দীর্ঘদিন পরিশ্রম আর চেষ্টার পরে আমি হাতে খোদাই করে ‘জয় বাংলা ছাঁচ তৈরি করতে সক্ষম হই। এরপরে তা বাজারজাত করার কথা ভাবি। এ থেকেই শুরু পথচলা। এরপর নিজের উদ্যোগে একের পর এক নানা প্রকারের ছাঁচ তৈরি করে চলেছি।

মাটির সন্দেশ ছাঁচ তৈরী হয়, খোদাই করে। কিন্তু মাটির ছাঁচ বানানোর পদ্ধতিটা একটু অন্যরকম। ছাঁচ মূলত তৈরী হয় মাটি ছেনে হাতের চাপে, চিকন কাঠি, সুঁই বা সরু চিজেলের মাধ্যমে খোদাই করে ফুটিয়ে তোলা হয় গোলাকার, ত্রিভুজাকৃতি, অর্ধচন্দ্রাকার, মৎসাকৃতি ও কারুকাজের ছাঁচ। এরপর সেই ছাঁচকে রোদে শুকিয়ে, তার উপর আরেক দফা অন্য একটা মাটির প্রলেপ দিয়ে শুকিয়ে নেওয়া হয়। এই শুকনো ছাঁচ এবার আগুনে পুড়িয়ে নেওয়া হয়। আর এই পোড়ানোর জন্য সবথেকে উপযুক্ত হলো, ধানের তুষের আগুন। ছাঁচের রং ঘন কালো করার জন্য, নিভু নিভু আগুনে এগুলোকে প্রায় ১২ ঘন্টা পর্যন্ত ফেলে রাখাও হয়। ভাবলে অবাক লাগে, ছাঁচে খোদাই করে বাংলার ফুল-ফল, সামাজিক উৎসব ও লোকায়ত ধারণাগুলি অনন্য শৈল্পিক কারুকাজ ফুটিয়ে তোলার পেছনে একজন শিল্পীর কত শ্রম আর সময় লুকিয়ে থাকে!
প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে ঐতিহ্যবাহী মাটির ছাঁচের ব্যবহার কমে গেছে অনেকাংশে। এ শিল্পের জায়গা দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিকসহ অন্যান্য সামগ্রী। এগুলো স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। তবু এগুলো ব্যবহার হচ্ছে অবলীলায়।সুন্দর সুস্থ জীবন নিয়ে বাঁচতে হলে মাটিতে ফিরে আসতে হবে আমাদের।
প্রাকৃতিক নির্ভেজাল এই পণ্য কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং নিজেদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য মৃৎশিল্পের ব্যবহার বাড়ানোর বিকল্প নাই। আসুন, আমরা পরিবেশবান্ধব হই; মৃৎপাত্রের ব্যবহার করি এবং আমাদের গৌরবময় ইতিহাসের ভা-ারকে আরও সমৃদ্ধ করি।
লেখক: সমাজকর্মী, উদ্যোক্তা ও মৃৎকারিগর।




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

প্রধান উপদেষ্টা : প্রফেসর শাহ্ সাজেদা ।

উপদেষ্টা সম্পাদক : সৈয়দ এহছান আলী রনি ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।

যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল।

ইমেইল: [email protected]

মোবাইল: 01713799669/01711358963

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি।
© বরিশাল খবর সম্পাদক মামুনুর রশীদ নোমানী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

  নলছিটির মগড় ইউনিয়নবাসীর সেবা করতে চান মোঃ সাইফুজ্জামান সুমন তালুকদার   প্রাণ ফিরছে বরিশাল নগরীর ৭ খালে   বেতারের সঙ্গীত শিল্পী (পল্লীগীতি) হিসেবে মনোনীত হলেন অ্যাড: জুয়েল   বরিশালের মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাচারী প্রধান শিক্ষিকা স্ট্যান্ড-রিলিজ !   বরিশাল ল’ কলেজে দুর্নীতি, উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ   অনিয়ম দুর্নীতির আতুরঘর বরিশাল বেতার : চলছে জোড়াতালি দিয়ে   বরিশাল ডাকঘরের ক্যাশিয়ার নুরুল কবিরের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ   দেড় লাখ মামলা মাথায় বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মীর   আলু শুন্য বরিশালের পাইকারী বাজার   বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের ওপর মার্কিন ভিসানীতি শুরু   মাদারীপুরের হিমাগারে ৩০ হাজার বস্তা, বাজারে আলুর কৃত্রিম সংকট   যুদ্ধ স্যাংশন সংঘাতের পথ এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর আহবান   Mamunur Rashid Nomani charged with violating Bangladesh’s Digital Security Act   ঝালকাঠিতে রোহিঙ্গা আটক এসেছিলো ভোটার হওয়ার জন্য   সাঈদুর রহমান রিমনকে নিয়ে দিলিপ কুচক্র মহলের ষড়যন্ত্রের জবাব!   বাবুগঞ্জে ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের চার সদস্য আটক   নলছিটিতে ৫০তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ   অপরাধ ঘটাতে আগাম ‘রেকি‘ করে গেছেন তারা!   ঝালকাঠি কারাগার: কু-প্রস্তাবের দাম দশ লাখ টাকা! জেলার বহাল তবিয়তে   রাজাপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দুর্নীতির আখড়া