শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ



জমি কেনার ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে
প্রকাশ: ১৮ জুন, ২০২৩, ১:৫৫ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

জমি কেনার ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে

খাদেমুল ইসলাম |

স্থাবর সম্পত্তি যেমন জমিজমা কিনে প্রায়ই প্রতারিত হয়ে থাকেন। মূলতঃ সম্পত্তি কেনার আগে যথাযথভাবে মালিকানা যাচাই না করার কারণেই মুখোমুখি হতে হয় এসব জটিলতার।
যার কারণে ক্ষেত্র বিশেষে দীর্ঘদিন আইনি লড়াইয়ের মারপ্যাচে পড়তে হয়। এমনকি অনেকে শেষ পর্যন্ত কষ্ট করে সঞ্চিত টাকায় রাখা জমিটাই শেষ পর্যন্ত আর বুঝে পান না। তাই কোনো সম্পত্তি কেনার সময় তাড়াহুড়ো না করে এ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ একজন আইনজীবীর মাধ্যমে কাগজপত্র ও মালিকানা যাচাই করে নিতে পারেন।

যে কোনো ব্যক্তি ক্রয়, উত্তরাধিকার, দান-হেবা বা আমমোক্তার নিযুক্ত হয়ে মালিকানা লাভ করতে পারেন। অবস্থাভেদে জমি কেনার আগে কিছু বিষয়ে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

প্রথমত, যিনি বিক্রি করছেন তিনি ওই সম্পত্তির বৈধ মালিক কিনা এবং হস্তান্তরের ক্ষেত্রে তার কোনো আইনগত বাধা আছে কিনা তা দেখতে হবে। এক্ষেত্রে দাতা নাবালক বা অপ্রকৃতস্থ কিনা, নাবালক হলে হস্তান্তরের ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী আদালতের মাধ্যমে বৈধ অভিভাবকের মাধ্যমে সম্পত্তিটি কিনতে হবে।

দ্বিতীয়ত, সম্পত্তির মালিকানা সংক্রান্ত দলিল, রেকর্ড খতিয়ান ভালো করে যাচাই করতে হবে। ক্রেতা ক্রয়সূত্রে মালিক হলে রেকর্ডিয় মালিকের কাছ থেকে হস্তান্তরের পর করা সব ভায়া দলিল সংগ্রহ করতে হবে। সিএস, এসএ, বিএস, আরএস ও সিটি জরিপের (অঞ্চলভেদে যা প্রযোজ্য) খতিয়ানগুলো সংগ্রহ করতে হবে। সাবেক দাগ থেকে হাল দাগে রূপান্তরিত দাগ ও খতিয়ান নম্বর ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। জমির শ্রেণি খতিয়ান, দলিল ও সরেজমিনে এক কিনা তাও দেখতে হবে। দাতা কর্তৃক সরবরাহকৃত দলিল বা খতিয়ান শুধু দেখলেই হবে না ও বরং ওই দলিল বা খতিয়ানের সঙ্গে ভূমি তহশিল অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের ভলিয়মের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে হবে। কারণ অনেক ক্ষেত্রে দলিল বা খতিয়ান জাল-জালিয়াতি মাধ্যমে তৈরি করা হয়।

তৃতীয়ত, যিনি সম্পত্তিটি বিক্রি করছেন সবশেষ রেকর্ডে তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কিনা এবং তার নামে নামজারি খতিয়ান হয়েছে কিনা, তা যাচাই করে নিতে হবে। নামজারি খতিয়ানের সঙ্গে মৌজার নকশা অনুযায়ী সরেজমিনে দাগ নম্বর, খতিয়ান নম্বর, জমির পরিমাণ ও দখল যথার্থ আছে কিনা তা মিলিয়ে নিতে হবে।

চতুর্থত, সহ-ওয়ারিশদের সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে কোনো বিরোধ আছে কিনা তা দেখতে হবে। সেক্ষেত্রে কোনো অংশীদারিত্ব বণ্টননামা বা বণ্টননামা মামলা হয়েছে কিনা, তা যাচাই করতে হবে। অংশীদারদের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ থাকলে তিনি ফারায়েজ অনুযায়ী প্রাপ্য অংশের বেশি বিক্রয় করছেন কিনা তা যাচাই করতে হবে। সহ-শরিকদের মধ্যে কোনো এওয়াজ-বদল দলিল হয়েছে কিনা তাও দেখতে হবে। যার সূত্রে জমির মালিকানা দাবি করছেন সত্যিকারার্থে তিনি তার ওয়ারিশ কিনা দেখতে হবে।

পঞ্চমত, উক্ত জমি নিয়ে আদালতে কেনো মামলা চলমান আছে কিনা সেটাও দেখে নেয়া জরুরি। কারণ অনেক সময় দীর্ঘ মেয়াদে আইনগত জটিলতায় ক্রেতা হয়রানি হতে পারেন। কেনার আগে সহ-শরিকদের কাছ থেকে মালিকানা বিষয় নিশ্চিত হলে এবং আইনি নোটিশ দিলে ভবিষ্যতে অগ্রক্রয় মামলার জটিলতা এড়ানো সম্ভব।

ষষ্ঠত, উক্ত জমিতে সরকারের কোনো দাবি আছে কিনা, তা দেখতে হবে। অর্থাৎ জমিটি খাস-খতিয়ানের কিনা বা ইতোমধ্যে অধিগ্রহণকৃত বা অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান কিনা বা অর্পিত সম্পত্তির তফসিলভুক্ত কিনা বা ওয়াকফ স্টেটভুক্ত কিনা তা যাচাই করে নেওয়া ভালো।

সপ্তমত, জমি লিজ বা বন্ধক রেখে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে কিনা, তা যাচাই করে নেওয়া ভালো। এজন্য সংগ্রহ করতে হবে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো বা সিআইবি রিপোর্ট।

অষ্টমত, আমমোক্তার নিযুক্ত হইয়া বা হেবা ও দান সূত্রে মালিকানা লাভ করলে তার শর্তগুলো ভালোভাবে দেখে নিতে হবে। হস্তান্তর করার মতো তার আইনগত কর্তৃত্ব আছে কিনা সে বিষয়টি যাচাই করে নেওয়া ভালো। সেক্ষেত্রে মূল মালিকের সঙ্গে আলাপ করে নিতে পারেন।

নবমত, যিনি বিক্রি করছেন তিনি ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা যথাযথভাবে পরিশোধ করেছেন কিনা, তা যাচাই করে নিতে হবে। খাজনা পরিশোধ বাকি থাকলে হাল সন পর্যন্ত তা পরিশোধ করিয়ে নিতে হবে।

দশমত, জমিতে প্রবেশের রাস্তা আছে কিনা এবং ভবিষ্যতে রাস্তা নিয়ে কোনো জটিলতা তৈরি হতে পারে কিনা তাও খেয়াল রাখতে হবে।

এসব বিষয় খেয়াল রেখে জমি কিনলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশেই কমে আসবে। অনেকে কমদামে কেনার জন্য বা আগে কেনার জন্য ভালোভাবে মালিকানা যাচাই না করেই জমি কেনেন। এমনটি করা কোনোভাবেই উচিত নয়, যথাযথভাবে যাচাই করেই ক্রয় করুন আপনার স্বপ্নের জমিটি, মুক্ত থাকুন সব ঝামেলা থেকে।

লেখক: অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

প্রধান উপদেষ্টা : প্রফেসর শাহ্ সাজেদা ।

উপদেষ্টা সম্পাদক : সৈয়দ এহছান আলী রনি ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।

যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল।

ইমেইল: [email protected]

মোবাইল: 01713799669/01711358963

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি।
© বরিশাল খবর সম্পাদক মামুনুর রশীদ নোমানী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

  নলছিটির মগড় ইউনিয়নবাসীর সেবা করতে চান মোঃ সাইফুজ্জামান সুমন তালুকদার   প্রাণ ফিরছে বরিশাল নগরীর ৭ খালে   বেতারের সঙ্গীত শিল্পী (পল্লীগীতি) হিসেবে মনোনীত হলেন অ্যাড: জুয়েল   বরিশালের মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাচারী প্রধান শিক্ষিকা স্ট্যান্ড-রিলিজ !   বরিশাল ল’ কলেজে দুর্নীতি, উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ   অনিয়ম দুর্নীতির আতুরঘর বরিশাল বেতার : চলছে জোড়াতালি দিয়ে   বরিশাল ডাকঘরের ক্যাশিয়ার নুরুল কবিরের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ   দেড় লাখ মামলা মাথায় বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মীর   আলু শুন্য বরিশালের পাইকারী বাজার   বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের ওপর মার্কিন ভিসানীতি শুরু   মাদারীপুরের হিমাগারে ৩০ হাজার বস্তা, বাজারে আলুর কৃত্রিম সংকট   যুদ্ধ স্যাংশন সংঘাতের পথ এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর আহবান   Mamunur Rashid Nomani charged with violating Bangladesh’s Digital Security Act   ঝালকাঠিতে রোহিঙ্গা আটক এসেছিলো ভোটার হওয়ার জন্য   সাঈদুর রহমান রিমনকে নিয়ে দিলিপ কুচক্র মহলের ষড়যন্ত্রের জবাব!   বাবুগঞ্জে ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের চার সদস্য আটক   নলছিটিতে ৫০তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ   অপরাধ ঘটাতে আগাম ‘রেকি‘ করে গেছেন তারা!   ঝালকাঠি কারাগার: কু-প্রস্তাবের দাম দশ লাখ টাকা! জেলার বহাল তবিয়তে   রাজাপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দুর্নীতির আখড়া