বরিশালের ধান ক্ষেতের লাঙ্গল ছেড়ে এসে কানাডার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর, ২০২২, ৮:২৫ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
বই ও লেখক পরিচিতি
“বরিশালের ধান ক্ষেতের লাঙ্গল ছেড়ে এসে কানাডার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক”(আত্মজীবনী)
লেখক:প্রফেসর ড.আবদুর রাব্ব
প্রকাশক: মাজেদুল হাসান
জয়তী প্রকাশন
৬৮ কনকর্ড এম্পোরিয়াম শপিং কমপ্লেক্স
২৫৩-২৫৪ কুদরাত-ই- খুদা রোড
কাঁটাবন ঢাকা ১২০৫
প্রচ্ছদ: ইন্টারনেট অবলম্বনে
প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০২২
লেখক ড.আবদুর রাব্ব আমার মামা। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন বরিশালের কাশিপুর ইউনিয়নের চহঠা গ্রামে এক গরীব কৃষক পরিবারে। বাল্যকালে চাষাবাদ ও খেত খামারের অন্যান্য কাজকর্ম করে অবসর সময়ে তিনি পড়াশোনা করেছেন। অত্যন্ত মেধাবী এবং অধ্যবসায়ী মানুষটি ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন ও মনোবিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন এবং ওই বছরই সংশ্লিষ্ট বিভাগে একজন সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশন এর স্কলারশিপ নিয়ে কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য পড়াশোনা করতে আসেন। ১৯৭০ সালে ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে দ্বিতীয় মাস্টার্স এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি প্রায় ৪০ বছর ইসলামিক দর্শন এবং সুফিবাদ বিষয়ে অধ্যাপনা করেন।
২০০১ সালে অধ্যাপকের দায়িত্ব থেকে অবসর গ্রহণের পর নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রেখেছেন এই অশীতিপর (৮৭বছর) সিনিয়র সিটিজেন। অধিকাংশ সময় তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন অতিবাহিত করছেন। বিভিন্ন বিষয়ের উপর লেখালেখি এবং বক্তৃতা প্রদান করেন। বাংলাদেশ এবং তাঁর বসবাসের শহর মন্ট্রিয়ালের মানুষের জন্য সমাজ সেবামূলক কাজ করেন। নিজের ছোট ভাড়া বাড়ির ব্যবসাটা পরিচালনা করেন। তাঁর সন্তান ও নাতি-নাতনিদের সাথে সময় কাটান এবং শখের বশে বরশি ফেলে মাছ ধরেন। বরিশালে তাঁর চহঠা গ্রামে নিজস্ব অর্থায়নে অসহায় মানুষদের জন্য সেবামূলক কাজ করছেন। কানাডা সরকার এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো স্বয়ং তাঁকে সে দেশের একজন সম্মানিত শিক্ষাবিদ হিসেবে সমাদর করে থাকেন। তাঁরই অনুরোধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বাংলাদেশি অভিবাসীদের সস্ত্রীক কানাডায় যাওয়ার বিষয়টি অনুমোদন করেছিলেন।
ড. আবদুর রাব্ব ইংরেজি ভাষায় তিনখানা বই লিখেছেন:
১. PERSIAN MYSTICISM:ABU YAZID AL BISTAMI
২.ISLAMIC MISTICISM:JUNAYED AL BAGHDADDI
৩.A VOICE ACROSS THE OCEAN
৪.TELS FROM THE EAST AND THE WEST(চলমান)
৫. বরিশালের ধানক্ষেতের লাঙ্গল ছেড়ে এসে কানাডার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক
(আত্মজীবনী)
ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত নিয়মনিষ্ঠ লেখক প্রতিটা মুহূর্তকে মূল্যায়ন করেন। প্রতি সন্ধ্যায় ল্যাপটপ নিয়ে বসেন। নিজের দেশ এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে খোঁজখবর রাখেন।
আত্মজীবনীতে ঝরঝরে গদ্যে অত্যন্ত সাবলীলভাবে তাঁর শৈশব থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত গল্প বলেছেন। তাঁর সরস বর্ণনাভঙ্গি,জীবনকে দেখার পর্যবেক্ষণশীল দৃষ্টি গভীর তাৎপর্যময়। বইটি পড়ার সময় নিঃসন্দেহে তাঁকে একজন সমাজতাত্ত্বিক লেখক বলে মনে হয়। সুদীর্ঘকাল ধরে সুদূর প্রবাসে অবস্থান করলেও মাতৃভাষায় তাঁর লেখার বুনন আশ্চর্য রকম মুগ্ধতার আবেশে পাঠকের মন ভরিয়ে দেবে। আত্মজীবনী হলেও বইটিতে স্বাধীনতা পূর্ব অবিভক্ত বাংলার, পূর্ব পাকিস্তানের পল্লী অঞ্চলের আর্থ সামাজিক চিত্র এবং নিভৃত পল্লী থেকে উঠে আসা তৎকালীন যুবকের রাজধানীতে কঠিন জীবনযুদ্ধের পরিচয় ফুটে উঠেছে। গ্রন্থটি একই সাথে লেখকের আত্মজীবনী এবং বিগতকালের পরিচয়ের স্মারক। অতীত এবং বর্তমানের আকর্ষণীয় কিছু ছবি সংযোজন করেছেন তিনি। অফসেট কাগজে, ঝকঝকে ছাপার বইটি খুললেই ভালো লাগায় মন ভরে ওঠে! পাড়াগাঁ থেকে উঠে আসা দরিদ্র বালকের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজেকে উন্নীত করার কাহিনিটি পাঠক মাত্রকেই পাঠান্তে বিস্ময়ে অভিভূত করবে।
লেখকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।আল্লাহর মেহেরবানীতে তাঁর বইটি পাঠকের কাছে সমাদৃত হোক এবং তিনি সপরিবারে সুস্থভাবে জীবন অতিবাহিত করুন। আমিন।