বরগুনায় নিখোঁজের দু’দিন পরে মাটির নিচ থেকে মা ও মেয়ে শিশুর লাশ উদ্ধার
প্রকাশ: ৩ জুলাই, ২০২১, ৩:২৪ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
রাব্বি আহমেদ,বরগুনা প্রতিনিধিঃ
বরগুনার পাথরঘাটার পূর্ব হাতেমপুর এলাকার একটি বাগানের একটি গর্ত থেকে মা-মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী পলাতক রয়েছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শাশুড়ি, দেবরসহ ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (৩ জুলাই) সকালে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন—পাথরঘাটা উপজেলার হাতিরমপুর এলাকার রিপন বাদশার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৮) এবং সুমাইয়ার ৯ মাসের মেয়ে সামিয়া আক্তার জুঁই।
বরগুনা পাথরঘাটার পূর্ব হাতেমপুর গ্রামের ছত্তার প্যাদা বলেন, ‘শনিবার সকালে বাড়ির পিছনে যাবার সময় মাটির এক অংশ খোঁড়া দেখে সন্দেহ হয়। এরপর আমি স্থানীয়দের নিয়ে মাটি সরিয়ে রক্ত দেখতে পেয়ে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশকে জানাই। এরপরে পুলিশ এসে মাটি খুঁড়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে।’
নিহত সুমাইয়ার চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সুমাইয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো একই এলাকার খলিলের ছেলে শাহিনের। শাহিন মাদকাসক্ত হওয়ায় তারা রাজি হয়নি। পরে সুমাইয়া ও শাহিন শারীরিক মেলামেশায় জড়িয়ে পরলে গর্ভবতী হয় সুমাইয়া। এরপর সুমাইয়ার বাবা শাহিনকে বিয়ের জন্য বললে শাহিন বিয়েতে রাজি হয়নি। এই ঘটনায় সুমাইয়ার বাবা একটি মামলা দায়ের করেন। শাহিন সেই মামলায় ৬ মাস কারাগারে ছিলো। এরই মধ্যে সুমাইয়া মেয়ে শিশুর জন্ম দেয়। এরপর শাহিন বিয়েতে রাজি হলে শাহিনের জামিন করিয়ে মামলা তুলে নেন সুমাইয়ার বাবা। জেল থেকে বের হয়ে ওই শিশুসহ সুমাইয়াকে বিয়ে করে শাহিন। এরপর থেকেই সুমাইয়াকে মারধর করতে থাকে তার স্বামী শাহিন ও তার মা সাহিনুর (৪২)। গত দু’দিন ধরে নিখোঁজ ছিলো সুমাইয়া। বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও কোনো সন্ধান পায়নি তার পরিবার। আজ সকালে ছত্তার প্যাদা পুলিশকে ফোন করলে তারা মা মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে।’
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল বাশার জানান, ৯ মাসের শিশু সামিরা আক্তার জুঁই ও তার মা সুমাইয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সুমাইয়ার শাশুড়ি সাহিনুর (৪২), মামাতো ভাই ইমাম (২২) শাহিনের দাদী জুবেদাকে (৯৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তবে সুমাইয়ার স্বামীকে পাওয়া যায়নি। সে পলাতক আছে।
মরদেহের সুরতহাল করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। এ ঘটনায় যারা যারা জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।