মঙ্গলবার ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   মঙ্গলবার ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ



ডাক্তার আনোয়ার আমাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল
প্রকাশ: ৯ জুন, ২০২০, ২:৩৯ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

ডাক্তার আনোয়ার আমাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল

মামুনুর রশীদ নোমানী : ডাক্তার আনোয়ার বরিশালসহ দক্ষিনাঞ্চলবাসীর একটি প্রিয় নাম। এমন কেউ নেই যে তাকে চিনেন না। চিকিৎসা জগতে তার সুনাম অনেক অনেক। আনোয়ার ডাক্তার নামে সকলের কাছে পরিচিত। নিজের সকল সম্পদ ও ব্যাংক ঋন নিয়ে গড়ে ছিলেন রাহাত আনোয়ার নামে একটি হাসপাতাল। দক্ষিনাঞ্চলে অনেক ধনকুব রয়েছেন কিন্তু তারা চিকিৎসাসেবায় ডাক্তার আনোয়ারের মত এগিয়ে আসেন নি। আমি বরিশাল বিভাগে দুজন মানুষকে অতিমাত্রায় ভালোবাসি। একজন হলো গুঠিয়ায় একটি ঐতিহাসিক মসজিদ “জামে বায়তুল আমান “নির্মানকারী শারফুদ্দিন আহমেদ সান্টু। দ্বিতীয়জন হলেন ডাক্তার আনোয়ার। তিনি বরিশালে এমন একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল স্থাপন করলেন যা কেউ করেননি। রাহাত আনোয়ার হাসপাতাল করোনাবালে দক্ষিনাঞ্চলবাসীর আশির্বাদে পরিনত হয়। যখন সকল ডাক্তার আত্মগোপনে গেলেন তখন ডাক্তার আনোয়ার নিজের জিবন বিপন্ন করে চিকিৎসা সেবা দিলেন রোগীদের।

কারো টাকা থাকা পাপের কিছু নয়। সকলেই সঞ্চয় করে নিজের ভালোর জন্য। পার্থক্য মন মানষিকতার। ডাক্তার আনোয়ারে উচ্চ মানবিকতা ও মানবতার কাছে কেউ যেতে পারেন নি। তিনি নিজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা গ্রহন করেছেন। তার পরিবারের লোকজন উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় নিয়ে গেলেন। েক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতাল। দৌড়যাপ করে শেষে বাড্ডার এ এম জেড হাসপাতালে ভর্তি হলেন। তখন তার জিবন সংকটাপন্ন। ডাক্তার বলছিলেন আল্লাহ আল্লাহ করেন এখন তার ৬৫ প্রয়োজন ৮০ থেকে ৮৫। মিরাকেল কিছু না হলে তিনি আর ফিরে আসবেন না আমাদের মাঝে। ডাক্তার আনোয়ার বরিশাল থেকে যেতে চাননি। শেষ মুহুর্তেও বলেছিলেন আমাকে ঢাকা নিওনা। মোট কথা তার মৃত্যুর স্থান ঢাকার এম জেড হাসপাতালে তাই তাকে সেখানেই নিয়ে যাওয়া হয়। আল্লাহ সব কিছুর মালিক। আজরাইল বসে ছিলেন সেই এ এম জেড হাসপাতালে। যাওয়ার পরে নির্ধারিত সময়ে জান কবজ করলেন। চলে গেরেন ডাক্তার আনোয়ার আমাদের ছেড়ে। নিয়ে গেলেন লাখ লাখ মানুষের দোয়া। কেউ নেই যে বলবে ডাক্তার আনোয়ারের ব্যবহারে কষ্ট পেয়েছি। হাসি খুশি এ মানুষটির জন্য কাঁদে সর্বস্তরের লোকজন। ডাক্তার আনোয়ার একদিনে হননি। তিনি বাংলাবাজার করিম মোল্লার পলি ক্লিনিক থেকে শুরু করে রাহাত আনোয়ার হাসপাতালে মৃত্যুর দিন সকাল পর্যন্ত লাখ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা দিয়ে গেছেন।
তার ব্যবহার ছিল মধুময় হাসিতে ভরপুর। আমি তাকে সেলুট করি কারন চিকিৎসা সেবায় এমন একটি উদযোগ নিয়েছেন যা অন্য সকলের কাছে অসম্ভব ছিলো। ডাক্তার আনোয়ারের কোন অতিরিক্ত দেশী-বিদেশী ডিগ্রী ছিলোনা। কার বড় ডিগ্রী ছিলো রোগীদের ভালোবাসা। সবাই তার কাছে যেত। বিপদে আপদে তিনি ছিলেন সকলের বন্ধু হোক ধনী বা গরিব। তিনি তিন শতাধিক পরিবারের অভিভাবক ছিলেন। রাহাত আনোয়ার হাসপাতাল,রাহাত আনোয়ার ফার্ম্মেসী,দৈনিক আজকালসহ অসংখ্য সামাজিক ও মানবিক প্রতিষ্ঠানের তিনি প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ছিলেন।

তার কারনে অসংখ্য মানুষের মুখে হাসি ফোটতে সকাল সন্ধ্যা। আজ অনেক মুখ মলিন। তিনি ছিলেন হাজারো মানুষের বটবৃক্ষ।
তার মৃত্যুর সাথে সাথে মৃত্যু সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায় তার জনপ্রিয়তার কারনে।
ঝালকাঠী জেলা আওয়ামিলীগের সহ সভাপতি ছিলেন। সামাজিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত এ বক্তির সুনাম দেশ থেকে ছড়িয়ে পড়ে বিদেশেও। রাজনীতিতেও ছিলেন সক্রিয়। কর্মপাগল এ মানুষটিকে হাজারো বার দেখেছি পলি ক্লিনিক,রাহাত আনোয়ার হাসপাতাল ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। হাসি দিয়ে বলতো নোমানী কেমন আছো। কেমন চলছে দিনকাল। কোথাও কোন ডাক্তার না পেলে তার সরানাপন্ন হতাম। মুহুর্তেই সমাধান করে দিতেন। অসংখ্য,রোগী নিয়ে গিয়েছি কোন দিন ফি গ্রহন করেন নি। হাসিমুখে ফি ফেরৎ দিয়ে বলতো থাক। দোয়া করিও।

রাতে ঘুম আসেনি। ৮ জুন এয়ারএ্যাম্বুলেন্সে নেয়ার পর থেকে খোজ খবর নিচ্ছিলাম। রাত বারটায় যোগাযোগ করি এ এম জেড হাসপাতালে। সেখান থেকে বলা হলো আল্লাহ আল্লাহ করেন তার অবস্থা ভালো নয়। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম ডাঃআনোয়ার এ এম জেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার অবস্থা অপরিবর্তিত। ঘুম আসেনা রাত তিনটার দিকে খবর পেলাম তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তিনি আর আমাদের কাছে ফিরবেন না। খবর শোনার সাথে সাথে বুক ব্যথা বেগে যায়। মানতে পারছিনা তিনি আমাদের মাঝে নেই। রাতে বের হয়ে পড়ি। বেলায়েত ভাইর বাসায় ছুটে চলে যাই মুজিব ফয়সাল সাথে। আমরা একত্র হয়ে রাহাত আনোয়ার হাসপাতালে যাওয়ার পরে দেখি কারো মুখে কথা নেই। সব নিরব। নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। হাসপাতালের পিছনে তার বাসায় কান্নার রোল। কান্না দেখে আমরাও কান্নায় ভেঙ্গে পড়ি। এমন কান্না যে কান্নার কারনে আকাস বাতাস ভারি হয়ে আসছে। কে দিবে শান্তনা। শান্তনা দেয়ার কেউ নেই। ততক্ষনে ডাক্তার আনোয়ারের মরদেহ পোস্তঘোলা ব্রিজ অতিক্রম করেছে। ভোর চারটা। সব কিছু ঠিকঠাক হলো কোথায় কোথায় নামাজে জানাযা ও কোথায় দাফন করা হবে।
মৃত্যুর স্বাধ সকলকেই গ্রহন করতে হবে। কারো আজ বা কারো কাল। কেউ আগে যাবে কেউ পরে যাবে।
ডাক্তার আনোয়ার এমন কিছু করেছেন যার সওয়াব আজিবন পেতে থাকবেন সদকায়ে জারিয়াহ হিসেবে। তার কর্মগুনে বেঁচে থাকবেন লাখ লাখ মানুষের হৃদয়ে। অমর হয়ে থাকবেন।
শোকশন্তপ্ত পরিবারকে হে প্রভু তুমি শোক সইবার ক্ষমতা দেও। তুমি আল্লাহ। তুমি রহমান ও রহিম।




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

প্রধান উপদেষ্টা : প্রফেসর শাহ্ সাজেদা ।

উপদেষ্টা সম্পাদক : সৈয়দ এহছান আলী রনি ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।

যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল।

ইমেইল: [email protected]

মোবাইল: 01713799669/01711358963

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি।
© বরিশাল খবর সম্পাদক মামুনুর রশীদ নোমানী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

  নলছিটির মগড় ইউনিয়নবাসীর সেবা করতে চান মোঃ সাইফুজ্জামান সুমন তালুকদার   প্রাণ ফিরছে বরিশাল নগরীর ৭ খালে   বেতারের সঙ্গীত শিল্পী (পল্লীগীতি) হিসেবে মনোনীত হলেন অ্যাড: জুয়েল   বরিশালের মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাচারী প্রধান শিক্ষিকা স্ট্যান্ড-রিলিজ !   বরিশাল ল’ কলেজে দুর্নীতি, উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ   অনিয়ম দুর্নীতির আতুরঘর বরিশাল বেতার : চলছে জোড়াতালি দিয়ে   বরিশাল ডাকঘরের ক্যাশিয়ার নুরুল কবিরের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ   দেড় লাখ মামলা মাথায় বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মীর   আলু শুন্য বরিশালের পাইকারী বাজার   বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের ওপর মার্কিন ভিসানীতি শুরু   মাদারীপুরের হিমাগারে ৩০ হাজার বস্তা, বাজারে আলুর কৃত্রিম সংকট   যুদ্ধ স্যাংশন সংঘাতের পথ এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর আহবান   Mamunur Rashid Nomani charged with violating Bangladesh’s Digital Security Act   ঝালকাঠিতে রোহিঙ্গা আটক এসেছিলো ভোটার হওয়ার জন্য   সাঈদুর রহমান রিমনকে নিয়ে দিলিপ কুচক্র মহলের ষড়যন্ত্রের জবাব!   বাবুগঞ্জে ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের চার সদস্য আটক   নলছিটিতে ৫০তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ   অপরাধ ঘটাতে আগাম ‘রেকি‘ করে গেছেন তারা!   ঝালকাঠি কারাগার: কু-প্রস্তাবের দাম দশ লাখ টাকা! জেলার বহাল তবিয়তে   রাজাপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দুর্নীতির আখড়া