মামুনুর রশীদ নোমানী :
ঘনবসতিপূর্ণ ও বসবাসের অনুপযোগী ইট পাথরের গাঁথুনীতে তৈরী শহরের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে চলতে হাঁপিয়ে উঠেছি। একটু সময় করে দু এক দিনের জন্য কোথাও ঘুরতে মন চায়। নিজের চোখকে উপহার দিতে ইচ্ছে করে খুব সুন্দর নিরিবিলি কোনো এক জায়গা। যেখানে দেখতে পাবো প্রকৃতির এক অপার সৌন্দর্য, নিঃশ্বাস নিতে পারবো প্রাণ খুলে।
প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে নিজেকে বিলীন করে দিতে চাই, পছন্দ করি দ্বীপ, সবুজ শস্য, বিশাল নদীর পানির ঢেউ, পাহাড়, তাই ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করে বাংলার বুক চিড়ে মনোরম প্রকৃতির এক জমিন ভোলার চরফ্যাশনের চর কুকরি মুকরি।
দৃষ্টির সীমানার পুরোটা ফোকাস জুড়ে শুধু সবুজ আর সবুজ। দৃষ্টিকে সম্মোহন করে হাতছানি দিতে থাকে টুকরো টুকরো নিবিড় বনভূমি। শিল্পী তপুর গানের মত বলতে হয়, “একপাশে বঙ্গোপসাগর তোমার, অন্যপাশে বনভূমি”। উত্তাল ঢেউ, বৈরী বাতাস আর জলোচ্ছ্বাসের গর্জন যখন কর্ণকুহর হয়ে মস্তিষ্কে পৌঁছে উদ্বেল করবে ভাবনার জগতকে, ঠিক তখনই অন্য পাশের সবুজ দ্বীপ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি দিবে নিবিড় ভালোলাগার এক চিরসবুজ প্রশান্তি। আর এই অন্য পাশের সবুজ দ্বীপ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি হল চর কুকরী মুকরী।
চোখ ধাঁধানো সবুজের সমারোহ আর শান্ত নিশ্চুপ প্রকৃতির বুকে নিজেকে বিলীন করে দিতে ঘুরতে যাবো বাংলাদেশের অন্যতম সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও বৃহৎ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এই দ্বীপে ৷
চর কুকরি মুকরির বনে যেসব প্রাণী দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে চিত্রা হরিণ, বানর, উদবিড়াল, শিয়াল, বন্য মহিষ-গরু, বন-বিড়াল, বন মোরগ, প্রভৃতি। আর পাখিও সরিসৃপ হিসেবে এই বনের অধিবাসীদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বক, বন মোরগ, শঙ্খচিল, মথুরা, কাঠময়ূর, কোয়েল, গুইসাঁপ, বেজি, কচ্ছপ, কুকুরি বনের ও নানা ধরনের সাপ।
ভোলা জেলার দ্বীপ কন্যা অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি পর্যটন স্পট কুকরী, নতুন সংযোজন ঝুলন্ত ব্রিজ।
চর কুকরী মুকরী শীতকালের চিত্র ভিন্ন ধরনের। সূদুর সাইরেরিয়া থেকে ছুটে আসা অতিথি পাখিদের আগমনে চরাঞ্চলগুলো যেন নতুন রূপ ধারন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে শীত মৌসুমে বাংলাদেশে প্রায় ৬৫০ প্রজাতির অতিথি পাখি আসে।
কতিথ আছে যে, সংশ্লিষ্ট দ্বীপের জন্ম হয় আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর পূর্বে, তৎকালীন ব্রিটিশ রাজ পুত্রের জন মানবহীন এবং গভীর বনের মধ্যে কুকুর ও মেকুর (বিড়াল) এর সাথে ১৮৮২ খ্রিঃ সাক্ষাতের পর উহার নাম করন করা হয় কুকরী মুকরী।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
যোগাযোগ ব্যবস্থা চরফ্যাশন থেকে কুকরী মুকরী ৩৫ কি: মি: প্রথমত বাস টলার যান বাহন কুকরী মুকরী থেকে উপজেলা সদরের দূরত্ব ৪৬ কিলোমিটার।
ঢাকা থেকে প্রথেমে চরফ্যাশন বেতুয়া অথবা ঘোষের হাট লঞ্চ ঘাট নামতে হবে তারপর গাড়ি অথবা মটর সাইকেল চরফ্যাশন আসতে হবে। আবার সেখান থেকে কুকরী মুকরী আসতে হলে বাস অথবা মটর সাইকেলে দক্ষিন আইচা আসতে হবে তারপর সেখান থেকে রিক্সায় চর কচ্চপিয়া এসে কুকরী মুকরী আসার জন্য সেখানে স্পীড বোট আথবা খেয়া দিয়ে কুকরী মুকরী আসতে হবে।
০১/ ঢাকা থেকে চরফ্যাশন আসার ভাড়া =৪০০ টাকা
০২/ চরফ্যাশন থেকে কচ্চপিয়া আসার ভাড়া= ৫০টাকা
০৩/ কচ্চপিয়া থেকে কুকরী মুকরী আসার ভাড়া ইস্প্রিট বোটে আসলে ভারা জন পতি =১৫০ টাকা আর খেয়া ভাড়া জন পতি =৪০ টাকা