সড়ক বাতি ও পানির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, অন্ধকারে বরিশাল নগরী: পানি নিয়ে ভোগান্তি
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১:৪৩ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
বরিশাল খবর ডেস্ক :
বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) কাছে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় করপোরেশন এলাকার সড়ক বাতি ও পানির লাইনের বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন করেছে বরিশালের ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) ।
রোববার বিকেল ৪টা থেকে এই অভিযান শুরু করে নগরীর সকল সড়কের বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ওজোপাডিকো বরিশাল বিভাগ।
এদিকে সিটি করপোরেশন বলছে, বকেয়া বিলের বিপরীতে মোটা অংকের একটি অংক গ্রহণের তিনদিনের ব্যবধানে সড়ক বাতি এবং পানি সরবারহের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো নোটিশও দেয়া হয়নি।
বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ভুতুড়ে গলিতে পরিণত হয়েছে। বাসিন্দারা রাত্রীকালীন চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
ওজোপাডিকো লিমিটেড বরিশালের পরিচালনা ও সংরক্ষণ সার্কেলের সহকারী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, কমপক্ষে ১০ বছর ধরে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছে না সিটি করপোরেশন। এতে করে বৃহৎ একটি অঙ্ক দাঁড়িয়েছে। সেই টাকা উত্তোলন করতে না পেরে আমরাও রয়েছি মন্ত্রণালয়ের চাপের মুখে। অবশেষে সিটি করপোরেশনের সড়ক বাতির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান শুরু হয়েছে। রোববার থেকে শুরু হয়ে অভিযান চলছে।
তিনি বলেন, ধরুন একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঁচ লাখ টাকা পাব। তারা যদি ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে তাহলে তা কিভাবে মেনে নেওয়া যায়? সরকারের কাছে আমাদেরও তো জবাবদিহিতা করতে হয়। আমরাও তো সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
পরিচালনা ও সংরক্ষণ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এটিএম তারিকুল ইসলাম বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পাওনা রয়েছে। পাওনা পরিশোধে অসংখ্যবার তাদেরকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন থেকে আশানুরুপ কোন সাড়া দেওয়া হয়নি। সর্বশেষ পরিশোধের তারিখ ছিল ১৮ সেপ্টেম্বর। কিন্তু নির্ধারিত সময়েও তারা পরিশোধ করেনি। ফলে অভিযান চালিয়ে সড়ক লাইন বিচ্ছিন্ন করতে হচ্ছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস সাংবাদিকদের বলেন, ১৫ সেপ্টেম্বর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের ৭৮ লাখ টাকা গ্রহণ করে ওজোপাডিকো। আর ১৮ তারিখ তারা নগরীর সকল সড়কের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন। কেন তারা এই কাজটি করল এবং কার অনুমতি নিয়ে করল তা বলতে পারছি না। আমাদেরকে কোন কিছুই জানায়নি। হঠাৎ করে তারা সড়ক বাতি এবং পানি সরবারহের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছন্ন করে দেন। আজ পর্যন্ত নগরীর সকল সড়ক ও পানির লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বিএম কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা কলেজ ছাত্র ইমরান জানান, তিনদিন ধরে সড়কে রোড লাইট জ্বলছে না। আর সিটি করপোরেশনের পানির লাইনেও পানি আসছে না। আমরা খুব ভোগান্তিতে রয়েছি। চলাচল করতে কষ্ট হয়। কি কারনে এমন হচ্ছে তা জানি না।