যানজটের বরিশাল নগরীতে নতুন ৫’শ সিএনজির অনুমোদন দিতে চায় বিসিসি
প্রকাশ: ৩১ জুলাই, ২০২৩, ৭:৩৩ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
*বাড়বে ভোগান্তি :আখেরী সময়ে আখেরী লুটপাটের আয়োজন
নিজস্ব প্রতিবেদক : যানবাহন নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থাগুলোর হিসাব অনুযায়ী বরিশাল নগরীতে বৈধ যানবাহনর চেয়ে অতি কয়েক গুণ বেশি অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে। রুট-পারমিট মেনে না চলা এবং নির্দিষ্ট কোনো স্টপেজ (গাড়ি থামানার স্থান) না থাকায় যানজটমুক্ত নগরী এখন যানজটের শহরে পরিণত হয়েছে। ট্রাফিক বিভাগ প্রতিনিয়ত যানজট নিয়ন্ত্রনে হিমশিম খাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নগরীতে নতুন ৫’শ সিএনজি চলাচলের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। যেহেতু সিএনজিসহ থ্রী হুইলারের লাইসেন্স দিয়ে থাকে বিআরটিএ। তাই এ বিষয় বিআরটি‘র সাথে আলোচনাও করেছে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ।
এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করেছেন বরিশাল বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক মোঃ রোকনুজ্জামান। তিনি বলেন, ৫’শ সিএনজির লাইসেন্স প্রদানের বিষয় সিটি কর্পোরেশন আমাদর সাথে আলোচনা করেছে। তবে আমরা এখনো ডকুমেন্টরী কোন প্রস্তাবনা পাইনি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রস্তাবনা পেলে বিষয়টি আমরা আমাদের উর্ধবতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। এরপর এ বিষয় সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। তবে এ বিষয়ে জানতে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী সৈয়দ গালাম ফারুক আহমেদের মুঠোফানে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বরিশাল ট্রাফিক বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার মোঃ তানভীর আরাফাত বলেন, এটা সত্য যে বর্তমান নগরীতে যানবাহনের বেশী আধিক্য বিরাজ করছে। তবে এসব যানবাহনের মধ্য অবৈধ যানবাহনই বেশী। এটিই আমাদের প্রধান সমস্যা। তিনি বলেন, বৈধ গাড়ির অনুমোদন দিলে সরকারের রাজস্ব বাড়ে এবং ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্ব পালন করতেও সুবিধা হয়। তবে নগরীর বর্তমান যে অবস্থা তাতে নতুন কোন গাড়ির অনুমোদন দেওয়ার আগে অবৈধ গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে। সেজন্য ট্রাফিক বিভাগ,সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে একযোগে কাজ করতে হবে।
এদিকে নগরীর সাধারন মানুষ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন যানজটের এই নগরীত নতুন ৫’শ সিএনজির অনুমোদন দেওয়া হবে আত্মঘাতী। এই সিদ্ধান্ত নগরবাসীর কোন উপকারে তো আসবেই না বরং ভাগান্তির কারন হবে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ‘প্রতিটি লাইসেন্স প্রদান করে লাখ টাকা নেওয়া হবে। ফলে ৫’শ লাইসেন্স থেকে কয়েক কোটি টাকা উপার্জন সম্ভব হবে। যে কারনে বিআরটিএ কে চাপ দিয়ে ও প্রভাবিত করে ৫’শ সিএনজির লাইসেন্স প্রদান করতে বাধ্য করছেন বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর আমতলার মোড় থেকে চান্দু মার্কেট, সদর রাডের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিবির পুকুরপাড়, ফজলুল হক এভিনিউ, লাইন রোডর মুখ ও নতুন বাজার মোড়, জেলখানার মোড়, কাকলীর মোড়,নতুন বাজার,বাজার রোড,চকবাজার, বটতলা,চৌমাথা,বাংলাবাজার,লঞ্চঘাট,রুপাতলী,কাশিপুরসহ কয়েকটি পয়েন্টে যানজটে নাকাল হয়ে পড়েছে নগরবাসী। এসব পয়েন্টে যানজটর প্রধান কারণ সরু রাস্তা। এছাড়া অতিরিক্ত তিন চাকার যানবাহনের আধিক্য, বিশেষ করে গ্যাসচালিত সিএনজি, হলুদ অটো, ব্যাটারী চালিত রিকশা পুরো নগরীকে এখন দখল নিয়েছে। নগরীতে চলাচলকারী এসব যানবাহনের বেশিরভাগই অবৈধ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিবন্ধন নেই, অনেক যানবাহন আবার চলছে রুট-পারমিট ছাড়া। এসব যানবাহন আবার যত্রতত্র থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করে প্রতিদিনই।
এছাড়া নগরীর নতুনবাজার মোড় ও জেলখানার মোড়ের রাস্তাজুড়ে কাঁচাবাজার, মাছের বাজার, মুদিবাজার ও অসংখ্য রেস্টুরেন্টের সমাহার। এর ওপর চলার পথ তুলনামূলকভাবে সরু। নগরীর সদর রোড থেকে জেলখানার মোড় হয়ে নথুল্লাবাদ ও বিএম কলেজ পর্যন্ত প্রধান সড়কও এটি। যে কারণে তিন চাকার যানের আধিক্যও এ সড়ক সবচেয়ে বেশি। এছাড়া পার্কিং এর জায়গা না থাকায় রাস্তার পাশেই ব্যক্তিগত গাড়ি রেখে বাজার করতে হয় সেখানকার নাগরিকদের। এতও বৃদ্ধি পাচ্ছে যানজট। তথ্যানুযায়ী সিটি করপোরেশনে নিবন্ধিত প্রায় আড়াই হাজার এবং বিআরটিএ কর্তৃক প্রায় ৫ হাজার নিবন্ধিত যানবাহন রয়েছে বরিশাল নগরীতে।