সাব্বির আলম বাবু, বিশেষ প্রতিনিধি:
মেঘনার রাক্ষুসে থাবায় শেষ আশ্রয়স্থল টুকু হারিয়ে বারেক সরদার থাকেন ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের মাঝের চরে আবাসন প্রকল্প-২ গুচ্ছগ্রামে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে তার বর্তমান আশ্রয়স্থল গুচ্ছগ্রামে আঘাত হানে। লন্ডভন্ড করে দেয় গুচ্ছগ্রামের বেশকিছু ঘরবাড়ি।
কারও কোনো সহযোগিতা না পেয়ে সর্বস্ব হারিয়ে মানেবতর জীবন যাপন করছেন ৯৫ বছর বয়সী বারেক সরদার। হঠাৎ একদল লাল পোশাকের তরুণ তার কাছে পৌঁছে দিলেন খাদ্য সহায়তাসহ ত্রাণ সামগ্রী। এতে খুশিতে চোখের পানি চলে আসে তার। বারেক সরদারের মতো মাঝের চরের দুই শতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ভোলা জেলা ইউনিটের সদস্যরা। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী ভোলার সাতটি উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত ২ হাজার ৫০০ পরিবারের মাঝে শুকনা খাবার, তারপুলিন ও হাইজিন প্যাকেজ বিতরণ করে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ভোলা জেলা ইউনিট।আবেগাপ্লুত বারেক সরদার বলেন, মেঘনায় আর তুফানে আমার ঘরবাড়ি সব কাইরা নিছে। এহন আছিলাম সরকারের দেওয়া ঘরে। হেইডাও ভাইংগা গেছে। চাল দিয়া পানি পরে ঘরে থাহা যায় না। এই লাল পোশাকের স্যারেরা খাবার দিছে, তেরপাল দিছে। এহন আর পানি পরব না। ত্রাণ বিতরণকালে রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সেক্রেটারি মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সরকারের পাশাপাশি দুর্যোগ নিয়ে কাজ করে থাকে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। এরই ধারাবাহিকতায় ভোলা জেলার সাতটি উপজেলার ২ হাজার ৫০০ পরিবারের জন্য এই ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে। আমরা ভোলা জেলা ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পর্যবেক্ষণ করে তাদের মাঝে এই ফুড প্যাকেজ পৌঁছে দিচ্ছি। এ সময় ভোলা জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সেক্রেটারি মো. আজিজুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। এ ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস রেডক্রিসেন্টের লাইভলিহুড ম্যানেজার অ্যান্ড ক্যাশ ফোকাল মেহেদী হাসান শিশির, ইউনিট লেভেল অফিসার তরিকুল ইসলাম, (এনডিআরটি) সদস্য সোহাগ, এনডিডব্লিউআরটি সদস্য বরকত, ইউনিটের (এনডিআরটি) সদস্য সাদ্দাম হোসেন, এনডিডব্লিউআরটি সদস্য সাহিদ হোসেন দীপু। ভলান্টিয়ারদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রহমান মিম, আল-আমীন প্রমুখ।