ভোলার লালমোহন উপজেলার পাবলিক লাইব্রেরি কাম অডিটরিয়াম। ১৯৯১ সালে জেলা পরিষদের লালমোহন পৌর শহরের ২নং ওয়ার্ড থানার মোড় এলাকায় স্থাপিত হয় এ লাইব্রেরি। তবে ১৯৯৫ সালে লাইব্রেরিটির কার্যক্রম শুরু হয়। সে সময় লাইব্রেরীভবন ও সংলগ্ন ঘর গুলোতে প্রথমে হানিফ মহিলা কলেজ ও পরে করিমুন্নেছা-হাফিজ মহিলা কলেজ এর কার্যক্রম চলায় লাইব্রেরী যেমন সজ্জিত ছিল, তেমন পাঠকেও সমৃদ্ধ ছিল। তবে মহিলা কলেজ অন্যত্র স্থানান্তরিত হওয়াসহ নানা কারণে ধীরে ধীরে পাঠক হারিয়ে নিষ্প্রাণ হয়ে পরেছে পাবলিক লাইব্রেরী। বইপত্র ও আসবাবপত্রগুলো অযত্নে অবহেলায় পরে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল।
পাবলিক লাইব্রেরীর এ দশা দেখে সেটাকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও পাঠকপ্রিয় করে তুলতে উদ্যোগ নেয় “রবিকর ফাউন্ডেশন” নামে একটি সামাজিক সংগঠন।
প্রায় ২০দিন আগে ফাউন্ডেশনের সদস্যরা নিজেরাই পাবলিক লাইব্রেরী, আসবাবপত্র ও বই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এবং ভবনসহ বাইরের গেটে জমে থাকা শ্যাওলা পরিস্কার করে রঙ করেন তারা। বাইরের দেয়ালে বিখ্যাত ব্যক্তিদের বাণী তুলে ধরা হয়। ফাউন্ডেশনের সভাপতি ফজলে রাব্বি নওফেল বলেন, সংগঠনের সকল সদস্যই শিক্ষার্থী। করোনার কারণে বাড়িতেই অবস্থানের সময়ে বন্ধু বান্ধবসহ সকলে বই পড়ে সময় কাটাতে চান। এসময় স্থান নির্ধারণ করতে গিয়ে পাবলিক লাইব্রেরীর কথা মাথায় আসলে নিজেদের সাথে সাথে অন্য সকল পাঠকদের কাছে তা প্রিয় করে তুলতে স্বেচ্ছাশ্রমে লাইব্রেরিটিকে প্রাণ ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি জানান, পাবলিক লাইব্রেরিটিতে আরও প্রাণবন্ত করতে ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল নোমানের সাথে কথা হয়েছে তাদের। উভয়ই এ বিষয়টি কে সাধুবাদ জানিয়ে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। শিক্ষার্থীসহ সকলকে সামাজিক অপরাধসহ নানাবিধ অপরাধ থেকে মুক্ত রাখতে লাইব্রেরিকে পাঠক সমাগম করে তোলার বিকল্প নাই, তাই সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন ফজলে রাব্বি নওফেল। রবিকর ফাউন্ডেশন কে ধন্যবাদ জানিয়ে পাবলিক লাইব্রেরির সহকারী লাইব্রেরিয়ান মোঃ ফেরদাউস ওয়াহিদ বলেন, লাইব্রেরিটি সজ্জিত হওয়ায় খুবই ভাল লাগছে। এখানে পাঠক সমাগম থাকলে আরও ভাল লাগবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল নোমান জানান, পাবলিক লাইব্রেরিটি ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে শিক্ষার্থীদের বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। অবসরে যাতে শিক্ষার্থীরা জ্ঞানচর্চার সুযোগ পায় সেজন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সকলের সহেযােগিতায় প্রাণ ফিরে পাক এবং পাঠকপ্রিয় হয়ে উঠুক লালমোহন পাবলিক লাইব্রেরি, এমনটাই প্রত্যাশা সচেতনমহল।