রমজান মাসের শুরুতে ব্যবসায়ীরা পন্য গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মূল্য বৃদ্ধি করার চেষ্টা
প্রকাশ: ১১ এপ্রিল, ২০২১, ৬:০৯ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
আ.জলিল (শার্শা যশোর) প্রতিনিধি : আবারো লকডাউন নড়েচড়ে বসেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। লক ডাউনের খবর শুনেই পন্য গুদামজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে এসকল অসাধু ব্যবাসায়ী।
এসকল অসাধূ ব্যবসায়ীর বদ্ধমূল ধারনা লক ডাউনের মেয়াদ আরো বাড়তে পারে এবং তারসাথে যোগ হয়েছে আসন্ন পবিত্র রমজান মাস। এমনিতেই রমজান মাসের শুরুতে ব্যবসায়ীরা পন্য গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মূল্য বৃদ্ধি করে থাকে এরইসাথে লকডাউনের কড়াকড়িতে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামালের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের স্বাভাবিক জীবনকে দূর্বিষহ করে তুলতে পারে।
অনেক ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রবাদি গুমাতজাত করে ক্রেতাদের ঐসকল পন্য নাই বলে ফিরিয়ে দিচ্ছে। এদিকে আগামী সোমবার থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষনার পর থেকে উপজেলার সকল বাজারে ক্রেতাদের কেনাকাটা বেড়ে গেছে।
লকডাউন শুরু হলে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাবে এই আশঙ্খা সকলের মাঝে। স্থানীয় প্রশাসন আশ্বস্থ করলেও ক্রেতাদের মধ্যে বিরাজ করছে এক ধরনের অস্থিরতা। এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা সংকট তৈরি করে বাজার ব্যবস্থা অস্থিতিশীল করতে পারে বলে ধারনা সূধীজনের।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক আ.রহিম পশারী ও, শংকরপুর ফেরিঘাট বাজার কমিটির সভাপতি জাহিদ হাসান পলাশ বলেন “স্থানীয় প্রশাসন কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করে অসাধূ ব্যবসায়ীদের আইনগত ব্যবস্থা
নিলে বাজারে কৃত্রিম সংকট ও দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি হবে না” তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোরভাবে বাজার মনিটরিংয়ের আহবান জানান।
লকডাউন এবং আসন্ন রমজানকে কেন্দ্র করে অসাধূ ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট ও দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়াতে যাতপ না পারে সেজন্য প্রশাসন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি বাজার মনিটরিং করে বাজার ব্যবস্থা স্থিতিশীল রাখুক এটাই আশা করে ভোক্তাসাধারণ।
##
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেয়ার আশ্বাসে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে
বিশেষ প্রতিনিধি : একদিনে প্রায় ৭০ হাজার পরিবারকে আশ্রয় দিয়ে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত ইচ্ছায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে এই ঘর উপহার দেয়ার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৭০ হাজার পরিবারকে তাদের আশ্রয় বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬৬ হাজার পরিবারকে দেয়া হয়েছে বারান্দা, রান্নাঘর, শৌচাগারসহ দুই কক্ষের ঘর। সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় এই মানবিক প্রকল্পের ঘর পেয়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যায় প্রকল্প এলাকায়। যারা আশ্রয় পেয়েছেন তাদের অনেকের স্বপ্নেও ছিল না এমন পাকা বাড়িতে থাকার। তবে এই প্রকল্প ঘিরে বাণিজ্যের অভিযোগও পাওয়া গেছে বিভিন্ন স্থান থেকে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অসাধুদের মাধ্যমে অর্থ নেয়া হয়েছে উপকারভোগীদের কাছ থেকে আবার অনেকেই টাকা দিয়েও পায়নি তাদের স্বপ্নের রাজপ্রাসাদ।
তারই ধারাবাহিকতায় এবার অভিযোগ উঠেছে যশোরের অভয়নগর উপজেলার ৫ নং শ্রীধরপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিমের বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাইয়ে দেওয়ার শর্তে ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জুলহাস বিশ্বাস, আব্দুর রহমান, তরিকুল ইসলাম,সাফি বেগমের কাছ থেকে দশ হাজার করে ও নব্য মুসলিম সামাদের কাছ থেকে আঠার হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ৫ নং শ্রীধরপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য হাকিম এর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী জুলহাস বিশ্বাস,আব্দুর রহমান ও সাফি বেগম অভিযোগ করে বলেন,প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে দশ হাজার করে টাকা নিয়েছে হাকিম মেম্বর। ঘর তো দেয়নি বরং টাকা ফেরত চাইতে গেলে পুলিশি হয়রানির ভয়-ভীতি দেখায়। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাথে হাকিম মেম্বারের সখ্যতা থাকায় সে আমাদের সাথে এমনটি করছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
সংবাদকর্মীরা এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে বেরিয়ে আসে মেম্বারের নানা দুর্নীতির তথ্য।
জানা যায়, মেম্বার এলাকার বেশ কিছু লোককে বিভিন্ন ভাতাসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলে অগ্রণী ব্যাংক নোয়াপাড়া শাখায় একাউন্ট করিয়েছিল। তবে অদ্যবধি কেউ কোন সরকারি ভাতা বা আর্থিক সহযোগিতা পায় নাই বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে বিউটি বেগম বলেন, প্রায় দুই বছর আগে আমাকে বিধবা ভাতার কার্ড করিয়ে দেবার কথা বলে ব্যাংক একাউন্ট খুলে দেয় হাকিম মেম্বার। পরবর্তীতে ব্যাংক থেকে আমার মোবাইলে টাকা জমা ও উত্তোলনের মেসেজ আসলে জানতে পারি আমার নামে ৪০ দিনের কর্মসূচির কার্ড করে আমার স্বাক্ষর ছাড়াই ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে।
তরিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, মেম্বার অগ্রনী ব্যাংক নওয়াপাড়া শাখায় আমাকে একটা একাউন্ট খুলে দিয়ে বলেছিল ৪০ দিনের কর্মসূচির টাকা তোর একাউন্টে চলে আসবে। গত ৪ মার্চ আমার একাউন্ট যার নাম্বার (০২০০০১৪৮১৬৫৩৭)-তে ৪ হাজার টাকা জমা হয়। আমার সাক্ষর ছাড়াই ৭ মার্চ অ্যাকাউন্ট থেকে ৩ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয় যা আমি মোবাইল খুদে বার্তার মাধ্যমে জানতে পারি। বিষয়টা মেম্বারকে জানালে সে এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আবদুল হাকিমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,বিভিন্ন জনের সাথে আমাকে সমন্বয় করে চলতে হয় যার কারণে একটু এদিক-সেদিক না করলে চলা সম্ভব হয় না। তবে আমার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ সত্য নয় তিলকে তাল বানিয়ে আমার প্রতিপক্ষ এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে যোগ করেন তিনি।
একাউন্ট হোল্ডারের স্বাক্ষর ছাড়া টাকা উত্তোলনের বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংকের ম্যানেজার তাপস বিশ্বাসের সাথে মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি অফিসিয়াল কাজে যশোর আছি এ বিষয়ে ব্যাংকে না গিয়ে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।
মেম্বরের দুর্নীতির বিষয়ে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউপি সদস্য হাকিমের বিরুদ্ধে কেউ কোন অভিযোগ করেনি তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।