সাব্বির আলম বাবু, বিশেষ প্রতিনিধি:
করোনার মধ্যেই ভোলায় শিশুদের বাড়ছে নিউমোনিয়া ও ঠাণ্ডা জনিত রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে ৬৫ জন নিউমোনিয়া রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে মারা গেছে একটি শিশু। বর্তমানে জ্বর ও ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত অবস্থায় আছে আরো ৬০ জন।
এদের বেশিরভাগই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালে রোগীদের চাপ বেশি থাকায় রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার ও নার্স।
সূত্র জানায়, ভোলা সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে বেড (শয্যা) রয়েছে ২৫টি এবং কেবিন রয়েছে সাতটি। কিন্তু তার বিপরীতে রোগী আছে ৬৫ জন। প্রয়াজনীয় সংখ্যক বেড না থাকায় একটি বেড গড়ে ২-৩ জন করে শিশু রোগী গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ছে। টানা বর্ষনের কারণে শিশুদের নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট সহ ঠাণ্ডাজনিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন। তিনি বলেন, নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য পর্যপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে। শিশু ওয়ার্ডের তথ্য মতে, ২৫ জুন হাসপাতালে ১১ জন রোগী ভর্তি হলেও মধ্যরাতে ৫ মাস বয়সী খাদিজা নামে একটি শিশু মারা যায়। এছাড়া ২৬ জুন ৪ জন, ২৭ জুন ৯ জন, ২৮ জুন ৯ জন, ২৯ জুন ৪ জন, ৩০ জুন ১২ জন, ১ জুলাই ৭ জন, ২ জুলাই ৬ জন এবং ৩ জুলাই দুপুর পর্যন্ত ৬ জন নিউমোনিয়া রোগী চিকিৎসাধী রয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দিচ্ছেন নার্সরা। সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, শিশু রোগীদের চাপ। কোনো শয্যায় দুইজন আবার কোনো শয্যায় ৩ জন করে শিশুরোগী একই সঙ্গে চিকিৎসা নিচ্ছে। স্বজনরা ওই বেডেই গাদাগাদি করে অবস্থান করছেন। সেবা নিতে তাদের কষ্ট করেই অবস্থান করতে দেখো গেছে। তবে বেশিরভাগই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি।
রোগীর স্বজন বিউটি বেগম ও মুন্নি আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, একই বেডে দুই জন রোগী। দু’জনই নিউমোনিয়া আক্রান্ত। আমরা কষ্ট করে চিকিৎসা নিচ্ছি। রোগীর অবস্থা এখন একটু ভালোর দিকে। ১১ মাস বয়সী শিশু রোগী মেহরাবের স্বজন জানান, ৪ দিন আগে ঠাণ্ডাজনিত কারণে শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার জ্বর ও ঠাণ্ডা ছিলো। পরে জানা গেল তার নিউমোনিয়া হয়েছে। তবে এখন কিছুটা ভালোর দিকে। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্বরত নার্স রোজিনা ইসলাম জানান, রোগীদের চাপ অনেক বেশি। এক বেডে ২-৩ জন করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কষ্ট হলেও আমরা তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। রোগীদের স্বজনদের চাপও একটু বেশি। রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে কিছুটা হলেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। ভোলার সিভিল সার্জন ডা. সিরাজ উদ্দিন জানান, বর্ষার কারণে শিশুরা নিউমোনিয়া ও ঠাণ্ডা বা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের ডাক্তার ও নার্স রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। বেড কম থাকায় তাদের কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। তবে আমাদের পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে। আপাতত শয্যা বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।