বরিশালে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী কর্মকর্তার আদালতে অভিযোগ
প্রকাশ: ৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে ও ধর্ষণের অভিযোগে বরিশালের দশম আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সাবেক এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে আদালতে নালিশি অভিযোগ দায়ের করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা এক নারী। সোমবার দুপুরে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নালিশি অভিযোগ দেন তিনি।বিচারক মো. ইয়ারব হোসেন নালিশি অভিযোগটির বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী মো. হুমায়ন কবির জানিয়েছেন। তিনি জানান, আগামী সাত দিনের মধ্যে নালিশি অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মামলার গ্রহণ বিষয়ে শুনানি হবে। নালিশি অভিযোগের বিবাদী হলো- বরিশাল দশম আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস (৪০)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার বোরানাল গ্রামের মো. আব্দুল আউয়াল খন্দকারের ছেলে।
নালিশি অভিযোগ জমা দেওয়া আইনজীবী বিপ্লব কুমার রায় জানান, বাদী নারী ও বিবাদী পুলিশ কর্মকর্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করতেন। সেই সূত্রে তাদের পূর্বপরিচয় ছিল। বরিশাল অফিসার্স ক্লাবে তাদের দেখা হয়। পূর্ব পরিচয়ের সুবাদে ক্লাবে তারা ব্যাডমিন্টন খেলতো। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক হয়। পুলিশ কর্মকর্তা ওই নারী কর্মকর্তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তখন নারী কর্মকর্তা বিবাদী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা ও যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
বরিশাল নগরীর ত্রিশ গোডাউন এলাকায় দেখা হলে অনুনয় বিনয় করে আবারো সুসম্পর্ক করে। এ সম্পর্কের বিষয়টি নারী কর্মকর্তার স্বামী জানতে পেরে গত বছরের জানুয়ারিতে তাকে ডিভোর্স দেন। ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দশম আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের বাংলোতে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে ওই নারীর ইসলামি শরীয়া অনুযায়ী বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অনুষ্ঠানে উভয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে অংশ নেন।
গত বছরের মার্চে পুলিশ কর্মকর্তার প্রথম স্ত্রী সন্তানসহ দশম আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের বাংলোতে আসেন। তখন ওই নারী বিয়ের কাবিন করার জন্য চাপ দিলে বাংলোতে তাকে বেধড়কভাবে পেটায় পুলিশ কর্মকর্তা। সুস্থ হয়ে বিষয়টি দশম আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশের অধিনায়কের কাছে অভিযোগ দিতে গেলে তিনি কাবিন করতে রাজি হন। এ সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান- বর্তমানে তার ৩-৪টি বিভাগীয় মামলা রয়েছে। মামলার ঝামেলা গেলেই কাবিন করা হবে। পরে গত ২২ জুলাই নারীকে ঢাকা নিয়ে রাজধানীর ইস্কাটনে পুলিশ অফিসার্স মেসে নেয়। গত ২৫ জুলাই গুলশানের এক বন্ধুর বাসায় কাবিনসহ বিয়ে হয় তাদের। কয়েকদিন পর ফোনে ওই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে বিয়ের কথা স্বপ্ন মনে করে ভুলে যেতে বলে বিয়ের কথা অস্বীকার করে। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে গুলি করে হত্যাসহ সহকর্মীদের মাধ্যমে মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয়। এরপর থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
গত ২০ নভেম্বর স্ত্রীর মর্যাদা চেয়ে ওই নারী তাকে আইনি নোটিশ দেন। কিন্তু জবাব না দেওয়ায় গত ২৭ নভেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দেন। পুলিশ আদালতে মামলার পরামর্শ দেয়। সেই পরামর্শ অনুযায়ী আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।