নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
বরগুনার পাথরঘাটায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে দুলু বেগম (৪২) নামে এক নারীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার কাকচিড়া গ্রামে একটি ঘরে ওই নারীকে শিকলে বেধে নির্যাতন করা হয়। ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, তার বাড়ির গাছ কেটে ফেলে প্রতিবেশি রাজ্জাকের ছেলে শাহ-জালাল আকন। তিনি বাধাঁ প্রদান করলে তাকে শাহ জালাল তার ভাই ফেরদাউস আকন ও সালমা বেগম নামে এক নারী জোড় করে ধরে নিয়ে পায়ে শিকলে বেধেঁ ২ঘন্টা ধরে শাহ জালালের ঘরে নির্যাতন করে। পরে তার ছেলে-মেয়ে ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে পাথরঘাটা সাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওই নারী আরো বলেন, এর আগেও কয়েকবার তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতিত ওই নারী এখন পাথরঘাটা সাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কমর্রত চিকিৎসক জানান ওই নারীর পায়ে ও মাথায় জখম রয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার কাকচিড়া গ্রামের রাজ্জাকের ছেলে ফেরদাউস আকন ও তার ভাই শাহ জালাল আকন ওই নির্যাতিত ওই পরিবারকে দির্ঘদিন ধরে নির্যাতন করে আসছেন। তিনি ডিসি অফিসে চাকরি করেন পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেছেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই এলাকার একজন জনপ্রতিনিধি বলেন, ফেরদাউস আকন মাদক সেবন করেন ও এর ব্যবসা করেন।
নির্যাতনের বিষয় এ প্রতিবেদক মুঠোফোনে ফেরদাউস আকনের বক্তাব্য জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদকের সঙ্গে রবিবার পাথরঘাটা উপজেলা প্রেসক্লাবে দেখা করেন। এবং প্রতিবেদকের সামনেই নির্যাতিত নারীর ছেলেকে উদ্দেশ করে মুঠোফোনে একজনকে বলেন ‘‘ওকে বিচার টাকা পয়সা যা লাগে দিতাছি, আমি আইতাছি। আমি ডিসি অফিসে চাকরি করি কথা বোঝনায়। ওরে টানাইয়া পিডা, এরপর ধরে আনব। এ ধরণের একটি অডিও রেকর্ড প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। পরে তিনি নির্যাতনের বিষয় কোন কথা না বলে চলে যান। ভুক্তভোগী ওই নারীর ছেলে মো. জিলানী বলেন, আমার মাকে শিকলে বেধেঁ নির্যাতন করা হয় খবর শুনে গিয়ে মাকে উদ্ধার করি। এসময় ফেরদাউস আকন ও তার ভাই শাহ জালাল আমাকে এলোপাথারি মারতে থাকেন। পরে মাকে নিয়ে পাথরঘাটা হাসপাতালে আসি। মা এখন চিকিৎসাধীন। আমাদের বাড়িছাড়া করবেন, মেরে ফেলবেন বলে হুমকি দেন ফেরদাউস আকন। আমরা এখন আতঙ্কিত। কাকচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু জানান, গত শনিবারের নির্যাতনের ঘটনা আমি শুনিনি, তবে ওরা শাহ জালাল আকন তার ভাই ফেরদাউস আকন লোক ভালনা। এর আগে কয়েকবার ও নারীকে নির্যাতন করেছেন। আমার সামনেও একবার এ ঘটনা ঘটেছে। ওরা খারাপ প্রকৃতির লোক। এ ব্যাপারে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল বাশার বলেন, ঘটনা শোনার পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।