শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ



বন্ধন এক্সপ্রেসে কম্বলের হাট
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

বন্ধন এক্সপ্রেসে কম্বলের হাট

মিলন কান্তি দাস,
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচল করা কোলকাতা-খুলনা রুটে চলাচল করা “বন্ধন এক্সপ্রেস” পরিনত হয়েছে কম্বল বিক্রির হাটে।
আজ ১৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার এই ট্রেনটি সকাল সাতটা দশ মিনিটে পশ্চিম বঙ্গের কোলকাতা স্টেশন থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসার কথা। স্টেশনে পৌছে দেখা গেছে অধিকাংশ যাত্রীদের কাছেই রয়েছে বান্ডিল বান্ডিল কম্বল। কথা বলে জানা গেছে এরা সবাই বিজনেস ভিসায় নিয়মিত যাতায়াত করেন। টুরিস্ট ভিসার যাত্রীদের তারা আগে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছিলেন। ট্রেনের ভেতর ঢুকে দেখা গেছে তিনটা/চারটা কম্বল একসাথে বেঁধে বাঙ্কার,টেবিলের উপর- নীচ ভরা। ছাড়ার নির্ধারিত সময় সাতটা দশ পার হবার পরও দেখা গেলো কম্বলের বান্ডিল মাথায়,ঘারে করে ছুটে এসে ট্রেনে উঠছে অনেক যাত্রী।
নির্ধারিত সময়ের চল্লিশ মিনিট পর কোলকাতা স্টেশন ট্রেন ছাড়লো দুই দেশের মধ্যে চলাচল করা বন্ধন এক্সপ্রেস। ট্রেন ছাড়ার পর পরিচয় হয় বিজনেস ভিসার যাত্রী পিন্টু কর্মকার’র সাথে। তিনি বলেন সপ্তাহে দুইদিন চলে বন্ধন এক্সপ্রেস। এই ট্রেনে চলাচল করা অধিকাংশ যাত্রীই দুইদিন মালামাল নিয়ে আসে। বেনাপোল রেলওয়ে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসে পৌছে মালামাল বিক্রী করে আবার বেনাপোল স্থল বন্দর থেকে ভারতে চলে যায়। কি কি মালামাল আনেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন কম্বল,শাল,খাবার, চকলেট,কসমেটিকস আইটেম আনেন। দাম কেমন পাক্তয়া যায় এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন কম্বল কোলকাতায় সারে এগারোশ টাকায় কিনে বাংলাদেশে এনে চব্বিশ/পঁচিশ শো টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়াও অন্যান্য মালামাল গায়ে লেখা দামের দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয়। ট্রেনটি বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছানোর পর দেখা গেলো ট্রেন থেকে স্কুল ব্যাগ, সাইট ব্যাগ গুলো কেউ ছুড়ে মারছে আর নীচে থাকা লোকেরা সেগুলো নিয়ে যাচ্ছে। ট্রেনটি স্টেশন আসার আগেই নিয়মিত যাতায়াত করা অনেকেই বললো ব্যাগ নিয়ে গেটের কাছে চলে যান। তাদের পরামর্শ মতো সাধারণ যাত্রীরা গেটের কাছে গেলাম। ট্রেনটি থামতেই দশ বারোজন পুরুষ এবং ত্রিশ/চব্বিশ জন মহিলা ট্রেন উঠে ভিতরে ঢোকার জন্য ধাক্কা মারতে লাগলো। একজন যাত্রী উপস্থিত প্রশাসন’র নীরব উপস্থিতির প্রতিবাদ করে বললো এদের নামিয়ে দিতে। তখন একজন কাস্টমস অফিসার এবং বিজিবির সদস্যরা নারী-পুরুষদের নামিয়ে দিতে সচেষ্ট হলেন। দশটা ত্রিশ মিনিটে ট্রেন পৌঁছানোর পর ইমিগ্রেশন’র কাজ শেষ করে কাস্টমস গেটে গিয়ে দেখা গেলো সেটা বন্ধ। কাউকে খুঁজে পাওয়া গেলো না। তখন একজন নিয়মিত যাত্রী বললো এখন ট্রেনে কম্বলের হাট বসেছে। যেগুলো এতক্ষণ দেখেছেন কামরার মধ্যে সেগুলো এখন ট্রেনের ভেতরেই বেচাকেনা চলছে। কৌতুহল বসত ইমিগ্রেশন এর গেটে ছুটে গিয়ে দেখা গেলো হাট বাজারে যেভাবে জিনিসপত্র বিক্রি হয় সেভাবেই চলছে। নারী- পুরুষ কম্বলের বান্ডিল ঘারে, মাথায় করে ছুটে যাচ্ছে। দের ঘন্টা অপেক্ষার পর কাস্টমস গেটের তালা খুললো। এবং মজার বিষয় হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের কোন হয়রানি না করেই ছেড়ে দিচ্ছেন। বাজিবি’র অফিসার সাহেবও সাধারণ যাত্রীদের ছেড়ে দিচ্ছেন। ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস শেষ করে ট্রেনে উঠে দেখা গেলো একটি কম্বল নেই এবং ওই কামরার দশ বারোজন যাত্রী ছাড়া বাকিদের কাউকে খুঁজে পাওয়া গেলো না। সকলের চোখের সামনেই প্রতিটি কামরায় থাকা কম্বল ও অন্যান্য জিনিস বিক্রি হয়ে গেলো। দীর্ঘ সময় বিলম্বের পর নিজের কামরায় ওই ব্যবসায়ীদের কাউকে না পেয়ে পাশের কামরার এক দিদির সাথে কথা হয়। কথা হয় নদীয়ার সুমিতা দিদির সাথে। তিনি চার/পাচ মাস হলো এই বিজনেস করেতে শুরু করেছেন। আজকে তিনি চারটা কম্বল ও হরলিক্সসহ কিছু খাবার এনেছেন। কম্বল চব্বিশ শো করে বিক্রি করেছেন। অন্যান্য মালামাল নিয়ে যশোর যাচ্ছেন। সেখানে দোকান ধরা আছে। তাদের কাছে মালামাল বিক্রি করে আজকেই ফিরে যাবেন কোলকাতা। বাড়িতে স্বামী-ছেলে আছে। স্বামী রঙের কাজ করেন আর ছেলেও কাজ করে। ইনকাম কেমন হয় এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন খারাপ হয় না। দায়িত্বরতদের সাথে কথা বলে কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি। একজন কাস্টমস এর লোকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন এখানে ডিউটি করতে চাই না। তারপরও ডিউটি দিলে না এসে উপায় নেই।
এই পণ্য গুলো বৈধ পথে আসলে সরকারের লাভ হতো অনেক। অথচ আমাদেরই সবার চোখের সামনে চলছে এমন কাজ আর রাস্ট্র হারাচ্ছে উপার্জন। বন্ধন এক্সপ্রেসে স্বপরিবারে
আসা যাত্রী স্বপ্না রানী দে বলেন আমি অবাক হয়ে গেছি একটা আন্তর্জাতিক ট্রেনে স্টেশনে পৌঁছানোর পর প্রশাসন’র সামনে ধাক্কাধাক্কি করে ট্রেনে উঠছে তারা কিছুই বলছে না। আমার মেয়েটি নামতে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছে। তবে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস সাধারণ যাত্রীদের কোন হয়রানি করেনি। তবে দের ঘন্টার মতো কাস্টমসের গেটে দাড়িয়ে থাকতে হয়ে। নিয়মিত যাতায়াত করা একজন যাত্রীকে বলতে শোনা গেছে কম্বল বিক্রির হাট শেষ না হলে কাস্টমস গেট খুলবে না। দুই দেশের মধ্যে চলাচল করা বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনটির মান ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছে অনেক সাধারণ যাত্রী।




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

প্রধান উপদেষ্টা : প্রফেসর শাহ্ সাজেদা ।

উপদেষ্টা সম্পাদক : সৈয়দ এহছান আলী রনি ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।

যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল।

ইমেইল: [email protected]

মোবাইল: 01713799669/01711358963

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি।
© বরিশাল খবর সম্পাদক মামুনুর রশীদ নোমানী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

  নলছিটির মগড় ইউনিয়নবাসীর সেবা করতে চান মোঃ সাইফুজ্জামান সুমন তালুকদার   প্রাণ ফিরছে বরিশাল নগরীর ৭ খালে   বেতারের সঙ্গীত শিল্পী (পল্লীগীতি) হিসেবে মনোনীত হলেন অ্যাড: জুয়েল   বরিশালের মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাচারী প্রধান শিক্ষিকা স্ট্যান্ড-রিলিজ !   বরিশাল ল’ কলেজে দুর্নীতি, উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ   অনিয়ম দুর্নীতির আতুরঘর বরিশাল বেতার : চলছে জোড়াতালি দিয়ে   বরিশাল ডাকঘরের ক্যাশিয়ার নুরুল কবিরের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ   দেড় লাখ মামলা মাথায় বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মীর   আলু শুন্য বরিশালের পাইকারী বাজার   বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের ওপর মার্কিন ভিসানীতি শুরু   মাদারীপুরের হিমাগারে ৩০ হাজার বস্তা, বাজারে আলুর কৃত্রিম সংকট   যুদ্ধ স্যাংশন সংঘাতের পথ এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর আহবান   Mamunur Rashid Nomani charged with violating Bangladesh’s Digital Security Act   ঝালকাঠিতে রোহিঙ্গা আটক এসেছিলো ভোটার হওয়ার জন্য   সাঈদুর রহমান রিমনকে নিয়ে দিলিপ কুচক্র মহলের ষড়যন্ত্রের জবাব!   বাবুগঞ্জে ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের চার সদস্য আটক   নলছিটিতে ৫০তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ   অপরাধ ঘটাতে আগাম ‘রেকি‘ করে গেছেন তারা!   ঝালকাঠি কারাগার: কু-প্রস্তাবের দাম দশ লাখ টাকা! জেলার বহাল তবিয়তে   রাজাপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দুর্নীতির আখড়া