স্টাফ রিপোর্টার : বর্তমান সরকারের বিশেষ তৎপরতায় দেশব্যাপী শিক্ষা ব্যবস্থার অগ্রগতি সাধিত হলেও শিক্ষার তেমন কোন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি ঐতিহ্যবাহী ফুলতলা মোহাম্মদিয়া আলিম মাদ্রাসায়। কাগজ কলমে অনুমোদিত হলেও নেই বঙ্গবন্ধু কর্নার, নেই কোন পাঠাগার। নেই ল্যাব। এমন কি মাদ্রাসায় যথাযথভাবে টানানো হয়নি
জাতির জনক ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি। সম্প্রতি জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। প্রস্তুত করা হয় প্রার্থীদের তালিকা। টাকা নিয়ে প্রার্থী ঠিক করা হয়েছে। একেক পদের বিপরীতে ডামি প্রার্থীও রাখা হয়েছে যাতে করে কাঙ্খিত প্রার্থীদের নিয়োগে কোন সমস্যা না হয়।মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সরকারি ও সিনিয়র মাদ্রাসা শাখা ৯ ডিসেম্বর, ২২ তারিখে নিয়োগ বোর্ডের জন্য মহাপরিচালকের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক (প্রশাসন) মোঃ জাকির হোসাইনকে।জানা গেছে মাদ্রাসাটিতে উপাধ্যক্ষ ,অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর,অফিস সহকারি কাম হিসাব সহকারি,নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে একেক জন করে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। মাদ্রাসাটির সভাপতির আপন ভাই, চাচাতো ভাই, বোনের মেয়ে সহ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ আগভাগেই চুড়ান্ত করে রেখেছেন সভাপতি মাসুম বিশ্বাস ও অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান।মাদ্রাসায় সরেজমিনে গিয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির। তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বিকার করে সভাপতি মাসুম বিশ্বাস ও অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,আমরা শিঘ্রই বঙ্গবন্ধু কর্নার করবো। যেখানে যা ত্রুটি আছে তা ঠিক করে নিবো। লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগেরপায়তারার বিষয়টি এলাকায় সকলের মুখে মুখে। এলাকার লোকজন স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগের দাবী জানিয়েছে।
সারাদেশে শিক্ষা প্রতিযোগীতা মূলক ও অনুকরনীয় বিষয় হলেও এ মাদ্রাসার শিক্ষার বেহালদশা। এ কারণে দিন দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাফল্যের পরিবর্তে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা নিম্মমুখী হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ সভাপতি ও অধ্যক্ষ মাদ্রাসাটি দীর্ঘদিন পরিচালিত হওয়ায় এবং পরিচালনা কমিটিতে এলাকার শিক্ষিত স্বজন, সুশীল সমাজের প্রকৃত অভিভাবক না থাকায়, কমিটির অব্যবস্থাপনায় শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতির পায়তারার কারনে এবং শিক্ষক অভিভাবক ও কমিটির সমন্বয়হীনতার কারনে দিনের পর দিন এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান নিম্মমূখী হয়ে পড়েছে।নিয়োগ পদ্ধতি অনুসরন না করে আত্মীয়তা ও স্বজনপ্রীতি প্রধান্য দেয়া হচ্ছে শর্ট লিস্টে। সভাপতির ভাই ও তাদের পরিবারের লোকদের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার পায়তারা করছেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী মাদ্রাসার অনিয়ম, দুর্ণীতি প্রতিরোধে সক্রায় হয়ে উঠেছেন। ক্ষোভে উত্তাল ফুলতলা এলাকাবাসী জানান, অনিয়ম, দূর্ণীতি করে অবৈধ ভাবে কোন পদে নিয়োগ দেওয়া হলে, তা প্রতিহত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। নেয়া হহবে আইনী ব্যবস্থা। দেয়া হবে দুদক সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ।ফুলতলা এলাকার একজন প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গৌরব উজ্জল সম্মান ছিল জেলা পর্যায়ে। তৎকালীন সময়ে দ্বীনি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা এসে শিক্ষাগ্রহন করেছিলেন সুন্দর পরিবেশে। দীর্ঘদিন যাবৎ মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির স্বেচ্ছাচারিতায়, একই কমিটির অধীণে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় এবং কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য শিক্ষকদের নিরব ভূমিকায় মাদ্রাসাটি অবহেলার মূল কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছে। যার ফলে ভবিষৎতে অনুষ্ঠিত যে কোন বোর্ড পরীক্ষায় ফল বিপর্যয়ের আশঙ্কায় রয়েছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও কিছু অসাধূ স্টাফদের সমন্বয়ে অনিয়ম, দূর্ণীতির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়ার পায়তারার কারনে অভিভাবক মহল ও সুশীল সমাজে তৈরি হয়েছে প্রচন্ড ক্ষোভ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা।বেতাগী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে শহীদুর রহমান জানান, মাদ্রাসাটিতে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মান ও পরিবেশ সন্তোশজনক নয়। শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির পায়তারার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ফুলতলা এলাকাবাসী শিক্ষামন্ত্রী,জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের নিকট অনিয়ম, দূর্ণীতি থেকে ফুলতলা সিনিয়র আলিম মাদ্রাসাটি রক্ষা করার জোর দাবি জানান।