পটুয়াখালীতে রাস্তা নির্মান কাজে দশ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী ও কাজ বন্ধের হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন
প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৩:২৩ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
রানা,পটুয়াখালী প্রতিনিধঃ সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন সিকদার গং কর্তৃক বাধা প্রদান, ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি ও বিভিন্ন হুমকী ধামকী প্রদানের প্রতিবাদে মানববন্ধন, ঝাড়ু মিছিল, বিক্ষেভ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেছে ঠিকাদার ও এলাকার ভুক্তভোগীরা।
গতকাল৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নে বাজারঘোনা আমিনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নাজমুস শাহাদাত ট্রেডার্সের পক্ষে পটুয়াখালী সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মোঃ মনিরুজ্জামান টিটু। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বরিশাল বিভাগ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পটুয়াখালী সদর উপজেলার পাটুখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে হাজী আছমত আলী জুনিয়র মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিঃ মিটারের ১৭০০ মিটার পাকা করনের উন্নয়ন কাজের (আইডি নং-৫৭৮৯৫৫০০১) ২৯.৩.১৯ ইং তারিখ পটুয়াখালী এলজিইডি ঠিকাদার নাজমুস শাহাদত ট্রেডাসের অনুক‚লে কার্যাদেশ প্রদান করেন।
ঠিকাদার নাজমুস শাহাদত উক্ত কাজটি সম্পন্ন করার জন্য মনিরুজ্জামান টিটুকে ক্ষমতা প্রদান করেন। মনিরুজ্জামান টিটু ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়ে কাজ শুরু করেন এবং এক চতুর্থাংশ কাজ করার পরে মরিচবুনিয়া এলাকার ঠিকাদার সাবেক চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন সিকদার উক্ত কাজে টেন্ডার দিয়ে ব্যর্থ হয়ে তার দলীয় সন্ত্রাসী লোকদের দিয়ে পাকা রাস্তা করনের কাঝে বিভিন্নভাবে বাধার সৃষ্টি করে।
ঘটনার দিন ২১.০৭.১৯ ই তারিখ সকাল ১০টার সময় রাস্তার কাজ চলাকালে ১০/১২ জন মস্তান লোক নিয়ে এসে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে কাজ বন্ধ করে দিয়ে হুমকি হামকি দিয়ে চলে যায়। এ খবর শুনে মনিরুজ্জামান টিটু ঘটনাস্থলে গিয়ে লেবারদেরসহ এলাকার লোকজনের কাছে জিজ্ঞাসা করলে লোবাররা জানায়, বশির চেয়ারম্যান এসে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, তাকে ১০ লক্ষ টাকা দাবীকৃত চাঁদা টাকা না দিলে কাজ করতে নিষেধ করে গেছে। পরে বশির সিকদার, মনিরুজ্জামান টিটু এর বিরুদ্ধে এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে একটি দরখাস্ত করে। এ দরখাস্তের প্রেক্ষিতে নির্বাহী প্রকৌশলী কাজ বন্ধ করে দিয়ে ২৮.৭.১৯ তারিখ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তাদেরকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেন। তদন্ত কমিটি ০৪.০৮.১৯ ইং তারিখ সরেজমিনে তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদান করেন। রিপোর্টে রাস্তার কাজ সঠিক ও সুন্দর ভাবে সিডিউল মোতাবেক অনুমোদিক প্রাক্কলনে চেইনেজের ভিতরেই কাজটি চলিতেছে।
কোন অনিয়ম না পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী ৪.০৮.১৯ইং তারিখ পুনরায় কাজ করার নির্দেশ দেন। কাজ বন্ধ করতে না পেরে এবং দাবীকৃত ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা না পেয়ে বশির সিকদার তার সহোদর বড় ভাই জাকির হোসেন সিকদারকে ২নং এবং দলীয় লোক রেজাউল করিম ও খালেক মাদবরকে ১ ও ৩ নং বাদী দেখিয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী ৩২৩/২০১৯ নং মোকদ্দমা দায়ের করেন। এ মামলায় নাজমুস শাহাদত ঠিকাদারকে ১নং বিবাদী, নির্বাহী প্রকৌশলীকে ২নং, উপজেলা প্রকৌশলীকে ৩নং এবং উপ সহকারী প্রকৌশলীকে ৪নং বিবাদী করে তাদের উপড় ৩৯ অর্ডারের ১ রুল ও ১৫১ ধারা মতে নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রার্থনা করেন। বিজ্ঞ আদালত চলমান উন্নয়ন কাজ বন্ধ না করে ১০দিনের মধ্যে কারন দর্শানোর আদেশ দেন। বিবাদী নাজমুস শাহাদত আদালতে হাজির হয়ে জবাব দাখিল করেন। মোকদ্দমা চলমান আছে।
আদালতের মাধ্যমে উল্লেখিত রাস্তার কাজ বন্ধ করার আদেশ হাসিল করতে না পেরে বশির সিকদার মনিরুজ্জামান টিটুকে এবং কাজের শ্রমিকদেরকে বিভিন্নভাবে প্রান নাশের হুমকি দিচ্ছে। সরকারী উন্নয়ন কাজে বশির উদ্দিন সিকদারের এ অনৈতিক ঘটনা স্থানীয় সংসদ সদস্যকে অবহিত করেছেন বল সাংবাদিক সম্মেলনে মনিরুজ্জামান টিটু উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীর মাস্টার, খালেক মাদবর, ইউপি সদস্য মফিজুল, নাসির হাওলাদার, রাজ্জাক বয়াতী, রশিদ মাদবর, সালাম মাদবর, ইউসুফ আকনসহ অর্ধশতাধিক এলাকাবাসী।
বশির উদ্দিন সিকদার কর্তৃক ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর চাদাঁবাজি ও প্রান নাশের হুমকি হামকির প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে এলাকার শত শত নারী পুরুষ ঝাড়– মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। সরকারের উন্নয়ন কাজে বাঁধা ও ১০ লক্ষ টাকা চাঁদাদাবী এবং আদালতে মামলা করায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানাগেছে।