নিহত মামুনের বাবা-মায়ের আক্ষেপ খোঁজ রাখে না কেউ, দিবস এলে মায়াকান্না নেতাদের
প্রকাশ: ২১ আগস্ট, ২০২২, ২:১৮ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
খুনিদের বিচারের অপেক্ষায় ১৮ বছর ধরে প্রহর গুনছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত দশমিনার পশ্চিম আলীপুরা গ্রামের মামুন মৃধার পরিবার। মৃত্যুর আগে ছেলের খুনিদের বিচারের রায় কর্যকর দেখে যেতে পারবেন কিনা এমন শঙ্কা বৃদ্ধ বাবা-মায়ের। জীবনের শেষ সময়ে এসে চরম অর্থকষ্টে দিন পার করছেন তারা। তাই তারা আক্ষেপ করে স্থানীয় সরকারদলীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে করেছেন কোনো খোঁজখবর না নেওয়ার অভিযোগ।
তারা বলেন, আগস্ট এলেই নেতা আর জনপ্রতিনিধিরা একদিন বাড়িতে এসে ভিড় করেন। আর সারা বছর খোঁজ নেন না তারা। শুক্রবার বিকালে খোঁজখবর নিতে গেলে অশ্রুভেজা চোখে নিহত মামুন মৃধার মা অসুস্থ মোর্শেদা বেগম এ কথাগুলো বলেন। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের পরিবারের জন্য অনেক কিছু করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ১৬ আগস্ট ১০ লাখ টাকা পোস্ট অফিসে জমা রাখার মুনাফা বাবদ ৮ হাজার ও বঙ্গবন্ধু কন্যার ট্রাস্টের ৫ হাজার টাকাসহ মোট ১৩-১৪ হাজার টাকা পান।
তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বৃদ্ধ বয়সে স্বামীর উপার্জন না থাকা ও স্বামী-স্ত্রী রোগাক্রান্ত হওয়ায় টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মোর্শেদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ২১ আগস্ট এলেই সবাই বাড়িতে ভিড় করেন। মায়াকান্না দেখান। এরপর সারা বছর এমপিসহ জনপ্রতিনিধিরা বা কোনো নেতা আর খোঁজ রাখেন না। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা ছাড়া কেউ কোনো সহায়তাও করেন না। তিনি আরও বলেন, আমার একটাই দাবি, ছোট মেয়ে রুবিনার একটা চাকরির ব্যবস্থা করা। চাকরির জন্য মেয়েটাকে বিএ পাশ করিয়েছি। তিনি সংশ্লিষ্টদের কাছে তার মেয়ের একটা চাকরির জন্য দাবি জানান।
স্থানীয় সংসদ-সদস্য এসএম শাহজাদা বলেন, ‘সারা বছর ধরে খোঁজখবর বা সাহায্য-সহযোগিতার কোনো সুযোগ নেই। নির্দিষ্ট কোনো প্রত্যাশা থাকলে আমাদের জানালে তার জন্য চেষ্টা করতে পারি। আগস্টে যে ভয়ানক ঘটনা ঘটেছে সেটা স্মরণ করে নেতাকর্মীদের এগুলো দেখানোর ও বোঝানোর জন্য আমরা ওখানে যাই। রাষ্ট্রীয় অন্যান্য কাজ থাকার কারণে ওই একদিন ছাড়া যাওয়ার সুযোগ নেই। কোনো প্রয়োজন থাকলে আমাদের জানাতে হবে।’
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখতে ও তার ভাষণ শুনতে গিয়ে ঘাতকের গ্রেনেড হামলায় নিহত হন ঢাকার কবি নজরুল ইসলাম কলেজের মেধাবী ছাত্র মামুন মৃধা।