নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা-বরিশাল রুটের কুয়াকাটা-২ লঞ্চের লষ্কর কেবিনে তরুণী হত্যার ঘটনায় অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছেন স্বামী মাসুদ (১৯)। গতকাল রোববার দিনগত রাতে র্যাবের একটি দল কক্সবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
আজ সোমবার বিকেলে র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার মো. মাসুদের সঙ্গে ২০১৯ সালে শারমিনের মোবাইল ফোনে প্রেম হয়। পরে তারা দৈহিক সম্পর্কে জড়ান। এরপর শারমিন বিয়ের জন্য চাপ দিলে মাসুদ অস্বীকৃতি জানান। ফলে শারমিন মাসুদের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করেন। সেই মামলা থেকে রক্ষা পেতে ২০১৯ সালে শারমিনকে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন। বিয়ের পর মাসুদ বিভিন্ন নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং শারমিনকে এড়িয়ে চলতে থাকেন। মাসুদ সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইলে শারমিন তার কাছে দেনমোহরের পাঁচ লাখ টাকা চান। তাই শারমিনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মাসুদ। এরই মধ্যে শারমিনের কাশি হলে হত্যার উদ্দেশ্যে মাসুদ ঢাকা থেকে কাশের ওষুধ, বিষ ও ঘুমের ওষুধ কেনেন। ড্রাইভিং লাইসেন্স করার কথা বলে পরিকল্পনা মোতাবেক গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে কুয়াকাটা-২ লঞ্চে বরিশাল রওনা দেন। নির্বিঘ্নে খুন করতে লঞ্চের লস্কর কেবিন ভাড়া করেন মাসুদ। লঞ্চে বসে রাত ১২টার দিকে শারমিনের কাশি শুরু হলে মাসুদ তাকে বিষমিশ্রিত কাশের ওষুধ খেতে দেন। ওষুধ খেয়ে অসুস্থবোধ করলে শারমিনকে বাকি বিষও জোর করে খাইয়ে দেন মাসুদ। তারপর তিনি কেবিনের দরজা বন্ধ করে বাইরে এসে লঞ্চের রেস্টুরেন্টে ভাত খান। ভাত খেয়ে ফের কেবিনের সামনে গিয়ে বিষমিশ্রিত কাশির ওষুধের বোতল পরে থাকতে দেখে তা নদীতে ফেলে দেন। কেবিনে প্রবেশ করে শারমিনকে তখনও জীবিত দেখতে পেয়ে ব্যাগ থেকে শার্ট বের করে গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। লঞ্চ থামলে দ্রুত নেমে গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি চলে যান অভিযুক্ত।
এ ঘটনার পর র্যাব লঞ্চের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযানে নামে। র্যাবের হাত থেকে রক্ষায় মাসুদ বরিশাল, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় আত্মগোপন করেন। গতকাল দিনগত রাতে তাকে কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মাসুদের বিরুদ্ধে বরিশালের কোতোয়ালি মডেল থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানায় র্যাব।