সঞ্জয় ব্যানার্জী, দশমিনা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতাঃ
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার কাচাবাজার গুলোতে পেঁয়াজের দাম নিয়ে চলছে রীতিমতো নৈরাজ্য তৃতীয়বার বিক্রি হচ্ছে ১৪৫টাকায় কেজি প্রতি। পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানো অব্যাহত রেখেছেন। সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি থাকায় এর অপব্যবহার করছেন সুযোগসন্ধানী কিছু ব্যবসায়ী। বলা চলে, যেন প্রতিযোগিতা করে দাম বাড়িয়ে চলেছেন তাঁরা।
ভোক্তারা দাবি, বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে। কারণ বাজারে গেলে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা যায় না। দাম যখন বেড়ে যায় তখনই সব দোকানদার একসঙ্গে বাড়ায়। এটা সম্ভব তখনই, যখন বিক্রেতারা একজোট থাকে। পেঁয়াজ ক্রেতা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাজারে সরকারের নজরদারি নেই বললেই চলে। নজরদারি হলে অন্তত দিনে দিনে দাম বাড়তে পারে না।’ বাজারে নেই সরকারের কার্যকর নজরদারি পেঁয়াজের দামের নৈরাজ্য ঠেকাতে বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন বলে জানান তারা। অন্তত উপজেলার একাধিক বিক্রেতাকে শাস্তি দিলে দাম নিয়ন্ত্রনে আসবে বলে মনে করেন।
অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে রিতিমত হিমশিম পোহাতে হচ্ছে। গতকাল রোববার উপজেলার বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিপ্রতি পেঁয়াজের জন্য গুনতে হচ্ছে ১৪৫ টাকা পর্যন্ত, যা চার দিন আগেও ছিল ৯৫ টাকা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকার কারণে পেঁয়াজের দাম না কমে বাড়ছে। কিছু খুচরা বিক্রেতা বেশি দামের কারণে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ রাখার কথা জানালেও অনেক খুচরা বিক্রেতাই বলছেন, পাইকারি বাজার থেকে চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ পাচ্ছেন তাঁরা।
শনিবার গছানী কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ওই বাজারে চারজন বিক্রেতা। তাঁদের মধ্যে দু’জনের কাছে পেঁয়াজ আছে। অন্য দু’জন পেঁয়াজ বিক্রি করছেন না। তাঁদের একজন জানান, ‘দাম বেশি, কাস্টমার চেঁচামেচি করে। হেইল্লাইগা বেচাই বাদ দিছি।’
গছানী বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন এমন বিক্রেতা শাহজাহান জানা, ‘পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের অভাব নাই। দামটা বেশি, এটাই সমস্যা।’
তবে ‘পেঁয়াজ আমদানি কমে গেছে। দেশি পেঁয়াজের মজুদও কম। সব মিলিয়ে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। যে কারণে দাম বাড়তি।’
অন্য এক বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বাজারে যাঁরা প্রভাব বিস্তার করছেন, তাঁরা অনেক বড় ব্যবসায়ী। তাঁদের ধরা উচিত। আমরা তো চুনোপুঁটি। দাম কমা বা বাড়াটা তাঁদের ওপরই নির্ভর করে।’ পেঁয়াজের বাজারের এ অস্থিরতার শুরু হয়েছিল সেপ্টেম্বর মাসের ২৯ তারিখে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার মধ্য দিয়ে। সে সময় রাতারাতি পেঁয়াজের দাম কেজি ১৩০ টাকায় উঠেছিল। কিন্তু এটি আবার কমে ৭০-৯০ টাকার মধ্যে আসে। কিন্তু তা খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। দ্রæতই আবার ১০০ টাকা, পরের ধাপে ১১০ টাকা এবং সব শেষে গতকাল ১৪৫ টাকায় উঠে আসে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানি করা হলেও দাম বাড়ার নৈরাজ্য আর ঠেকানো যাচ্ছে না।###