ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির নলছিটি সুবিদপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জুয়েল (২৬) কে ঘর থেকে ডেকে অস্ত্র ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতনের পর গুম করার অভিযোগ উঠেছে একই সংগঠনের সভাপতি-সেক্রেটারীর বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে সাড়ে ৭টার দিকে তাকে তুলে নেয়ার পর থেকে অদ্য পর্যন্ত ছেলের কোন হদিস পাচ্ছেনা বলে তার মা মুকুল বেগম অভিযোগ করেছে। এঘটনায় রবিবার সকালে জুয়েলের মা নলছিটি থানায় গেলে থানা চত্বরে উপস্থিত ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি সিফাত হাং ও সেক্রেটারী তরিকুল ইসলাম তারিয়ে দেয়। নিরুপায় হয়ে পুত্রের সন্ধানে রবিবার দুপুর ১টার দিকে মুকুল বেগম ঝালকাঠি পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হলে দেখা নাপেয়ে একটি ফোন নাম্বার দিয়ে কোন অভিযোগ থাকলে তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে বললে। এ অবস্থায় সেখান থেকে রাস্তায় বেড়িয়ে কাদতে কাদতে হেটে যাওয়ার সময় কয়েকজন সাংবাদিকের সাথে দেখা হলে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ জানিয়ে পুত্রকে ফিরে পেতে আহাজারী করেন।
নিখোজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জুয়েলের মা মুকুল বেগম জানায়, কয়েকদিন ধরে সিফাত ও তরিকুল তাদের ঘেরের মাছ আমার ছেলে জুয়েল বীষ দিয়ে মেরেছে অভিযোগ তুলে দুই লক্ষ টাকা দাবী করে আসছে। সেই টাকার জন্যই শনিবার রাতে অন্য লোক দিয়ে আমার ছেলে জুয়েলেকে ঘরের সামনে ডাকে। সে ঘরের সামনে বেরুতেই সিফাত, তরিকুল, তার ভাই নৌবাহিনীতে চাকুরীরত অভি, তারেক, ইউনুসসহ ১০/১২জন অস্ত্র ঠেকিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যায় এবং মজিদ সিকদারের বাড়ীর পাশের একটি পুরাতন স্কুল ঘরের কাছে নিয়ে বেধরক মারধর করে। এক পর্যায় রাত আনু: ৯টার দিকে জুয়েল ওদের হাত থেকে ছুটে মোবাইলে ফোন করে মা আমাকে বাচাও, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে, আমি ওসি স্যারকেও ফোন করেছি বলেই ফোন কেটে যায়। এরপর থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত সারাগ্রাম খুজে ছেলে সন্ধান না পেয়ে নলছিটি থানায় গিয়েও ভিরতে না পেরে পুলিশ সুপারের কাছে সাহায্যের আশায় আসি।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি সিফাত ও সেক্রেটারী তরিকুল জানায়, তরিকুলে বেশ কয়েকটি মাছে ঘের আছে এবং গত ৬এপ্রিলকে বা কারা তার একটি মাছেরঘেরে বীষ দিয়ে মাছমেরেফেলছে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি ডিজি করেন। তখন ওসি সাহেবের পরামর্শ অনুযায় তারা পাহারাদার নিয়োগ করলে শনিবার রাতে তাদেরঘেরের কাছে অজ্ঞাতলোকজনঘোরাফেরা করলে তারা দাওয়া করে ওফোন করে তাদেরকে জানায়। এসময় নলবুনিয়া গ্রামেমোল্লারহাট ক্যাম্পের পুলিশের এএসআই নজরুলও সেখানে থাকে তাকে নিয়েঘেরের কাছে এসেখোজাখুজি করে কাউকে না পেলেও এএসআই নজরুলঘেরের পাশে পরিত্যাক্ত ১টি মোবাইল ফোন ও ১টি বীষের বোতল পায়। তিনি তাৎক্ষনিক বিষয়টি ওসিকে জানায় এবং আজ সকালে তারা মোবাইল ও বীষের বোতল নিয়ে থানায়গেলে তখন জুয়েলের মাও তার ছেলেকে খুজে পাচ্ছেনা অভিযোগ নিয়ে আসে। আসলে অপকর্মের দায় এড়াতে জুয়েল আত্মগোপন করে গুমের নাটক করছে। আমরা তাকে মারধর বা গুম কোন ঘটনার সাথেই জড়িত নই।
এ ব্যাপারে নলছিটি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখায়ত হোসেন বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। তবে নিখোঁজ বা খুজে পাওয়া যায় না এটা সঠিক নয়। কারন জুয়েল রাতে আমাকে ফোন দিছে। হয়তো এখন কোন আত্মীয়র বাড়ীতে আতœগোপন করে আছে। তবে তার প্রতিপক্ষরা জানিয়েছে জুয়েল নাকি বিষ নিয়ে পুকিরের মাছ মারতে গেছিলো তখন তাকে ধাওয়া করায় দেওয়ায় দৌড়ে পালিয়ে যায়। তবে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যাবস্থা নিবো। অপরাধী যে হউক আইনের আওতায় আনা হবে।