ঝালকাঠির কির্ত্তীপাশা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মলেন
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার :
ঝালকাঠি সদর উপজেলার কির্ত্তীপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস শুক্কুর মোল্লার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৮ অক্টোবর ঝালকাঠি সদর উপজেলার কির্ত্তীপাশা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামে চয়ারম্যান আব্দুস শুক্কুর মোল্লার নেতৃত্বে একই এলাকার মানিক লাল (পিন্টু) মন্ডলের ছেলে প্রিন্স মন্ডলের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী প্রিন্স মন্ডল। এসময় হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রিন্স মন্ডল ও তার সাথে থাকা বন্ধুদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। বিষয়টি নিয়ে ঝালকাঠি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশ তাদের অভিযোগ নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন প্রিন্স মন্ডল। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে প্রিন্স মন্ডল এমন অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে প্রিন্স মন্ডল বলেন, শারীদীয় দূর্গা পূর্জা উপলক্ষে একটি জমি ক্রয়ের জন্য তিনি বাড়ীতে যান। গত ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে বিজয় দশমী ও জমি ক্রয়ের বায়নাপত্র করার জন্য ঝালকাঠির উদ্যেশে রওনা দেন। দুপুর ২টার দিকে কির্ত্তীপাশা বাজারে আব্দুস শুক্কুর মোল্লা ও তার ছেলে মাদক ব্যবসায়ী রেভেল মোল্লা দেশীয় অস্ত্র সহ আমার উপর হামলা চালায়। এসময় আমার সাথে থাকা তিন চার জন বন্ধু ও ছোট ভাই দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে গুরুত্বর আহত হয়। হামলার সময় চেয়ারম্যান ও তার ছেলে এবং তাদের সাথে থাকা অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা আমার সাথে থাকা নগদ ৭ লক্ষ টাকা, মানি ব্যাগ, স্বর্নের আংটি সহ আরো প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে আমরা ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানে বসে পুনরায় আমাদের উপর হামলা চালায় তারা। এবং তারা বলে বাংলাদেশে থাকতে হলে আমাদের কথা শুনতে হবে আর তা না হলে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, দির্ঘ দেড় বছর পূর্বে কির্ত্তীপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস শুক্কুর মোল্লা ডুমুরিয়া গ্রামের বেপারী বাড়ীতে সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা চালায়। এসময় বেপারী বাড়ীর বেশ কয়েকটি বাড়ী হামলার স্বিকার হয়। এছাড়াও এই চেয়ারম্যান বেপারী বাড়ীর ১৭টি হিন্দু পরিবারের ১৫ একর জমি অবৈধভাবে দখল করেছে। এর মধ্যে ১ থেকে ৩টি পরিবারকে ভারত চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে । এঘটনায় ঢাকা প্রেসক্লাব ও ঝালকাঠিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। ডিসি ও এসপি বরাবর স্মারকলীপি প্রদান করা হয়েছে।
বেপারী বাড়ীর হিন্দু পরিবারের উপর হামলার বিষয়ে ভুক্তভোগী বেপারী বাড়ীর অনিল বেপারীর ছেলে অনিমেশ বেপারী বলেন, দির্ঘ দেড় বছর পূর্বে চেয়ারম্যান শুক্কুর মোল্লা আমাদের বাড়ীতে হামলা ভাংচুর করে। এতে আমি ও আমার বাবা , আমার মা সেলি রানী বেপারী আহত হন। এছাড়াও আমার কাকা ইন্দ্র, বিশ্বজিৎ ও সুজন গুরুত্বর আহত হয়।
অভিযোগের বিষয়ে কির্ত্তীপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস শুক্কুর মোল্লা বলেন, অভিযোগকারী প্রিন্স মন্ডল দির্ঘ দিন দেশের বাড়ীতে আসেনা। তার সাথে আমার কোন বিরোধ নেই। সে এলাকায় নেই। তারা এলাকায় অপকর্ম করে এখন এলাকাছাড়া। আপনারা ঝালকাঠিতে আসেন যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেখানকার মানুষকে জিজ্ঞেস করেন । তাছাড়া বন্ধের দিন ৭লক্ষ টাকা নিয়ে সে কিশেসর জমি বায়না করতে গেছে সেবিষয়টি খতিয়ে দেখুন। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে তা কোনটি সত্য না। দেশে আইন আছে , হামলা করলে পুলিশ প্রশাসন জানবে। আমি বা আমার ছেলে এই ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানিনা।
এবিষয়ে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক খান সাইফুল্লা পনির বলেন গত ৮ অক্টোবরের ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। আর প্রিন্স মন্ডল জমি কেনার বিষয়ে যে ৭ লক্ষ টাকার কথা বলেছে সেস ওই ৭ লক্ষ টাকা পাবে কোথায় ? তাছারা এই বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আর দেড় বছর পূর্বে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে চেয়ারম্যানের জমি নিয়ে একটা ঝামেলা ছিলো। কিন্তু হামলার বিষয়ে আমার জানানেই। চেয়ারম্যান বলেছে ওই জমি ওনার কেনা আর হিন্দুরা বলছে তাদের। এটা তদন্ত করলেই সব জানাযাবে।
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রিন্স মন্ডলের প্রতিবেশী সুমন বরাত, বন্ধু সুমন হাওলাদার, ও হামলার স্বিকার অনিমেশ বেপারী।