ত্রাণ দেওয়ার জন্য লোকজন ডেকে এনে ছবি তোলার পর ত্রাণ কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে। এবার এ অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
আজ রোববার বিকেলে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত আলাদা দুটি চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
প্রথম চিঠিতে বলা হয়, ‘যেহেতু চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার ৩নং মির্জাপুর ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বরাদ্দকৃত চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাটহাজারী কর্তৃক প্রমাণিত হয়েছে এবং জেলা প্রশাসক স্থানীয় সরকার আইন, ২০০৯ এর ৩৪ (৪)(খ)(ঘ) অনুযায়ী উক্ত চেয়ারম্যানকে স্বীয় পদ থেকে বরখাস্তের সুপারিশ করেছেন। সেহেতু বর্ণিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার ৩নং মির্জাপুর ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছারকে স্থানীয় সরকার আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) অনুযায়ী তার স্বীয় পদ থেকে অপসারণ করা হলো।’
অপর চিঠিতে নুরুল আবছারকে কেন চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে না তা ১০ দিনের মধ্যে তা জানাতে বলা হয়েছে।
গত সোমবার মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে ত্রাণ দিয়ে ছবি তোলার পর কয়েকজনের ত্রাণ চেয়ারম্যান নুরুল আবছার কেড়ে নেন বলে অভিযোগ ওঠে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, ৬ এপ্রিল সকালে ত্রাণ দেওয়ার কথা বলে চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যান। ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার পর চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ও তার লোকজন ত্রাণ দেওয়ার কথা বলে ছবি তোলেন। ছবি তোলার পর চেয়ারম্যানের ছোট ভাই মিজানুর রহমান টিপু ও তার লোকজন তাদের দেওয়া ত্রাণগুলো কেড়ে নেন। কয়েকজন এর প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের মারধর করে। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানান তারা।
ঘটনার পর দিন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন বলেন, ‘৬ এপ্রিল বিকাল ৩টার দিকে, তখন আমি বাসায় অবস্থান করছিলাম। তখন শুনলাম বেশ কয়েকজন লোক আমার কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে আছে। খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে যাই, পরে তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা জানায়, মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাদের বেলা ১১টার দিকে ত্রাণ দেবে বলে ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে তাদেরকে ২টা পর্যন্ত বসিয়ে রাখার পর বলা হয় ত্রাণ দেওয়া হবে না। তখন তারা বলে আমাদের ত্রাণ দিতে হবে, না হয় আমরা যাব না। এরপর তারা না যেতে চাইলে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন তাদেরকে মারধর করে বলে তারা অভিযোগ করেন।’
তিনি বলেন, ‘এরপর আমি তাদের উপজেলার তহবিল থেকে খাদ্যসামগ্রী প্রদান করি। পাশাপাশি এই ঘটনা কেন সংগঠিত হয়েছে, এই ঘটনায় কারা দায়ী সেই বিষয়ে বক্তব্য চেয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছি।’