বরগুনা প্রতিনিধি : ঘুষ ছাড়া কথাই বলেন না তিনি, এমনকি ১০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেন। আর ঘুষের টাকা আদায়ের হিসাবনিকাশ রাখতে টেবিলের ড্রয়ারে টালিখাতাও রয়েছে তার। বরগুনা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের এমনই এক কর্মচারীর নাম দুলাল বাবু। তার মূল নাম দুলাল কৃষ্ণ মালাকার। চাকরি করেন উচ্চমান সহকারী পদে। বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এম এম মিজানুর রহমান বলেন, সোমবার (২৯ আগস্ট) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মুহিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বরখাস্তের তথ্য জানানো হয়। মঙ্গলবার আমরা আদেশটি হাতে পেয়েছি। বরগুনা সদর উপজেলার সব প্রাথমিক শিক্ষক, এমনকি শিক্ষা কর্মকর্তা পর্যন্ত জিম্মি দুলালের কাছে। বিল-ভাতার হয়রানি থেকে শুরু করে বদলি পর্যন্ত হাত এই দুলালের, এমনই অভিযোগ স্থানীয় শিক্ষকদের। গত ৩০ জুলাই বরগুনা সদর উপজেলার ৪১ জন শিক্ষক একযোগে সুনির্দিষ্ট ছয়টি লিখিত অভিযোগ দেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে।
বিজ্ঞাপন
পরে বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। পরবর্তীতে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। অফিস আদেশে বলা হয়েছে, বরগুনা সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী দুলাল কৃষ্ণ মালাকার ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের জেলা হিসাব রক্ষণ অফিস বরগুনা কর্তৃক ইস্যুকৃত বিভিন্ন খাতের আটচল্লিশটি চেকে মোট বরাদ্দকৃত প্রায় এক কোটি আটান্ন লাখ একুশ হাজার পাঁচশত এক টাকার চেক ব্যাংকের নির্ধারিত (২৬ জুলাই ২০২২) সময়ের মধ্যে জমা দিতে ব্যর্থ হন এবং চেকগুলো তিনি নিজস্ব ড্রয়ারে ফেলে রাখার ফলে উক্ত চেকগুলো তামাদি হয়ে যায়। এতে করে শিক্ষকরা তাদের বকেয়া ও প্রাপ্তি বিনোদন ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরগুনা কর্তৃক তদন্তে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। উপরোক্ত কর্মকাণ্ডে তাকে (দুলাল কৃষ্ণ মালাকার) সরকারি চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।