নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইল পৌরসভার ক্ষমতাধর হিসাবরক্ষক সাইফুজ্জামানের বদলি এবং পরবর্তীতে বদলি আদেশ স্থগিত নিয়ে আলোচনা চলছে সপ্তাহ জুড়ে। মন্ত্রণালয় থেকে বদলি আদেশ দিলেও বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে তা স্থগিত করান তিনি। একবার নয়, দুই দফায় এসেছিল বদলি আদেশ। তবে এবার স্ট্যান্ড রিলিজের নির্দেশ দিয়েঠেন মন্ত্রণালয়। গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এ আদেশপত্রে এ তথ্য জানা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১ মার্চ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে সাইফুজ্জামানকে টাঙ্গাইলের বাসাইল পৌরসভায় বদলির আদেশ প্রদান করা হয়। এরই মধ্যে গুঞ্জণ ওঠে বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ওই বদলি স্থগিত করেছেন। হিসাবরক্ষক সাইফুজ্জামান বদলি আদেশ স্থগিতের বিষয়টি স্বীকার করেন।
বদলির ব্যাপারে নড়াইল পৌরসভার হিসাবরক্ষক সাইফুজ্জামান বলেছিলেন, বদলি একটা হইছিলো কিন্ত সেটা স্থগিত হয়েছে আশা করা যায়। কোন প্রক্রিয়ার বাতিল হলো? এই প্রশ্নের জবাবে সাইফুজ্জামান বলেন, এটা পরে বলি, আপাতত মেয়র চাচ্ছেন না তাই বদলি ঠেকে যাচ্ছে।
তবে আজ দুপুরে হিসাবরক্ষক সাইফুজ্জামানের সঙ্গে কথা বললে তিনি স্ট্যান্ড রিলিজের কথা স্বীকার করেন।
জানা গেছে, গত ১ মার্চ বদলি আদেশ আসার পরেও হিসাবরক্ষক সাইফুজ্জামান গতকাল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত পৌরসভার নিয়মিত কাজ করেন। গত ৪ মার্চ পৌরসভা নিয়মিত পরিদর্শনে যান নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালন ইয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমার কাছে এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।
এদিকে গতকাল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত দ্বিতীয় দফা প্রেরিত পত্রে ১৫ মার্চের মধ্য সাইফুজ্জামানকে টাঙ্গাইলের বাসাইল পৌরসভায় বদলির আদেশ প্রদান করা হয়েছে। অন্যথায় ১৬ মার্চ থেকে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ ঘোষণা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, হিসাবরক্ষক সাইফুজ্জামান ১৯৯৭ সালে হিসাব সহকারী হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৩ সালে সহকারী হিসাবরক্ষক এবং ২০০৮ সালে হিসাবরক্ষক হিসেবে প্রায় ২৫ বছর ধরে নড়াইল পৌরসভায় চাকরি করছেন। প্রভাবশালী এই হিসাবরক্ষকের অর্থে নড়াইল পৌরসভার চলমান অন্তত ১১টি ঠিকাদারী কাজ পরিচালিত হচ্ছে। এ ছাড়া নড়াইলে তার বাড়ি আউড়িয়ায় অন্তত ১০০ একর জমিসহ নড়াইলে তিনটি বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়ও শ্বশুরবাড়ি ঝিনাইদহে শাশুড়ি এবং স্ত্রীর নামে বাড়ি এবং জমি রয়েছে। নিজের ভাগ্নে, শ্যালকসহ পরিবারের পাঁচজনকে পৌরসভায় চাকরি দিয়েছেন তিনি।