বিশেষ প্রতিবেদন : বরিশাল বিভাগীয় সমবায় অফিসের বিভাগীয় কর্মকর্তা উপ-নিবন্ধক মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে বিএনপি -জামানপন্থি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। একই সাথে স্বাধিনতা স্বপক্ষের ও আওয়ামীলীগ সমর্থক কর্মকর্তা কর্মচারীদের কে হয়রানী করছেন। এছাড়া তিনি একজন বিতর্কিত সমবায় কর্মকর্তা।
সম্প্রতি মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে এক সমবায়ী লিখিত অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয় উপ-নিবন্ধক মশিউর রহমান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর একজন কঠোর সমালোচক এবং জাতির জনককে নিয়ে ব্যঙ্গ করে থাকেন তিনি ।
মশিউর রহমান জামায়াতের অর্থায়নে লেখাপড়া করায় তিনি জামায়াতের একজন কঠোর অনুসারী। যশোর জামায়াতের একজন উপদেষ্টা। যশোর সহ বিভিন্ন স্থানে জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের প্রোগ্রামে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন। তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা আঞ্চলিক সমবায় ইনস্টিটিউটে অধ্যক্ষের বাসভবনে দীর্ঘদিন যাবৎ কর্তৃপক্ষের বিনানুমতিতে বসবাস করেন। কিন্তু সরকারি নিয়ামানুযায়ী ভাড়া পরিশোধ করেন না।
এ ব্যাপারে যুগ্ম নিবন্ধক, জনাব নুরুজ্জামানের নিকট তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করা হলে অদ্যাবধি পর্যন্ত তথ্য প্রদান করেননি। এছাড়া বরিশাল শের-ই-বাংলা আঞ্চলিক সমবায় ইনস্টিটিউটে সমবায়ীদের খাবারে ভাগ বসান। ফ্রি খানাপিনা করেন অথচ খাবারের অর্থ পরিশোধ করেন না। এ ব্যাপারে বরিশাল শের-ই-বাংলা আঞ্চলিক সমবায় ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ বরাবর তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করা হইলেও অদ্যাবধি তথ্য প্রদান করেননি। মশিউর রহমান বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সমবায় দপ্তর পরিদর্শন করে এবং গ্রুপিং সৃৃষ্টি করে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হয়রানী করে অর্থ আদায় করেন।
মশিউর রহমান অত্যান্ত কুটকৌশলী। তিনি দম্ভ করে বলেন আমি ঘুষ খাইনা, আমাকে বাধ্য হয়ে ঘুষ দিয়ে যায়। সমবায় দপ্তরগুলোতে ত্রুটি-বিচ্যুতি খুজে বের করে মোট অংকের ঘুষ আদায় করেন কর্মচারীদের জিম্মি করে। জেলা ও উপজেলা সমবায় অফিস ও সমবায় সমিতি পরিদর্শনের সময় মশিউর তার নিজস্ব অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়া সরকারি গাড়ীতে আনন্দ ভ্রমণ করেন। এতে একেক সমবায় দপ্তরের ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ হয়।
মশিউর রহমান উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়াই বরিশাল বিভাগীয় অফিসের গাড়ি নিয়ে সরকারি তেল ব্যবহার করে যশোরে থাকা তার বাসায় যাওয়া আসা করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বরিশাল সমবায় বিভাগীয় দপ্তরের ১২ লাখ টাকার মালামাল ক্রয়ের নামে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সরকারি টাকা আত্মসাৎ করে যশোরে বিলাসবহুল বাড়ি, জমি, খুলনা, ঢাকা ও রংপুরে জমি প্লট, বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআরসহ নিজ আত্মীয় স্বজনদের নামে তিনি সহায় সম্পদ অর্জন করেছেন অবৈধ পন্থায়।
সমবায় অধিদপ্তরের যুগ্ম নিবন্ধক মৃনাল কান্তি বিশ্বাসের নাম ব্যবহার করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। মশিউর রহমান বলেন, মৃনাল কান্তি বিশ্বাস মিঠু আমার বন্ধু ও ব্যাচমেট। আমি যা বলব, তিনি সেটাই করবেন। মশিউর রহমান জামায়াত-বিএনপি’র সমর্থক কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনৈতিক সুবিধা প্রদান করেন এবং স্বাধীনতা স্বপক্ষের এবং আওয়ামীলীগ সমর্থক কর্মকর্তা- কর্মচারীদের হয়রানী করেন।
গত ১২-১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ইং তারিখ বরিশাল এ আরেক দুর্নীতিবাজ অফিসার মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য যুগ্ম নিবন্ধক মৃনাল কান্তি বিশ্বাস আগমন করলে তাকে নিয়ে মশিউর রহমান কুয়াকাটা ভ্রমণ করেন। তিনি পর্যটন কর্পোরেশনের পর্যটক মোটেলে থাকার ব্যবস্থা করেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জামাতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা যারা বার বার আটক হয়েছেন তাদের পাশে আসন গ্রহন করতে দেখা গেছে মশিুর রহমানকে। এ রকম ছবি রয়েছে প্রতিবেদকের হাতে। সমবায়ী নাজমুল হক লিখিত আবেদনে মোঃ মশিউর রহমানকে বরিশাল থেকে প্রত্যাহার এবং তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বরিশাল বিভাগীয় সমবায় অফিসের যোগাযোগ করা হলে অফিস থেকে জানানো হয় মশিউর রহমান পিরোজপুরে রয়েছেন। তিনি পিরোজপুর থাকায় তার বক্তব্য গ্রহন করা সম্ভব হয়নি।