সাব্বির আলম বাবু, ভোলা:
উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলায় চুরি ও ছিনতাই বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিন জেলার কোথাও না কোথাও চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। ভোলার দৌলতখান উপজেলার বাংলাবাজার হালিমা খাতুন মহিলা কলেজ সংলগ্ন রোডে শান্ত নামের এক রিকসা চালক যুবককে কুপিয়ে জখম করেছে ছিনতাইকারীরা। পরে রিক্সায় থাকা ছিনতাইকারীরা যুবকের রিক্সা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় রিক্সাচালক শান্ত বাধাঁ দিলে তার গলায় ছুরিকাঘাত করা হয়। তার ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে পরে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যান বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাবাজার পুলিশ ফাঁড়ি’র তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে পথচারীদের সহায়তায় দ্রুত ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। আহত রিক্সাচালক শান্ত দৌলতখান সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের রফিকুল ইসলামের ছেলে।
আহতের মামা মোঃ ফরহাদ মাষ্টার বলেন, আমার ভাগিনা মোঃ শান্ত প্রতিদিনের মতোই রিযিকের সন্ধানে রিক্সা নিয়ে বের হয়েছে পরিবারের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দেওয়ার জন্য। ছিনতাইকারীরা তার রিক্সাটি জোর পূর্বক নিয়ে যেতে চাইলে সে চিৎকার করলে তার গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে। যার ফলে তার গলার বেশির ভাগ অংশ কেটে যায়। আমি ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করছি। দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) মো. বজলার রহমান জানান, ছিনতাইকারীকে ধরতে পুলিশ অভিযানে নেমেছে। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। ভোলা সদর উপজেলার যুগিরঘোল এলাকার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে থেকে মিজানুর রহমান নামের এক প্রতিবন্ধী রিক্সা চালকের ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা চুরি হয়েছে। রিক্সার মালিক মিজানুর রহমানের বাড়ি বোরহান উদ্দিন উপজেলার হাসান নগর ইউনিয়ের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি বোরহানউদ্দিন থেকে যাত্রী নিয়ে যুগিরঘোল এলাকায় এসেছিলেন। দুপুরে ওই চালক ঈদগাহ মসজিদে জোহরের নামাজ আদায়ের জন্য গিয়ে নামাজ শেষ করে এসে দেখেন তার রিক্সাটি আর নেই। এ ব্যাপারে ভোলা সদর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোলা সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ এনায়েত হোসেন জানাম, এ ঘটনায় তদন্ত চলমান রয়েছে এবং চোরকে ধরার সকল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে ভোলা সরকারি কলেজের সমাজ কর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো: হাবিবুল আহসান বলেন, করোনার কারনে মানুষ বেকার হয়ে পড়ায় ভোলায় চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে। অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে সামাজিক অস্থিরতার পাশাপাশি অপরাধ বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। হাবিবুল বহসান আরও বলেন, করোনা মহামারীর এ সময় অনেকে চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে। ফলে তারা বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ড তথা চুরি, ডাকাতি সহ নানাবিধ অপরাধে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে সামাজিক অস্থিরতা, দারিদ্র্য ও মূল্যবোধের অবক্ষয় বৃদ্ধি পাবে। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ও ক্রমাগত দুশ্চিন্তা এবং হতাশা বৃদ্ধি পাচ্ছে এর জন্য অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। এ ব্যাপারে ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মোঃ কায়সার আহমেদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।