জন্ম ও পারিবারিক পরিচয়ঃ শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার মধুমতী নদীর তীরবর্তী টঙ্গীপাড়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ লুৎফর রহমান ও মাতা সাহেরা খাতুনের ছয় সন্তানের মাঝে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তৃতীয়। দুরন্তপনা শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশব কেটেছে তাঁর নিজেরই গ্রামে,অন্য সব সাধারণ ছেলেদের মতো হেসে খেলে।

শিক্ষা জীবনে শেখ মুজিবঃ শেখ মুজিবুর রহমানকে মাত্র ৭ বছর বয়সেই গ্রামের গিমাডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়, এর কিছুদিন পর তাকে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি করানো হয় কিন্তু এখানে তিনি বেশিদিন পড়াশোনা   করেন নি।  পাবলিক স্কুল থেকে মিশনারি স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন।  পড়াশোনা চলাকালে বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হলে প্রায় চার বছর পড়াশোনা থেকে দূরে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৩৭ সালের দিকে আবার এই মিশনারী স্কুলেই ভর্তি হন এবং ১৯৪২ সালে এন্ট্রান্স বা প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করেন। প্রবেশিকা পরিক্ষা পাশের পর তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন এবং বেকার হোস্টেলে বসবাস শুরু করেন। ১৯৪৪ সালে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাশ করেন। শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন।  পড়াশোনা সমাপ্তি  না করেই প্রতিবাদী মুজিবকে ছাত্রজীবনের ইতি টানতে হয়। ১৯৪৯ সালের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলনে সমর্থন ও নেতৃত্বদানকে কেন্দ্র করে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তী ৬১ বছর পর ২০১০ সালের ১৪ আগষ্ট  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়।

যুবক শেখ মুজিবঃ রাজনীতি জীবন শুরু করার পূর্ব  থেকেই যুবক শেখ মুজিব বিভিন্ন অন্যায় অবিচারের সাথে আপোষ করেন নি। নিজ গ্রামের মানুষের দুঃখ দেখে নিজের মনের ভিতর কষ্ট অনুভব করতেন।  অনাহারী মানুষের মুখে নিজের খাবার তুলে দিয়েছেন, শীতার্ত মানুষকে নিজের গায়ের চাদর দান করেছেন এমন নজীরও অনেক।

সবসময়ই ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতেন,অন্যায় যত-শক্তিশালীই হোক না কেন শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রতিবাদ করতে বিন্দু পরিমানও বিচলিত হতেন না। পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে পদার্পন করেই বাঙ্গালি জাতীর মুক্তি তথা অধিকার পুনরুদ্ধার করার জন্য মননিবেশ করেন।

বৈবাহিক জীবনে মুজিবঃ মাত্র ১৯ বছর বয়সে ১৯৩৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমান শেখ ফজিলাতুন্নেছাকে বিয়ে করেন। শেখ মুজিব ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা দম্পত্তির তিন ছেলে ও দুই মেয়ে যথা শেখ কামাল,শেখ জামাল ও শেখ রাসেল এবং শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা

রাজনৈতিক জীবনে শেখ মুজিবঃ ছাত্রজীবন থেকেই শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন রাজনীতি সচেতন মানুষ,তিনি বিশ্বাস করতেন যে রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমেই বৃহৎ আকারে মানুষের কল্যান করা যাবে। তাইতো এই দেশের সকল রাজনৈতিক আন্দোলনে তিনি অগ্রভাবে ছিলেন। মিশনারী স্কুলে পড়াশোনা করার সময়ই ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার জন্য সাত দিন কারাভোগ করেন।

নেতৃত্ব দেওয়ার গুণ থাকার কারনেই ১৯৪৬ সালে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন।

১১ মার্চ ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের পিকেটিং এর সময়ে গ্রেফতার হন।

১৯৪৯ সালে মাওলানা ভাসানীর সাথে ভূখা মিছিলে নেতৃত্বদান কালে গ্রেফতার হন।

১৯৪৯ সালের ২৩  জুন আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্ম হলে কারাগারে থাকাকালীন সময়েই তিনি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৫৩ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৬৬ সালের ২৩ মার্চ পাকিস্তানের লাহোরে বাঙালির মুক্তিসনদ ছয় দফা উত্থাপন করেন।

১৯৬৮ সালে আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলায় আবার গ্রেফতার হন।

১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতে সর্বশেষ তিনি আবার গ্রেফতার হন।  শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর জীবনের বৃহৎ একটি অংশ মিথ্যা মামালায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে কাটান। রাজনীতি জীবনে তাঁর রয়েছে বিশেষ বিশেষ অবদান,

ভাষা আন্দোলনঃ ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন আইন পরিষদে পূর্ব পাকিস্তানের জনগন উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে মেনে নিবে বলে ঘোষণা দিলে শেখ মুজিবুর রহমান তাৎক্ষণিক ভাবে এই ঘোষণার প্রতিবাদ জানান এবং ২ মার্চ ফজলুর হক মুসলিম হলে ভাষার প্রশ্নে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে সেখানে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রস্তাবক্রমে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। এই রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বেই পরবর্তী সময়ে বাংলা ভাষার দাবীতে হরতাল পরিচালিত হয়। বাংলা কে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে কারাগারের ভিতরেই তিনি অনশন শুরু করেন এবং ২১শে ফেব্রুয়ারী ছাত্র জনতা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাজধানীতে মিছিল করেন, মিছিলে পুলিশের গুলিতে সালাম,রফিক, শফিউর, জব্বারসহ অনেকেই শহীদ হন। শেখ মুজিবুর রহমান জেলে বসে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং ১৩ দিন অনশন অব্যাহত রাখেন। তারপর ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি জেলখানা থেকে মুক্তি লাভ করেন।

মুক্তিসনদ ৬ দফাঃ ১৯৬৬ সালের ২৩ মার্চ তিনি লাহোরে ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করেন, যা পরবর্তী সময়ে বাঙ্গালী জাতির মু্ক্তির সনদ হিসেবে পরিগনিত হয়।

গনঅভ্যুত্থানঃ ১৯৬৯ সালের ৫ জানুয়ারি ৬ দফাসহ ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় এবং তারা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আটক শেখ মুজিবুর রহমান সহ অনান্য আসামীদের মুক্তির দাবীতে দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু করে। এক পর্যায়ে আন্দোলন গনঅভ্যুত্থানে রুপ নিলে সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পত্যাহার করে নেই। এছাড়াও ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান অনস্বীকার্য।

শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধুঃ বাংলার গনমানুষের নেতা ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন কারাগারে।নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে তিনি শুধু নিঃসার্থভাবে  জনকল্যান মূলক কাজ করেছেন। বাংলার জনগনকে তিনি যেমন ভালোবাসতেন এই দেশের জনগনও তাকে হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসতো। তাঁর  মুক্তির জন্য রাজপথে বিশাল মিছিল হতো, ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ করতো, অনশন করতো। শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এদেশের জনগনের প্রকৃতি বন্ধু। তিনি যে এই দেশের গণমানুষের নেতা ছিলেন এরই স্বীকৃতি স্বরুপ তৎকালীন ঢাকসুর ভিপি তোফায়েল আহমেদ ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমান কে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন। তিনি যে আসলেই জনগনের বন্ধু ছিলেন তারই প্রমাণ পাওয়া যায় পরবর্তী সময়ে,সবাই তাকে বঙ্গবন্ধু নামেই ডাকতেন।

বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতাঃ  বাঙালি জাতির কল্যানে চিন্তামগ্ন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর  শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুদিবসে  তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের নামকরণ করেন “বাংলাদেশ” নামে। এই ঘোষণায় তাকে বাঙালি জাতির পিতার ভূমিকায় অবতীর্ণ করে।তাই তো পরবর্তী সময়ে ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে ঢাকসুর ভিপি আসম আব্দুর রব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক উপাধি দেন।

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণঃ  ৭ মার্চ ১৯৭১, ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বাংলার আবালবৃদ্ধবনিতা, শিক্ষক, ছাত্র, শ্রমিক,কৃষকসহ বাংলার মেহনতি মানুষ অপেক্ষার পহর গুনছেন, কখন আসবেন কবি,শুনাবেন তাঁর কবিতা, অবশেষে আসলেন কবি, উচ্চারণ করলেন তাঁর দারাজ কন্ঠে, ভাইয়েরা আমার= রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো,তবু এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।

মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুঃ  ৭ মার্চের ভাষণের পরেই ধারণা করা হয়েছিল তিনি বাংলার মানুষকে আগাম যুদ্ধে প্রস্তুতি নেবার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। ২৫ মার্চ রাতে গ্রেফতারের পূর্বেই তিনি বাংলার স্বাধীনতা ঘোষণা করেন, তিনি বলেন, This is my last massage to you.From today Bangladesh is independent. তাঁর ডাকে তখন সমগ্র  বাঙালি মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী  যুদ্ধের পর আমরা পায় লাল সবুজের একটি স্বাধীন পতাকা।

রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শেখ মুজিবঃ শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের মন্ত্রীসভায় সমবায়,কৃষি,ও বন বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এরপরে শ্রম,শিল্প ও দুর্নীতি দমন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।  সর্বশেষ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতার ভিত্তিতে তিনি পার্লামেন্টারি দলের নেতা নির্বাচিত হলেও ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা হস্তান্তর না করতে চাইলে এর পরিপ্রেক্ষিতেই মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি প্রথম রাষ্ট্রপ্রতি নির্বাচিত হন এবং পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রীরও দায়িত্ব গ্রহন করেন।

স্বদেশে প্রত্যাবর্তন ও দেশ গঠনে মনোনিবেশঃ  মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে দীর্ঘ ৯ মাস  পাকিস্তানের করাচির মিওয়ালী কারাগারে বন্দি থাকার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি  স্বদেশ তথা স্বাধীন বাংলায় পদার্পন করেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, বাংলার রাখার রাজা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত লোকে লোকারন্য হয়ে যায়,বাংলার কোটি কোটি মানুষ রাস্তায় নেমে আসে তাদের প্রিয় নেতাকে এক নজর দেখার জন্য। লাখো মানুষকে ঢল বেয়ে নেতা আসলেন চিরচেনা সেই  রেসকোর্স ময়দানে, ঘোষণা দিলেন দেশ গড়ার। ছুটে বেড়িয়েছেন বাংলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তরে।  সাহায্য চেয়েছেন আন্তর্জাতিক মহলের, স্বপ্ন দেখেছেন ক্ষুদা,দারিদ্র্য, শোষন মুক্ত এক সুখি বাংলাদেশের,যেখানে সবাই সুখে শাম্তিতে বসবাস করতে পারবে। আর এ জন্য জীবনের শেষ বেলা  পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন পিতা মুজিব।

আন্তর্জাতিক মহলে পিতা মুজিবঃ ভারতীয় উপমহাদেশে অন্যতম প্রভাবশালী নেতা তথা বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অত্যান্ত স্পষ্টভাষী মানুষ। দেশের সিমানা পেরিয়ে তাঁর প্রশংসা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। তিনি ১৯৭২ সালে বিশ্বশান্তি পরিষদের দেওয়া সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘জুলিও কুরী’ পুরুষ্কার লাভ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ প্রদান করেন। কিউবার নেতা ফিদেল কাস্ত্রো শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যাক্তিত্বকে হিমালয় পর্বতমালার সাথে তুলনা করেছেন,তিনি বলেন আমি হিমালয় দেখিনি, শেখ মুজিবুর রহমান কে দেখেছি। বিখ্যাত লেখক ডেভিড লুডেন ফ্রন্টলাইন সাময়িকীর একটি প্রবন্ধে শেখ মুজিবুর রহমানকে “ফরগটেন হিরো” বলে উল্লেখ করেছেন।

২০১৭ সালের ৩০ শে অক্টোবর, ইউনেস্কো শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০১৯ সালের ১৬ আগষ্ট জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্হায়ী মিশন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে শেখ মুজিবুর রহমান কে “বিশ্ব বন্ধু” হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়।

বঙ্গবন্ধুর বিদায়ঃ ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ইতিহাসের একটি জঘন্যতম দিন। যাঁর একটি তর্জনীর ইশারায় বাংলার কোটি মানুষ জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই মহান নেতাকে কতিপয় নরপিশাচ স্বপরিবারে হত্যা করে বাংলার মাটিকে কলংকিত করেছে। বাঙালির জাতির রাখাল রাজা কোটি মানুষকে নিরবে কাদিয়ে অবেলায় বিদায় নিলেন। তাঁরই স্বপ্নের সোনার বাংলায় কতিপয় পথভ্রষ্ট সেনাবাহিনী তাঁকে হত্যার মাধ্যমে বিলীন করতে চেয়েছিল পিতার স্বপ্নকে,কিন্তু তারা সফল হয়নি, আজও পিতা মুজিবের আদর্শ ধারণ করে তাঁরই স্বপ্নসারথীরা জেগে আছে। তারা বলছে, পিতা তুমি ঘুমাও শান্তিতে,আমরা আছি তোমার স্বপ্নের সোনার বাংলা পাহারা দিতে।

শেষ কথাঃ বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ,মহানুভবতা, পর্বত সমান ব্যাক্তিত্ব তাকে বাঁচিয়ে রাখবে অনন্তকাল। পরিশেষে বলতে চাই যতদিন রবে পদ্মা, মেঘনা,গৌরি,যমুনা বহমান ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।

 

লেখকঃ মাসুম বিল্লাহ,  শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক,

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।