সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ঃ
উত্তাল আগুনমুখা নদীর তীব্র ভাঙনের কবলে পড়ে চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এটি পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চারদিকে নদীবেষ্টিত একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত দক্ষিণের উপক‚লীয় অঞ্চলের এ ইউনিয়নের বাসিন্দারা প্রতি মুহুর্তেই আতঙ্কের মাঝে দিন কাটাচ্ছেন। ভাঙনের কবলে পড়ে সহায়সম্বল হারিয়ে অনেকই নিঃস্ব হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
ইতিমধ্যে আগুনমুখার প্রবল ও অবিরাম ঢেউয়ের আঘাতে ইউনিয়নের উত্তরে গরুভাঙ্গা গ্রাম থেকে দক্ষিণে ছয়নম্বর গ্রাম পর্যন্ত চার কিলোমিটার ওয়াবদা বেঁড়িবাঁধ ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এর সাথে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে তিন শতাধিক বসতঘর, ফসলীজমি, গাছ-পালাসহ নানা জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। আতঙ্কে আছেন নদী তীরবর্তী বসবাসরত প্রায় তিন হাজার পরিবার। হুমকিতে আছে চালিতাবুনিয়া বাজার, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, আশ্রায়ণ কেন্দ্রসহ নানা স্থাপনা।
বর্ষা মৌসুমে আগ্রাসী আগুনমুখার বিশাল ঢেউয়ের আঁচড়ে পড়ার তীব্রতা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়। এর সাথে ভাঙনের তীব্রতাও বৃদ্ধি পায়। এ সময় তেজস্বী আগুনমুখা যেন বিধ্বংসী সুনামীরূপ ধারন করে। ভয়ঙ্কর এ নদীটি ভেঙ্গে তছনছ করে দেয় নদী তীরের আশপাশ এলাকা। নদী তীরে থাকা জেলে পরিবারগুলো তখন নির্ঘুম রাত কাটায়।
অচিরেই ভাঙন কবলীত এলাকায় ওয়াবদা বেঁড়িবাঁধ পুনঃনির্মাণ এবং নদী শাসন না করা হলে ভয়াল আগুনমুখার রাক্ষুসে গ্রাসে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে পাল্টে যাবে চালিতাবুনিয়ার মানচিত্র। হুমকিতে পড়বে উপকূলের মৎস্য ও কৃষি সম্পদ। নিঃশ্চিহ্ন হয়ে যাবে হাজার হাজার পরিবারের বসতঘরসহ ফসলী জমি।
চালিতাবুনিয়া ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান মু. রানা হাওলাদার জানান, খর¯্রােতা আগুনমুখার করাল গ্রাসে ও দানবীয় থাবায় রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন কার্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারটি অকেজো হয়ে নদী তীরে দাঁড়িয়ে আছে। এটি যেকোন সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। অতিদ্রæত সরকারি কোন পদক্ষেপ না নেয়া হলে হয়ত চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নটিই একদিন নদীর অতল গহŸরে তলিয়ে যাবে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মু. মাশ্ফাকুর রহমান জানান, এ সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন।