ফ্রেমবন্দী সময়গুলোকে সাজিয়ে রাখা যায় অন্দরে। ফ্রেমে রাখা ছবি সাজানো যায় নানাভাবে, নানা জায়গায়।
একটা ছবির গল্প বলি। কাঠগোলাপগাছের ছবি। প্রিয় গাছটির ছবি তুলে রেখেছিলাম। বাবার চাকরিসূত্রে বাস করতাম সরকারি বাসভবনে, নিয়মমাফিক ছেড়েও আসতে হয়েছে। জানি না আজও আছে কি না প্রিয় গাছটা সেখানে, তবে ছবিটা আজও আছে ছোট্ট একটি ফ্রেমে।
কিন্তু ছবি বাঁধাই করে ঘরের যেকোনো এক জায়গায় রেখে দিলেই কি অন্দরের সৌন্দর্যবর্ধন হয়? নিশ্চয়ই নয়। বিভিন্ন আকারের ফ্রেম সাজানো যেন সুন্দর আর ছন্দময় হয়, তবেই না ফ্রেমে আসবে নান্দনিকতা। এমনটাই বলছিলেন ‘ফারজানা’স ব্লিস্’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা গাজী। ফ্রেমে নান্দনিকতা আনতে নকশার পাঠকদের দিলেন নানা পরামর্শ।
ফ্রেম সাজানোর আগে
আসবাবের পেছনের দেয়ালে যেমন ছবি টাঙানো যায়, তেমনি কোনো কোনো আসবাবের ওপরের তলেও ছবির স্ট্যান্ড রাখতে পারেন। ঘরের একটা ফাঁকা দেয়ালও হতে পারে ছবি রাখার দারুণ জায়গা। ঘরে কলাম (উল্লম্ব স্তম্ভ) থাকলে সেখানেও ছবি টাঙানো যায়।
যেখানেই ছবি রাখুন, কতটা জায়গাজুড়ে রাখলে দৃষ্টিনন্দন হবে, তা আগে থেকে ধারণা করে নেওয়া ভালো। জানালা-দরজা প্রভৃতির জন্য জায়গা ছেড়ে শোবার ঘরে খাটের মাথার দিকটার মাঝবরাবর একটা ছবি রাখতে পারেন।
দেয়ালে একাধিক ছবি রাখার সুযোগ থাকলে বেজোড়সংখ্যক ছবি রাখুন। সব ছবি যে একই উচ্চতায় রাখতে হবে, তা কিন্তু নয়। বরং গড়পড়তা বাঙালি অনায়াসে দেখতে পারে, এমন উচ্চতার সীমার মধ্যে একটু ওপর-নিচ করে রাখুন একাধিক ছবি।
ফ্রেমের রং বেছে নিন ঘরের অন্যান্য অনুষঙ্গের রঙের সঙ্গে মিল রেখে কিংবা মানানসই বৈপরীত্য রেখে। আসবাব কাঠের হলে কাঠের ফ্রেম বেছে নিন দেয়ালের জন্য। কাঠ ছাড়া অন্য উপকরণের আসবাব হলে সেগুলোর সঙ্গে মানানসই ফ্রেম বেছে নিন। বোর্ডের ফ্রেম তৈরি করে নিতে পারেন নিজেরাই। দরকার পেইন্ট, ল্যাকার পলিশ, বার্নিশ হালকা কিংবা গাঢ় রং—যেমনই হোক আসবাব, তেমনই হোক ফ্রেম। দাঁড় করিয়ে রাখা যায়, এমন ফ্রেম নানা উপকরণেরই হতে পারে।
যেখানে যা রাখা যায়
অন্দরে যেমন পরিবারের ছবি রাখার চল আছে, তেমনি কোনো কোনো পরিবারে মানুষ বা প্রাণীর ছবি টাঙানো প্রথাবিরুদ্ধও হতে পারে। প্রকৃতির ছবি বা পেইন্টিং কিন্তু অন্দরে দারুণ মানায়। ভ্রমণের সময় তোলা ছবিও রাখতে পারেন।
অন্দরের কোনো অংশ বড় দেখাতে ফ্রেমে বাঁধানো আয়না কাজে লাগাতে পারেন। একই ফ্রেমের মধ্যে কিছু অংশে ছবি, কিছু অংশে আয়না—এ রকমও রাখতে পারেন।
ছবি, ফ্রেম—সবই নির্ভর করে আপনার পছন্দ ও অন্দরের ধরনের ওপর। তবে প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সাজাতে পারেন ফ্রেম।
বাড়ির প্রবেশমুখে, লবিতে এমন ছবি রাখতে পারেন, যা আপনার পরিবারকে উপস্থাপন করে। জুতার র্যাকের ওপর হয়তো আছে শোপিস, তার ওপর থাকল ছবি। মোমদানি, ফুলদানি, গাছ থাকতে পারে জায়গাটিতে। দেয়ালে ছবির সঙ্গে থাকতে পারে বাড়তি কিছু সাজানোর জিনিস।
ঘরের যে অংশে বসে অফিসের কাজ করা হয়, কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো ছবি রাখতে পারেন সেখানে।
শিশুর ঘরে তার উপযোগী ছবি থাকুক। তার বেড়ে ওঠার নানা সময়ের ছবি রাখা যায়।
বারান্দায় হয়তো সবুজের সমারোহ। পাশে সিরামিক বা লাল ইটের কিংবা টেরাকোটার একটুখানি দেয়াল। চাইলে সেখানে পাহাড়-বন-প্রকৃতির ছবি রাখতে পারেন।