ধর্ষণের পর খুন করে নদীতে ফেলে দেয়ার ৭ দিন পর পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার রূপারচর সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ভাসমান অবস্থায় সেই শিশু লামিয়ার (১২) অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে গভীর সাগর থেকে লাশটি তীরে আনা হয়। আইনি প্রক্রিয়া ও সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হবে বলে জানান রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি জানান, ‘রূপারচর সংলগ্ন শিবচর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের গভীর সাগর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।’
লাশ উদ্ধার অভিযানে থাকা চরমোন্তাজ পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ সজল কান্তি দাস বলেন, লাশ উদ্ধারকালে শিশুর গায়ে থাকা জামা এবং তাকে যে চাদর দিয়ে পেঁচিয়ে ফেলা হয়েছিল; সেটিও পাওয়া যায়। তবে শরীরের বিভিন্ন অংশ পচেগলে বিকৃত হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, লাশ তীরে এনেছি। পরিবার শনাক্ত করার পর ময়নাতদন্তে পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৬ই জানুয়ারি সন্ধ্যায় উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরের সাগরপাড় বাজার থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় ওই শিশু। পরদিন ৭ই জানুয়ারি দুপুরে চরআন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার একটি পুকুরপাড় থেকে তার পায়ের একটি জুতা আর বাজার থেকে কেনা নিত্যপ্রয়োজণীয় পণ্য এবং খাল সংলগ্ন বিলের মাঝে পাওয়া যায় ওড়না। নিখোঁজের এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওইদিন রাতে আল আমিন নামের এক অটো-রিকশাচালককে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে স্থানীয় লোকজন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটিকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করার পর বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে ফেলে দেয়ার বিষয়টি পুলিশের কাছে স্বীকার করে ওই অটোচালক।
এ ঘটনায় ৮ই জানুয়ারি রাতে রাঙ্গাবালী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
হত্যার স্বীকার শিশুটির বাবা বাদী হয়ে অটোচালক আল আমিনকে প্রধান এবং একমাত্র আসামি করে এই মামলা করেন। এ মামলায় ৯ই জানুয়ারি আসামিকে আদালতে হাজির করলে স্বীকারোক্তিমূলক ঘটনার বিস্তারিত জবানবন্দি দেন।