তাইফা আফরিন। বয়স মাত্র ১০ বছর। তার নানা আলী শিকদার ক্যানসারে আক্রান্ত। নানার চিকিৎসার জন্য বাবা বশির উদ্দিনের সঙ্গে ঢাকায় গিয়েছিল তাইফা। কিন্তু সে আর বাড়ি ফিরতে পারেনি। ঢাকা থেকে লঞ্চে করে বাড়ি ফেরার পথে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অগ্নিকাণ্ডে সে মারা গেছে। তার বাবা গুরুতর দগ্ধ হয়ে বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার দিবাগ রাতে এ ঘটনা ঘটে।তাইফা আফরিনদের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের রোডপাড়া গ্রামে। তার নানা আলী শিকদার লঞ্চ থেকে লাফিয়ে নদীতে পড়ে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।তাইফার স্বজনেরা জানান, তাইফা আফরিন তার বাবা বশির উদ্দিনের সঙ্গে নানা আলী শিকদারের চিকিৎসার জন্য বেশ কিছুদিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছিল। নানার চিকিৎসার পর গতকাল বৃহস্পতিবার সদরঘাট থেকে তারা বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ওঠে। রাত তিনটার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে তাইফার নানা জীবন বাঁচাতে নদীতে লাফ দেন।তাইফার বাবা ও তাইফা লঞ্চে আটকা পড়ে। তাইফা অগ্নিদগ্ধ হয়ে লঞ্চেই মারা যায় ও তার বাবা বশির উদ্দিন দগ্ধ হয়। বশির উদ্দিনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় তাইফার নানা আলী শিকদার এখনো নিখোঁজ। তাইফার বাড়িতে শোকের মাতম চলছে।বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে আহত ও নিহত ব্যক্তিদের অধিকাংশই বরগুনার বাসিন্দা। খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিকভাবে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোকে ২৫ হাজার টাকা ও আহত ব্যক্তিদের ১৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হচ্ছে।ঝালকাঠিতে লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজ যাত্রীদের খোঁজে বরিশাল ও ঝালকাঠি হাসপাতালে স্বজনেরা ভিড় করছেন।