নিখোঁজের তিনদিনের মাথায় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ব্যবসায়ী স্বপন ফকির (৩২) উদ্ধার হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে গলাচিপা উপজেলার গোলখালী এলাকা থেকে তাকে জেলেরা উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। পরিবারের দাবি, উদ্ধারের সময় স্বপনের হাত-পা ও চোখ বাঁধা ছিল এবং মুখ কসটেপ দিয়ে পেচাঁনো ছিল।
এরআগে গত রোববার রাতে উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের চরলতা গ্রামের এ ভূষা মাল ব্যবসায়ী স্বপন নিখোঁজ হয়। পরিবারের ভাষ্য ছিল, স্বপনকে অপহরণ করে তাকে দিয়েই মোবাইলে পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। নিখোঁজের এ ঘটনায় সোমবার সকালে রাঙ্গাবালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্যবসায়ী স্বপনের বোন জামাই ইদ্রিস মুন্সি বলেন, ‘গোলখালীর ঠোডায় হাত-পা ও চোখ এবং মুখ কসটেপ দিয়ে বাঁধা অবস্থায় রাস্তার ঢালে স্বপনকে ফেলে গেছে। স্থানীয় জেলেরা মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টায় তাকে পাইছে। আমরা গিয়েছি রাত দেড়টায়। গিয়ে কসটেপ ও নেকড়া (ছেঁড়া কাপড়) পেয়েছি। হাত-পা বাঁধা ছিল নেকড়া দিয়ে। মুখ বাঁধা ছিল কসটেপ দিয়ে। সে এখন গলাচিপা হাসপাতালে ভর্তি।’
পরিবারের লোকজন বলছে, তাকে ৪-৫ জন লোকে নিয়ে গিয়েছিল। খাওয়া-দাওয়া করায়নি। মারধর করছে। পরে মাছ ধরতে গিয়ে জেলেরা তাকে পায় এবং পরিবারকে জানায়।
ব্যবসায়ী স্বপন নিখোঁজের এ ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা রাঙ্গাবালী থানার এসআই আল আমিন বলেন, ‘পরিবারের লোকজন জানিয়েছে স্বপনকে ওই অবস্থায় পাওয়া গেছে। তবে আমাদের তদন্ত এখনও অব্যাহত আছে। এটি অপহরণ নাকি কোন নাটকীয়তা আছে, এটা আমরা তদন্ত করছি। সে আসছে, এখন আমাদের তদন্তে সুবিধা হবে।’
উল্লেখ্য, ব্যবসায়ী স্বপন নিখোঁজের পর পরিবারের দাবি ছিল, শুক্রবার ডাল বিক্রি করতে পার্শ্ববর্তী উপজেলা গলাচিপায় যান ভূষা মাল বিক্রেতা স্বপন। পরে রোববার বিকেল সাড়ে ৪ টায় নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পৌনে ৯ টায় খেয়া পার হয়ে উত্তর চরলতা গাছবন এলাকা পৌঁছায় সে। এরপর রাত ১১ টা ৪৮ মিনিটে বোন হোসনেয়ারা বেগমের মুঠোফোনে স্বপনের ব্যবহৃত মোবাইল থেকে একটি কল আসে। কলটি রিসিভ করলে অপর প্রান্ত থেকে কান্নাকাটি নিজের জীবন বাঁচাতে বোনকে মুক্তিপণের এক লাখ টাকা জোগাড় করে দিতে আকুতি করেছিল স্বপন।