কিন্তু ২০২০-এর জানুয়ারীতে প্রকল্পটি একনেক-এর অনুমোদন লাভ করলেও গত অর্থ বছরের চলতি এডিপি’তে প্রকল্পটি অন্তর্ভূক্তি ও তেমন কোন অর্থ বরাদ্ব ছিল না। ইতোমধ্যে সড়ক ও সেতু মন্ত্রনালয়ের সাথে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সব ধরনের অনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন ও দরপত্র আহবান করে চুড়ান্ত অনুমোদনের সহ কার্যদেশ প্রদানে এক বছরেরও বেশী সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। গত মাসেরই প্রথম সপ্তাহে ১১টি প্যাকেজে কাজ সম্পাদনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সমুহের সাথে চুক্তি সম্পাদন করে কার্যাদেশ প্রদান করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ।
পানি সম্পদ গবেষনা প্রতিষ্ঠান ‘আইডব্লিউএম’ সম্ভাব্যতা সমীক্ষার উপর ভিত্তি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন কবলিত বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু ও এর সংযোগ সড়কের ভাঙন প্রতিরোধে নকশা প্রনয়ন করেছে। নকশা অনুযায়ী সুগন্ধা নদীর বাম তীরে ২ কিলোমিটার ও ডান তীরে ১ হাজার ৭৬৫ মিটার এলকায় ৮ লাখ ১৫ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে বিভিন্ন মাপের ১৫ লাখ সিসি ব্লক ফেলা হবে। এ লক্ষে ১১টি প্যাকেজে নির্মান প্রতিষ্ঠান সমুহের সাথে চুক্তির পরে গত একমাসে প্রায় ৭ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
নকশা অনুযায়ী ভাঙন কবলিত স্থানে প্রাথমিক স্তরে এর মধ্যে প্রায় ৮০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলার কাজ সম্পাদনের পাশাপাশি কয়েকটি পাকেজে সিসি ব্লক তৈরীর কাজও শুরু হয়েছে প্রকল্প এলাকায়। এর বাইরে ভাঙন কবলিত এলাকার উজানে সুগন্ধা নদীর যে বিশাল বাঁক তৈরী হয়েছে, তা কেটে প্রবাহ কিছুটা সোজা করতে সোয়া ৬শ মিটার এলাকা থেকে সাড়ে ৩ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারন করা হবে এ প্রকল্পের আওতায়। এছাড়া একই প্রকল্পের আওতায় সেতু ও এর সংযোগ সড়ক মেরামতে সড়ক অধিদপ্তর আরো প্রায় ৫ কোটি টাকার কাজ করার কথা রয়েছে। কিন্তু অর্থের সংস্থান নেই।
সড়ক ও সেতু মন্ত্রনালয়ের সাথে চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
কিন্তু অত্যন্ত স্পর্ষকাতর এ নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে শুরু থেকেই অর্থ সংকট একটি বড় বাঁধা হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন একাধীক দায়িত্বশীল মহল। ২৮৩ কোটি টাকার এ প্রকল্পটির জন্য চলতি অর্থ বছরে বরাদ্ব রয়েছে মাত্র সাড়ে ৭ কোটি টাকা। অথচ গত এক মাসে যে ৭ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, টাকার অংকে তা প্রায় ২০ কোটি টাকা। আসন্ন বর্ষা মৌশুমের আগে বেশীরভাগ জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন করতে না পারলে সেতুটি ও এর সংযোগ সড়ক বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়ার আশংকা রয়েছে বলে মনে করছেন নদী বিশেষজ্ঞগন।
কিন্তু প্রকল্প বস্তবায়নে অর্থের সংস্থান না হলে মাঝ পথে কাজের গতি শ্লথ হবারও আশংকা করছেন ওয়াকিবাহাল মহল। ফল নির্ধারিত সময়ে বিশাল এ নদী ভাঙনরোধ প্রকল্প বাস্তবায়ন সহ সেতু ও সংযোগ সড়কের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে সড়ক অদিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল মহলে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণ জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর সাতে আলাপ করতে তার সেল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। বরিশাল সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান আরএডিপি’তে প্রকল্পটির জন্য বরাদ্ব ১৫ কোটিতে উন্নীত করা হয়েছে। পাশপাশি পুরো বিষয়টি নিয়ে তিনি অধিদপ্তরে যোগাযোগ করার কথাও জানান।