সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ



সাদিক আবদুল্লাহ ক্লাবের অবৈধ প্রেসিডেন্ট
বরিশাল সিটি করপোরেশন: প্রধান নির্বাহী থাকেন বরিশাল ক্লাবে
প্রকাশ: ২৭ মে, ২০২৩, ১১:১৮ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

বরিশাল সিটি করপোরেশন: প্রধান নির্বাহী থাকেন বরিশাল ক্লাবে

উপসচিব সৈয়দ ফারুক হোসেন প্রেষণে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) পদে রয়েছেন। করপোরেশন বাড়ি ভাড়া দিলেও তিনি ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে থাকছেন বরিশাল ক্লাবের বিশ্রামাগারের বিলাসবহুল কক্ষে। ৫০৩ নম্বর কক্ষটির প্রতি রাতের ভাড়া ৪ হাজার ৬০০ টাকা। ২৭ মাসে ভাড়া বাবদ তাঁর কাছে বকেয়া পড়েছে ৩৭ লাখ ২৬ হাজার টাকা। এই ভাড়া কে দেবে– জবাব খুঁজে পাচ্ছে না বরিশাল ক্লাব।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের জনবল কাঠামোতে ‘চিফ অডিটর’ পদ নেই। তবে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এই পদে মাসিক লাখ টাকা বেতনে চুক্তিতে আবিদ হোসেনকে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনিও ২৭ মাস ধরে থাকছেন বরিশাল ক্লাবে। ৩০৪ নম্বর কক্ষটিরও প্রতি রাতের ভাড়া ৪ হাজার ৬০০ টাকা।

বরিশাল ক্লাব জয়েন্ট স্টকে নিবন্ধিত লিমিটেড কোম্পানি। ২০১৯ সালের মার্চে ভোট ছাড়াই বরিশাল ক্লাবের প্রেসিডেন্ট বনে যান সাদিক আবদুল্লাহ। ক্লাবের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, দুই বছর অন্তর নির্বাচন হবে। তবে চার বছরে ভোট হয়নি। মেয়রের আগে ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তাঁরই আপন মামা কাজী মফিদুল ইসলাম কামাল। তিনি বলেন, সাদিক আবদুল্লাহ ক্লাবের অবৈধ প্রেসিডেন্ট। তিনি জবরদস্তি করে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ক্লাব দখল করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে অন্তত ১০ বছর ক্লাবের সদস্য হিসেবে থাকতে হয়।

সাদিক আবদুল্লাহ ২০১৬ সালে সদস্য হন। ২০১৯ সালের সাধারণ সভায় নিজের অনুগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে হট্টগোল সৃষ্টি করে প্রেসিডেন্ট পদ দখল করেছেন।

বরিশাল ক্লাব সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সাদিক আবদুল্লাহর মৌখিক নির্দেশে সিটি করপোরেশেনের সিইও এবং চিফ অডিটর ক্লাবে থাকছেন। এ-সংক্রান্ত কোনো লিখিত নির্দেশনা নেই। ক্লাবে প্রেসিডেন্টের একটি কক্ষ রয়েছে। তবে তাতে মেয়রের অতিথি থাকলে ভাড়া দিতে হবে বলে জানিয়েছেন কাজী মফিদুল ইসলাম।

সৈয়দ ফারুক হোসেন ও আবিদ হোসেনের নামে শুধু ভাড়া বাবদ বরিশাল ক্লাব পাওনা হয়েছে ৭৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা। তাঁরা খাওয়া-দাওয়া করেন বরিশাল ক্লাবে। দৈনিক তিন বেলায় দু’জনের খাওয়া খরচ গড়ে দেড় হাজার টাকা। তাতে বকেয়া পড়েছে লাখ দশেক টাকা। ক্লাব-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দুই কর্মকর্তা তাঁদের অতিথিদেরও আপ্যায়ন করেছেন ক্যাফেটেরিয়ায়। সেই বিলও বকেয়া পড়েছে।

বিভাগীয় শহরে সরকারি কর্মকর্তারা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া হিসেবে পান সরকারের কাছ থেকে। সরকারি কোয়ার্টারে বাস করলে বাড়ি ভাড়া পান না। সৈয়দ ফারুক হোসেন প্রশাসন ক্যাডারের ২২ ব্যাচের কর্মকর্তা। তাঁর সহকর্মীরা সমকালকে জানিয়েছেন, এই ব্যাচের কর্মকর্তাদের মাসিক মূল বেতন কমবেশি ৬০ হাজার টাকা। সৈয়দ ফারুক হোসেন প্রেষণে থাকায় বেতন, বাড়ি ভাড়াসহ অন্য প্রাপ্য সুবিধা বরিশাল সিটি করপোরেশন থেকে পাচ্ছেন।

করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার জানিয়েছেন, সিইও ফারুক হোসেন কোয়ার্টারে না থাকায় বাড়ি ভাড়া পাচ্ছেন বিসিসি থেকে। তিনি বরিশাল ক্লাবে বাস করায়, ভাড়া করপোরেশন দেবে কিনা– এ প্রশ্নের উত্তর দেননি প্রশাসনিক কর্মকর্তা।

জবাব মেলেনি সৈয়দ ফারুক হোসেনের কাছ থেকে। গত সোমবার তাঁর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করে সমকাল। বরিশাল ক্লাবের বিল কে পরিশোধ করবে– এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি জেনে জানাব।’ এর পর তাঁর সঙ্গে আর কথা বলা সম্ভব হয়নি। গত মঙ্গলবার ফের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। ভাড়ার প্রশ্নটি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হলে তিনি দেখেও জবাব দেননি। জবাব মেলেনি আবিদ হোসেনের কাছ থেকেও। তিনি এসএমএসে জানিয়েছেন, এ বিষয়ে করপোরেশনের কর্তৃপক্ষ জবাব দিতে পারবে।

এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে বরিশাল আসছেন না সাদিক আবদুল্লাহ। তবে দুই কর্মকর্তা এখনও ক্লাবে থাকছেন। ক্লাবের সর্বশেষ নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বলেন, থাকা-খাওয়ার বিল দুই কর্মকর্তাকেই দিতে হবে। নয়তো তাঁদের থাকতে দেওয়া সাদিক আবদুল্লাহ ব্যক্তিগতভাবে মেটাবেন। যথারীতি এ বিষয়েও সাদিক আবদুল্লাহর বক্তব্য জানতে পারেনি।

সাদিক বরিশাল ছাড়ার আগে ক্লাবের ব্যাংক হিসাব থেকে ৫০ লাখ টাকার চেক দিয়েছেন তাঁর অনুগত হিসেবে পরিচিত মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুলের প্রতিষ্ঠানে। সুইমিং পুল নির্মাণে আগাম দেওয়া এই টাকা ব্যাংক থেকে তোলা হলেও কাজ শুরু হয়নি। টুটুলও বরিশাল ছেড়ে গেছেন।

সাদিক ক্লাব প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসার পর গত ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ক্লাবের ১০ ব্যাংক হিসাবে ১ টাকাও লেনদেন হয়নি। অভিযোগ এসেছে, হল ভাড়াসহ অন্য আয়ের টাকা ক্লাবে জমা পড়ছে। নিবন্ধিত কোম্পানি হলেও ক্লাবের হিসাবের অডিট হয় না চার বছর। মেয়রপত্নি লিপি আবদুল্লাহ অন্তত ৫৫ জনকে সদস্যপদ দিয়েছেন চার বছরে। তবে এর নথি ক্লাবে নেই। নতুন সদস্যদের এককালীন টাকা ৫ লাখ। তা ক্লাবে জমা পড়েনি।




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

প্রধান উপদেষ্টা : প্রফেসর শাহ্ সাজেদা ।

উপদেষ্টা সম্পাদক : সৈয়দ এহছান আলী রনি ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।

যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল।

ইমেইল: [email protected]

মোবাইল: 01713799669/01711358963

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি।
© বরিশাল খবর সম্পাদক মামুনুর রশীদ নোমানী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

  নলছিটির মগড় ইউনিয়নবাসীর সেবা করতে চান মোঃ সাইফুজ্জামান সুমন তালুকদার   প্রাণ ফিরছে বরিশাল নগরীর ৭ খালে   বেতারের সঙ্গীত শিল্পী (পল্লীগীতি) হিসেবে মনোনীত হলেন অ্যাড: জুয়েল   বরিশালের মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাচারী প্রধান শিক্ষিকা স্ট্যান্ড-রিলিজ !   বরিশাল ল’ কলেজে দুর্নীতি, উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ   অনিয়ম দুর্নীতির আতুরঘর বরিশাল বেতার : চলছে জোড়াতালি দিয়ে   বরিশাল ডাকঘরের ক্যাশিয়ার নুরুল কবিরের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ   দেড় লাখ মামলা মাথায় বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মীর   আলু শুন্য বরিশালের পাইকারী বাজার   বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের ওপর মার্কিন ভিসানীতি শুরু   মাদারীপুরের হিমাগারে ৩০ হাজার বস্তা, বাজারে আলুর কৃত্রিম সংকট   যুদ্ধ স্যাংশন সংঘাতের পথ এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর আহবান   Mamunur Rashid Nomani charged with violating Bangladesh’s Digital Security Act   ঝালকাঠিতে রোহিঙ্গা আটক এসেছিলো ভোটার হওয়ার জন্য   সাঈদুর রহমান রিমনকে নিয়ে দিলিপ কুচক্র মহলের ষড়যন্ত্রের জবাব!   বাবুগঞ্জে ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের চার সদস্য আটক   নলছিটিতে ৫০তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ   অপরাধ ঘটাতে আগাম ‘রেকি‘ করে গেছেন তারা!   ঝালকাঠি কারাগার: কু-প্রস্তাবের দাম দশ লাখ টাকা! জেলার বহাল তবিয়তে   রাজাপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দুর্নীতির আখড়া