খান রফিক : আমরা সঠিক নিয়মে এমপিও কাগজ জমা দিয়ে ঘুষ ও দুর্নীতিকে না বলি, সততাকে উৎসাহিত করি’ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন (চলতি দায়িত্ব) গত সোমবার তার ফেসবুক আইডিতে উল্লেখিত মন্তব্য করে পোস্ট দিয়েছেন। এর মূল উদ্দেশ্য হলো মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের উচ্চতর বেতন স্কেল প্রদানের কার্যক্রম ঘুষ মুক্তভাবে সম্পন্ন করা। এখন থেকে এমপিওর সব কার্যক্রমও ঘুষমুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। মাউশির বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের এ পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এ অঞ্চলের শিক্ষকরা। নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বরিশাল আঞ্চলিক
কার্যালয়ে ঘুষ প্রদান ছাড়া কোনো শিক্ষকের কাজ সম্পন্ন হয় না বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, যারা এমপিও কার্যক্রমসহ শিক্ষকদের কাগজপত্রের বিভিন্ন ত্রুটি ধরে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নেন। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা মো. আনোয়ার হোসেন গত ১১ জুন মাউশির বরিশাল কার্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্ব নেওয়ার পর এ প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতিমুক্ত করার পদক্ষেপ নিয়েছেন। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে শিক্ষকদের উচ্চতর বেতন স্কেল প্রদানের কার্যক্রম ঘুষমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
জানতে চাইলে মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০১৫ সাল থেকে বন্ধ থাকার পর মাউশি শিক্ষকদের উচ্চতর বেতন স্কেল প্রদান করতে যাচ্ছে। বরিশাল বিভাগে এবার সহস্রাধিক শিক্ষক উচ্চতর স্কেল পাবেন। বিপুল সংখ্যক এ শিক্ষকদের পুঁজি করে ঘুষ বাণিজ্যের সিন্ডিকেট যাতে সক্রিয় হতে না পারে, সেজন্য তিনি শিক্ষকদের সচেতন করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন। আনোয়ার হোসেন শিক্ষকদের সতর্ক করে বলেন, যে শিক্ষক ত্রুটিমুক্ত কাগজপত্র জমা দেবেন, তিনি ঘুষ ছাড়াই উচ্চতর স্কেল পাবেন। ত্রুটিযুক্ত কাগজপত্র দিয়ে কোনোভাবেই পার পাওয়া যাবে না। শিক্ষকদের সব এমপিও কার্যক্রমও এখন থেকে ঘুষ মুক্তভাবে সম্পন্ন করা হবে বলে জানান আনোয়ার হোসেন।
মাউশি সূত্রে জানা গেছে, উচ্চতর বেতন স্কেল প্রত্যাশীদের উপজেলা পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ শেষ হয়েছে ৮ আগস্ট। ওই আবেদন ১৪ আগস্ট জেলা শিক্ষা অফিস চূড়ান্ত করবে। সেখান থেকে মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয়ে আবেদন পৌঁছবে ২১ আগস্টের মধ্যে। এখান থেকে আবেদন চূড়ান্ত করে প্রেরণ করে পাঠানো হবে মাউশির মহাপরিচালকের দপ্তরে। বরিশাল প্রধান শিক্ষক সংগ্রাম কমিটির সভাপতি নগরীর আছমত আলী খান ইনস্টিটিউশনের (একে স্কুল) প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, তিন বছর আগে জেলা শিক্ষাকর্মকর্তা যোগদানের পর তিনি ওই প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতিমুক্ত করেন। মাউশির বরিশালের উপপরিচালকের দায়িত্ব পেয়ে একই পদক্ষেপ নেওয়ায় শিক্ষক সমাজ উচ্ছ্বসিত। শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুল ইসলাম বলেন, আনোয়ার হোসেনের মতো সৎ শিক্ষাকর্মকর্তা ৬৪ জেলায় একজন করে থাকলে সারা দেশের শিক্ষা সেক্টর দুর্নীতিমুক্ত হতো। সব শিক্ষকের উচিত তার পাশে থেকে শিক্ষা বিভাগকে দুর্নীতিমুক্ত করতে সহায়তা করা।
সুত্র :আলোকিত বাংলাদেশ