বরগুনায় স্কুলছাত্রী সামিরার (১৪) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সামিরার পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করে টয়লেটে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। অপরদিকে ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে একটি চিরকুট (সুইসাইড নোট) উদ্ধারের পর থেকে।
সোমবার (৫ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বরগুনা শহরের খামার বাড়ি এলাকার ভাড়া বাসার টয়লেট থেকে সামিরার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় সামিরার ঘরে ওই চিরকুটটি পাওয়া যায়। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত জামাল হোসেনকে।
চিরকুটের ব্যাপারে সামিরার মা সুমি বেগম এ প্রতিবেদককে বলেন, সামিরাকে হত্যা করে টয়লেটে ঝুলিয়ে রাখে বাড়িওয়ালা আবুল বাশারের ছেলে জামাল ও তার স্ত্রী মুক্তা। তার দাবি ওই সময় সামিরার ঘরে সুইসাইড নোটটিও লিখে রেখেছে জামাল। হত্যার ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য। সামিরার হাতের লেখা এমন নয় বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, সামিরার সমবয়সী অপর বাসার জামিরা নামের একটি মেয়ে (১৩) প্রথমে টয়লেটের মধ্যে সামিরাকে ঝুলতে দেখে তাদেরকে জানায় এবং ওই মেয়েটিই চিরকুটটি তার কাছে দেয়। তাৎক্ষণিক সামিরাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর পুলিশ মহদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ সময় চিরকুটটি পুলিশকে দেয় সামিরার মা।
উদ্ধার হওয়া চিরকুটে লেখা ছিল ‘মা তারা আমার নামে যে বদনাম উঠিয়েছে তাতে আমি এই পৃথিবীতে থাকতে পারছি না। আমি নাকি খুব খারাপ মেয়ে, আমি নাকি খুব খারাপ। মা তুমি ভালো থেকো। আমাকে কেউ বিশ্বাস করে না, কেউ না তুমি ছাড়া। ইতি তোমার সামিরা’।
চিরকুটের ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (সাব-ইন্সপেক্টর) দেবাশীষ হাওলাদার জানান, চিরকুটটি সামিরার লেখা কিনা তা যাচাইয়ের জন্য আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে হস্তলিপি বিশারদের কাছে পাঠানো হবে। প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে সামিরার খাতাপত্র যাচাই বাচাই করে ধারণা করা হচ্ছে চিরকুটটি সামিরারই হাতের লেখা।
এদিকে সামিরার রহস্যজনক মৃত্যু ঘটনায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে জামাল হোসেন, তার স্ত্রী মুক্তা এবং চাচাতো ভাই মামুনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত জামাল হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।