ফরিদপুরে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন এক নারী। সোমবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। বিচারক হাফিজুর রহমান অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণে ভাঙ্গা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগ ওঠা সজল মাহমুদ (৪০) ভাঙ্গা থানায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত। তবে তিনি দাবি করেছেন, ওই নারী তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। তিনি কেন ধর্ষণের অভিযোগ দিলেন, তা বুঝতে পারছেন না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ লিগ্যালএইড অ্যান্ড সার্ভিস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) ফরিদপুরের সমন্বয়কারী শিপ্রা গোস্বামী জানান, ওই নারীর সঙ্গে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন এএসআই সজল। তাঁরা এ বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করবেন।
লিখিত অভিযোগে ওই নারী উল্লেখ করেছেন, তিনি অবিবাহিত। গত ২০ অক্টোবর তাঁর বাড়িতে চুরি হলে থানায় অভিযোগ দেন। এরপর ২৪ অক্টোবর রাতে এএসআই সজল বাড়িতে গিয়ে কথাবার্তার এক পর্যায়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন। ওই ঘটনা কাউকে বললে হত্যা এবং মরদেহ গুম করার হুমকিও দেন। পরে বিয়ের প্রলোভনে সজল তাঁর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন। এর মধ্যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ৩০ জানুয়ারি বিয়ের কথা বলে ভাঙ্গা বাজারে একটি মেডিকেল সেন্টারে তাঁকে রেখে পালিয়ে যান সজল। পরদিন তিনি ভাঙ্গা থানায় গিয়ে ওসিকে সব জানান। ওসি তখন সজলকে ডেকে আনলে তিনি তাঁকে পুলিশ কোয়ার্টারে নিয়ে যান। সেখানে কিছু কাগজপত্র ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর করানোর পর সজল তাঁকে বলেন, ‘তুমি আমাকে বিয়ে করেছ এবং তালাক দিয়েছ।’ এরপর ১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে মারধর করে থানা থেকে বের করে দেন সজল। ওই ঘটনার পর ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি ভাঙ্গা থানায় মামলা করতে গেলে তাঁকে আদালতে মামলা করতে বলা হয়।
তবে অভিযোগের বিষয়ে এএসআই সজল দাবি করেন, ওই নারীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছে। তাঁর কাছে কাবিননামাও আছে। প্রথম স্ত্রীর সম্মতি নিয়েই তিনি ওই নারীকে বিয়ে করেছেন। তিনি বলেন, ওই নারীকে তিনি তালাক দেননি। তিনি এখনও তাঁর স্ত্রী। তিনি কেন আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করলেন, ঠিক বুঝতে পারছেন না।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ওসি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) হেলালউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, প্রশাসনিক কারণে এএসআই সজলকে ১০ দিন আগে ফরিদপুর পুলিশ লাইনসে বদলি করা হয়েছে। তিনি বলেন, মামলার বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা এখনও পাননি। তবে শুনেছেন, এ ধরনের একটি মামলা হয়েছে।