দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। প্রাথমিক হিসাবের সঙ্গে ৪৬ লাখ ৭০ হাজার যোগ হয়ে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ৮ কোটি ৪০ লাখ ৭৭ হাজার ২০৩ জন, নারী ৮ কোটি ৫৬ লাখ ৫৩ হাজার ১২০ জন। অর্থাৎ পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ৯১৭ জন বেশি। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৭ শতাংশের বয়সই ২৯ বছরের কম।
রবিবার (৯ এপ্রিল) জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৭ শতাংশ বা প্রায় ৯ কোটি ৪০ লাখ মানুষের বয়স ২৯ বছরের কম। অর্থাৎ তারুণ্যের কারণে জনসংখ্যার যে জনমিতিক সুবিধা, তা পুরোপুরি বাংলাদেশের অনুকূলে রয়েছে।
আরও দেখা যাচ্ছে, ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সিদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। এ বয়সির সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৭২ লাখ, যা মোট জনসংখ্যার ১০ দশমিক ১০ শতাংশ।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন এবং বিবিএসের মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মূল প্রবন্ধে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’ প্রকল্পের পরিচালক মো. দিলদার হোসেন বলেন, ‘বিশ্বে জনশুমারির তথ্য তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যাচাই করা হয়। তবে এবার প্রাথমিক গণনা থেকে বাদ পড়ার সংখ্যা অন্যান্য বারের চেয়ে কম। অন্যান্য বার প্রায় ৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রাথমিক গণনায় বাদ পড়ে যাওয়ার ঘটনাও রয়েছে।’
প্রকল্প পরিচালক বলেন, সমন্বয়ের পর শুমারির প্রাথমিক গণনার চেয়ে জনসংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪৬ লাখ ৭০ হাজার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ৩৫ বছরের কম বয়সির সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৬৪ শতাংশের কিছু বেশি বা ১০ কোটি ৮৭ লাখের কিছু বেশি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ কোটি ৪২ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮১ জনের বসবাস চট্টগ্রাম বিভাগে, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ২ কোটি ৩ লাখ ৫৩ হাজার রয়েছে রাজশাহী বিভাগে, যা মোট জনসংখ্যার ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ।
গত বছরের ১৫ থেকে ২১ জুন দেশে জনশুমারি ও গৃহগণনা পরিচালনা করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। প্রথম এই ডিজিটাল শুমারি শেষে এক মাসের মধ্যে ২৭ জুলাই প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তখন জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন।
আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুযায়ী শুমারির পর বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) গত বছরের অক্টোবরে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও স্বতন্ত্রভাবে শুমারি-পরবর্তী যাচাই (পিইসি) জরিপ পরিচালনা করে। তাতে জনসংখ্যার সমন্বয়কৃত চূড়ান্ত হিসাব পাওয়া যায়।
প্রাথমিক হিসাব থেকে জনসংখ্যা ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ২৯৫ জন বেড়ে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন হয়েছে।
সমন্বয়কৃত মোট জনসংখ্যার ৪৯ দশমিক ৫১ শতাংশ বা ৮ কোটি ৪০ লাখ ৭৭ হাজার ২০৩ জন পুরুষ, ৫০ দশমিক ৪৩ শতাংশ বা ৮ কোটি ৫৬ লাখ ৫৩ হাজার ১২০ জন নারী, দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বা ১২ হাজার ৬২৯ জন হিজড়া জনগোষ্ঠী এবং ৮৫ হাজার ৯৫৭ জনের লিঙ্গ পরিচয় জানা যায়নি।
মোট জনসংখ্যার ৬৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ বা ১১ কোটি ৬০ লাখ ৬৬ হাজার ৯২৫ জন গ্রামে এবং ৩১ দশমিক ৬৬ শতাংশ বা ৫ কোটি ৩৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৮৬ জন শহরে বাস করে।
এ ছাড়া জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এ ১৭ হাজার ৫০৭টি থানার ৮৫ হাজার ৯৫৭ জনের আংশিক তথ্য পাওয়া গেছে, যাদের লিঙ্গসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টি শুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।