ঝিনাইদহের জেলাজুড়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে লাগামহীনভাবে চলছে অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য। বেসরকারি হাইস্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ৩/৪টি পদে নিয়োগ দিয়ে এই বাণিজ্য করছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকরা। এই নিয়োগ নিয়ে মারামারি, দলাদলি ও আদালতে মামলার ঘটনাও ঘটছে অহরহ। একটি স্কুল ও কলেজে এই ৩/৪টি পদে চাকরি পেতে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হলেও সেই টাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফান্ডে জমা হচ্ছে না। এই টাকা চলে যাচ্ছে সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা অফিসের অফিসারদের পকেটে। শিক্ষা অফিস থেকে ডিজির প্রতিনিধি নিয়োগের চিঠি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অবৈধ নিয়োগ বোর্ড গঠন করে অর্থের বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এজন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালেদুজ্জামান খালেক ও সভাপতিকে অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে বৈধভাবে নিয়োগের জন্য দাবি জানান বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য আনোয়ার হোসেনসহ এলাকাবাসী। বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য সাবনুর বলেন, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে গত রোববার ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এই টাকা ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালেদুজ্জামান খালেক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইয়ামিন চৌধুরী ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তথ্য গোপন রেখে এই নিয়োগকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছে। ৫ সদস্যের যে নিয়োগ বোর্ড গঠন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ বলেও দাবি করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শিপন আলী বলেন, নাইম নামের এক প্রার্থী নিরাপত্তাকর্মী পদে আবেদন করেন। তাকে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আরেক প্রার্থী খায়রুল ইসলাম একাই অফিস সহায়কসহ দুই পদে আবেদন করেন। তাকে নিরাপত্তাকর্মী পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়েরর প্রধান শিক্ষক খালেদুজ্জামান খালেক বলেন, আমি বৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছি। প্রার্থীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা ঘুষ হাতিয়ে নিয়েছি এমন প্রশ্নে বিষয়টি তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, ‘সবকিছু বিধি মোতাবেক হয়েছে। স্বচ্ছভাবে প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’ কারও কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুল হক বলেন, ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত আমার দপ্তরে আসেনি। কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।