ছারছীনার পীর, বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিত্ব, ধর্ম প্রচারক আল্লামা মরহুম নেছারুদ্দীন আহমাদ (রহ) এর মাজার জিয়ারত
প্রকাশ: ৩ মার্চ, ২০২৩, ৮:৫৬ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
আল্লামা নেছারুদ্দীন আহমদ( রহ )(১৮৭৩-১৯৫২) বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিত্ব, ধর্ম প্রচারক, পীর ছিলেন। তিনি ফুরফুরা শরীফের খলিফা ছিলেন। এছাড়াও তিনি পিরোজপুরের ছারছিনা গ্রামে ছারছিনা দরবার শরীফ প্রতিষ্ঠা করেন। যিনি বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইসলামী বিদ্যাপীঠ ছারছিনা দারুসসুন্নাত কামিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বরিশাল বিভাগের অন্যতম ধর্ম প্রচারক ছিলেন। এছাড়াও তিনি ছারছিনা শরীফের পীর ছিলেন, তিনি বরিশাল অঞ্চলে বহু ইসলামী প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। ইসলাম প্রচারে তিনি বহু অবদান রেখেছেন। তিনি তাঁর অনুসারীদের কাছে মুজাদ্দিদ এ জামান বলে পরিচিত।
আল্লামা নেছারুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহির জীবন ও কর্ম
১৭৫৭ খৃষ্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজুদ্দৌলার পতনের পর থেকে এদেশের ইসলামী তাহজিব, তমাদ্দুন ও আদর্শের অধঃপতন শুরু হয়। বিশেষ করে উপমহাদেশের মুসলমানগণ বর্ণনাতীত লাঞ্ছনা ও গঞ্জনার শিকার হন। ক্রমেই অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে মুসলমানগণ তাহাদের স্বকীয় কৃষ্টি ও সভ্যতা ভুলে অধঃপতনের গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হওয়ার উপক্রম। মুসলমানদের ক্রান্তিলগ্নের এমনি এক সময়ে আগমন ঘটে যুগ শ্রেষ্ঠ আলেমে দ্বীন শাহ ছুফি নেছারুদ্দীন আহমদ রহমাতুল্লাহি আলাইহির।
বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বে ছারছিনা দরবার শরীফ ও ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্র ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক এক আধ্যাত্মিক প্রাণকেন্দ্র হিসেবে আজ সুপরিচিত। পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ(স্বরূপকাঠি)উপজেলা সদরের উত্তর পাশে ইতিহাসখ্যাত পুন্যভূমি ছারছিনা গ্রামটি অবস্থিত। এ গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম আকন্দ পরিবারে ১৮৭৩ খৃীষ্টাব্দে দ্বীনের আলোকবর্তিকা নিয়ে এক পূণ্যবান ধর্মীয় সংস্কারক হযরত মাওলানা শাহ সুফি নেছারুদ্দিন আহমেদ(রহঃ) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হযরত সুফি সদরুদ্দিন এবং মাতার নাম ছিল জোহরা খাতুন। ১৮২১ খ্রীঃ ফারায়েজি আন্দোলনের নেতা ফরিদপুর জেলার বাহাদুরপুরের হাজী শরীয়ত উল্ল¬াহ ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে এ অঞ্চলে আসলে দাদা মুন্সি জহির উদ্দিন এবং একই এলাকার মরহুম হাজী সইজুদ্দিন মিয়ার কাছে ছদরুদ্দিন আহমেদ(রহঃ) শিষ্যত্ব গ্রহণ করে ইসলাম ধর্ম প্রচার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। সমাজে ইসলাম প্রচার, মুসলমানগণ ধর্মীয় শিক্ষাসহ শরীয়ত অনুযায়ী চলার শিক্ষায় সদরুদ্দিন আহমেদ(রহঃ) আমল থেকেই ঐ বাড়িতে মুসাফিরখানা তৈরি করা হয়েছিল। হযরত মাওলানা শাহ সুফি নেছারুদ্দিন আহমেদ(রহঃ) বয়স যখন ১৪/১৫ বছর তখন তার পিতা ছদরুদ্দিন আহমেদ তাঁকে উপজেলার মাগুরা গ্রামের মো. দলিল উদ্দিন সিকদারের কন্যা ছাহেরা খাতুনের সাথে বিবাহ দিয়ে পবিত্র হজ্জ পালনে যান এবং সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। দাদা মুন্সি জহির উদ্দিন এবং বিধবা মাতা জোহরা বেগমের সান্নিধ্যে বড় হতে লাগলেন নেছারুদ্দিন আহমেদ। কিছুদিন পর দাদা জহিরুদ্দিন ইন্তেকাল করেন। দাদা ও পিতার ধর্মীয় অনুপ্রেরণায় উজ্জীবিত নেছারউদ্দিন মাদারীপুরের একটি প্রাথমিক মাদ্রাসায় পড়াশুনা শুরু করেন। তারপর তিনি ঢাকার হাম্মাদিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানে কিছুদিন অধ্যয়নের পর কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। পরে তিনি হুগলি মোহসেনিয়া মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেন এবং বৃত্তি সহকারে জামায়াতে-উলা পাস করেন। ঐ মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালে ১৮৯৫ খৃষ্টাব্দে ফুরফুরা শরীফের পীর হযরত আবুবকর সিদ্দিকী আল কোরাইশী(রহঃ) এর হাতে বায়াত হন। তিনি তখন সনদপ্রাপ্ত পীর সমাজের হাদী। দ্বীন ইসলাম প্রচারসহ হেদায়েতের কাজে আত্মনিয়োগ করলেন। শৈশব থেকে দাদা মুন্সি জহিরুদ্দিন আকন নাতি নেছারুদ্দিনকে নিয়ে ইসলাম ধর্ম প্রচারে বিভিন্ন এলাকা সফর করতেন। মাদারীপুরে পড়াশুনা অবস্থায় নেছারুদ্দিন আহমদ(রহঃ) দ্বিতীয় বিয়ে করেন। স্ত্রীর নাম ছিল ছাহেরা খাতুন। ছাহেরা খাতুনের গর্ভে জন্ম নেয় দু’ছেলে। ছেলেরা ও দ্বিতীয় স্ত্রী ইন্তেকাল করায় ১৯০৫ সনে ৩২/৩৩ বছর বয়সে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া উপজেলার কুশলা গ্রামের চৌধুরী আব্দুল ওয়াফী সাহেবের কনিষ্ঠ কন্যা মোসাম্মাত্ আফছারুন্নেছাকে বিবাহ করেন। এ স্ত্রীর গর্ভে ৮ ছেলে ও ৬ কন্যা জন্মগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে শাহ আবু জাফর মো. সালেহ ও শাহ মো. সিদ্দিক পরবর্তীতে বড় ও মেঝ পীর নামে খ্যাত। শাহ নেছারউদ্দিন (রহঃ) ঝালকাঠি জেলার কাচাবালিয়া গ্রামের মো. রমজান উল্লাহ গাজী সাহেবের কন্যা ছমেদুন্নেছাকে বিয়ে করেন। সেখানে ৪ কন্যা সন্তান জন্ম নেয় । ১৯০৫ সনে শাহ সুফী নেছারুদ্দিন আহমদ(রহঃ) একখানা গোলপাতার দোচালা ঘর নির্মাণ করেন। ঐ ঘরের একপাশে খানকাহ বা কুতুবখানা এবং অন্যপাশে মুসাফিরখানা হিসেবে ব্যবহূত হত। তখন থেকে পীর সাহেব কেবলা শাহ সুফি নেছারুদ্দিন আহম্দ (রহঃ) ব্যাপকভাবে দ্বীন ইসলাম প্রচারে মঠবাড়িয়া উপজেলায় গুদিঘাটায় খানকাহ স্থাপনসহ বরিশাল অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে দ্বীন ইসলাম প্রচারের কাজ করতেন। ছোট বজরা বা পানশী নৌকায় পীর কেবলা ছফর করতেন। তাঁর হেদায়াতী ছফর শুধু ওয়াজ-নসীহতের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, ছফরে গিয়ে তিনি সমাজের বিভিন্ন সমস্যাদিরও সমাধান দিতেন। পীর কেবলা দ্বীন ইসলাম প্রচারের পাশাপাশি শরীয়ত বিরোধী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে এবং ইসলামী হুকুম আহকাম মেনে চলতেও সকলকে পরামর্শ দিতেন। তাঁর দাওয়াতে সাড়া দিয়ে তত্কালীন কৃষকসমাজ ধূমপান (হুকো) ও লক্ষ্মীপূজা ত্যাগ করে। পীর সাহেব কেবলা তার প্রতিষ্ঠিত খানকায় মুসলমানদের তরীকায় ছবকাদি শিক্ষাদান ও তালীম তরবীয়াত প্রদান করতেন। ঈমান আকিদা, ইসলামের রীতিনীতি, আমল আখলাক ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষাদানে ১৯১২ গোলপাতার এক কুটিরে প্রতিষ্ঠা করেন কেরাতিয়া মাদ্রাসা। ঐ মাদ্রাসার প্রথম শিক্ষক ছিলেন পীর কেবলার ভগ্নিপতি হাফেজ আলহাজ্ব আব্দুর রশিদ। ঐ কেরাতিয়া মাদ্রাসা উদ্বোধন করেন ফুরফুরা শরীফের পীর কেবল হযরত আবু বকর সিদ্দিকী আল কোরাইশী(রহঃ)। ১৯১৫ সনে পীর সাহেব কেবলা একটি মক্তব প্রতিষ্ঠা করেন। ঐ মক্তবে ভাণ্ডারিয়ার এমদাদ আলী সাহেব বাংলা ও ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। ঐ সময় থেকে ক্লাসওয়ারী জামাত চালু হয়। ১৯১৮ সনে ঐ মাদ্রাসায় কোলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার সিলেবাস অনুযায়ী জামাত নিয়মে তালিম শুরু হয়। এবং মাদ্রাসার নামকরণ করা হয় ছারছিনা দারুসুন্নাত আলিয়া মাদ্রাসা। ১৯১৯ সনে গোলপাতার ছাউনি ও কাঠের ঘরের কুতুবখানা পাকাকরণ করা হয়। মাদ্রাসা ও মক্তবের ছাত্রের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ছাত্রদের থাকা ও খাওয়ার জন্য ১৯২০ সনে প্রতিষ্ঠিত হয় ফতেহিয়া লিল¬াহ বোর্ডিং।১৯২৭ সনে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং শাহ সুফি নেছারুদ্দিন আহমদ(রহঃ) সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯২৮ সনে উলা জামাত খোলা হয়। ১৯২৭ সনে ২৯ জানুয়ারি মাদ্রাসার প্রথম মঞ্জুরি এবং ১৯৩৭ সনে জামাতে উলার স্থায়ী মঞ্জুরি পায়। ১৯৩১ সনে ছারছিনা দারুসুন্নাত আলিয়া মাদ্রাসার পাকা ভবন নির্মিত হয়। মাদ্রাসায় ছাত্রের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৯৩৫ সনে দ্বিতল আবু বকর সিদ্দিক হল, একতলা সুফি ফতেহ আলী হল নির্মিত হয়। জামায়াতে উলার পাশাপাশি ১৯৩৮ সনে সরকারি মঞ্জুরি সাপেক্ষে টাইটেল ১ম বর্ষের পাঠ শুরু হয়। ১৯৪০ সনে অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং বৃটিশের ছোট লাট গর্ভনর মিঃ জন হারবার্ট আর্থার মাদ্রাসা পরিদর্শনে আসেন। ১৯৪২ সনে শেরে বাংলা একে ফজলুল হক সর্বপ্রথম ঐ মাদ্রাসায় টাইটেল খোলার অনুমতি দেন। ১৯৫০ সনে তত্কালীন শিক্ষামন্ত্রী মোয়াজ্জেম হোসাইন এ মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন এবং ঐ মাদ্রাসায় পরীক্ষাকেন্দ্র মঞ্জুর করেন। ঘরে ঘরে ইসলামী দাওয়াত পৌঁছে দিতে শাহ সুফি নেছারুদ্দিন আহমদ(রহঃ) ১৯৪৯ সনে পাক্ষিক তাবলীগ নামে একটি পত্রিকা বের করতেন, যা আজো নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। ১৯৪১ সনে নেছারুদ্দিন আহমদ(রহঃ)বাঙালি হাজিদের জন্য পবিত্র মক্কায় একটি রিলিফ ফান্ড গঠন করেন এবং রিলিফ ফান্ড থেকে একটি মুসাফিরখানা প্রতিষ্ঠা করেন। যার নাম নেছারিয়া মুসাফিরখানা। ১৯৪৩ সনে পীর সাহেব কেবলা জমাইয়েতে হিযবুল¬াহ নামে একটি ইসলামী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৫ সনে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সুন্নাত তরীকা মোতাবেক আমলের নিমিত্তে পীর সাহেব কেবলা এহইয়ায়ে ছুন্নাহ বোর্ড গঠন করেন। ১৯৫০ সনে পীর সাহেব কেবলা ছারছিনা দরবার শরীফে হজ্জ অফিস খুলে দেশের বিভিন্ন স্থানের ১৪০১ জন ভক্ত মুরিদান হজ্জযাত্রী নিয়ে রিজার্ভ স্টিমার মোজাফফরী জাহাজ যোগে হজ্জে গমন করেন এবং হজ্জ পালন শেষে দেশে ফিরে আসেন। এটাই ছিল তার জীবনের শেষ হজ্জ পালন। ১৯৫১ সনে পীর সাহেব কেবলা ছাত্র হিযবুল¬াহ নামে একটি ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্রাসা ছাত্রদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে পীর সাহেব কেবলা গড়ে তুলেছিলেন তাত শিল্প। ঐ শিল্পে লুংগি, চাদর, মশারির কাপড় তৈরি হতো। পরে তা বন্ধ হয়ে যায়।
জন্ম ও বংশ পরিচয়:
বাংলা ১২৭৯ সাল মোতাবেক ইংরেজি ১৮৭৩ সালে (বর্তমান) বাংলাদেশের বাকেরগঞ্জ জেলার (বর্তমান পিরোজপুর) নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠী) উপজেলার কাছ দিয়ে বয়ে যাওয়া সন্ধ্যা নদীর তীরে অবস্থিত মাগুরা (বর্তমানে ছারছীনা গ্রামে) মুসলিম সমাজের এক ক্লান্তিলগ্নে এক আলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে হাদী হিসেবে আবির্ভূত হলেন বাংলার গৌরব, ভাগ্যবান মহাপুরুষ, ওলীকুল শিরোমণি, মুজাদ্দিদে যামান- হযরত মাওলানা শাহ সূফী নেছারুদ্দীন আহমদ রহ.। পিতার নাম মরহুম হাজী সদর উদ্দীন এবং মাতার নাম মরহুমা জোহোরা বেগম।
সামাজিক এই অবক্ষয়ের সময় জাতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে অবিভক্ত বাংলার অন্তর্গত তৎকালীন বরিশাল (বাখেরগঞ্জ) জেলাধীন (বর্তমানে পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ থানা) ছারছীনা গ্রামে জন্ম নিলেন যুগশ্রেষ্ঠ ওলিয়ে কামিল, হযরত আল্লামা মাওলানা নেছারুদ্দীন আহমদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
তাঁরই প্রতিষ্ঠিত ছারছীনা দরবার উপমহাদেশের শরিয়ত ও মারেফতের এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ কেন্দ্র। তিনি ইলমে শরিয়তের একজন অতিউঁচু স্তরের মুহাক্কিক আলেম এবং ইলমে মারেফতেরও একজন অতি উচ্চ মকামের বুজুর্গ ব্যক্তি।
শৈশব কাল
শৈশব কাল হইতে নেছারুদ্দীন আহমদ ছিলেন ব্যতিক্রমী। খেলাধুলা হাসি-তামাসা আনন্দ ফুর্তি-করে সময় কাটানো তিনি আদৌ পছন্দ করতেন না। নিজ গ্রামের পাঠশালায়ই তাঁর প্রাথমিক শিক্ষার হাতে খড়ি। অল্প বয়সেই তিনি সরল, সুবোধ ও দারুন ধর্মভীরু বলিয়া পরিচিত হয়ে উঠেন। লেখাপড়ায় মনোযোগী ধীর-স্থির ও অধ্যাবসায় এবং ধর্মানুরাগী ছিলেন। শিশুসুলভ যে সকল অভ্যাস সাধারণত: শিশুদের মধ্যে পরিলক্ষিত হয় বালক নেছারুদ্দীন আহমদ এর জীবনে সেইগুলো প্রায়ই অনুপস্থিত ছিল।
বাল্য বয়সেই বিবাহ ও পিতৃবিয়োগ
নেছারুদ্দীন আহমদ এর বয়স যখন বার (১২) বৎসরে উপনীত হন। তখন তাঁর পিতা হাজী সদরুদ্দীন সাহেব হজে যাওয়ার মনস্থ করেন। একমাত্র ছেলেকে রেখে হজে যাওয়ার প্রাক্কালে তাঁকে বিবাহ দিয়ে যাওয়ার মনস্থ করেন। সে মতে প্রতিবেশী এক বিশিষ্ট পরিবারের স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব দলীলুদ্দীন সিকদারের কন্যা ছাহেরা খাতুনকে পুত্রবধু করে ঘরে আনেন। পুত্রের বিবাহ কার্য সমাধা করে ছদরুদ্দীন সাহেব হজে চলে যান। হজ পরবর্তী সময়ে সদরুদ্দীন সাহেব আর দেশে ফেরেননি। পবিত্র মক্কা শরীফে তিনি ইন্তেকাল করেন ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। তখনও তাঁর দাদা জহির উদ্দিন রহমাতুল্লাহি আলাইহি জীবিত ছিলেন।
মায়ের প্রেরণায় শিক্ষা জীবনের শুরু
স্বামীর মৃত্যুর পর বালক নেছারউদ্দীনের মহিয়সী জননী জোহরা খাতুন সাহসিকতার সঙ্গে পুত্রের শিক্ষার জন্য উদ্যোগী হন। আজ হতে প্রায় দেড়শত বৎসর পূর্বে বাংলার নিভৃত পল্লী গ্রামের একটি সাধারণ পরিবারের মহিলা তাহার পিতৃহীন একমাত্র পুত্রকে উৎসাহ দিয়ে ইলম শিক্ষার জন্য বাড়ির বাহিরে প্রেরণ করা এক মহাকঠিন কাজই ছিল বটে।
ইলমে শরীয়ত অর্জন:
হযরত পীর সাহেব কেবলা বার বছর পর্যন্ত পিতামাতার কাছেই ইলমে দীন শিক্ষা করেন। চৌদ্দ বছর বয়সে তাঁর পিতা হজ্জ আদায় করতে গিয়ে সেখানেই ইন্তেকাল করেন। এরপরে কিছুদিন তাঁর সৎ চরিত্রা উন্নতমনা মহিয়সী জননীর কাছে ইলমে দীন শিক্ষা করেন। পরবর্তীতে তিনি তাঁর মায়ের দোয়া নিয়ে মাদারীপুরে এক মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখান থেকে শিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি ঢাকায় আহমদিয়া মাদ্রাসায় (বর্তমান হাম্মাদিয়া স্কুল, নয়াবাজার) ভর্তি হয়ে কিছুদিন অধ্যায়ন করে, চলে যান কলিকাতা আলীয়া মাদ্রাসায়। এরপরে হুগলী মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে পড়াশুনা করেন। বৃত্তি সহকারে সেখান থেকে ১৮৯৬ খ্রিস্টব্দে ফাজিল (তৎকালীন মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ ডিগ্রি) লাভ করেন এবং ইলমে হাদীসের গভীর পান্ডিত্য অর্জন করেন। ইলমে তাছাউফ অর্জন: পীরে কামেল আল্লামা নেছারুদ্দীন আহমদ রহ. ছোট বেলা থেকেই মহান আল্লাহ তা’য়ালার নৈকট্য লাভ করার জন্য সর্বদা ধ্যানমগ্ন থাকতেন। আল্লাহ তা’য়ালাও দয়া পরবশ হয়ে ছাত্র অবস্থাতেই তাকে সে পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। হুগলী মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত অবস্থায় ফুরফুরা শরীফের পীর শাহ সূফী আবূ বকরছিদ্দীক রহ. এর সাথে হঠাৎ করে এক জলসায় তার সাক্ষাত হয় এবং তার সান্নিধ্য লাভ করার সৌভাগ্য অর্জন করেন। ফুরফুরার মহান ওলী মুজাদ্দেদে যামান র. নিজে সাগ্রহে তাঁকে বায়আত করান, তরীকতের তালীম প্রদান করতে থাতেন, মূলত দয়াময় প্রভুর মদদ তাঁর ওপর এত প্রবল ছিলো যে, তা লক্ষ্য করেই তার পীর সাগ্রেহে তাঁকে কাছে ডেকে নেন। পীরের হাতে হাত রেখে বাইয়াত গ্রহণ করে নিয়মিত তরীকা চর্চা করে অল্প দিনেই তিনি চার তরীকায় কামালাত নিয়ে চলে এলেন বাংলায়। দীর্ঘ চল্লিশ বছর পর্যন্ত তিনি তাঁর মোর্শেদ এর কাছে থেকেছেন।
ইসলামি জ্ঞানার্জনের তাগিতে তিনি প্রথম মাদারীপুর গমণ করেন। বর্তমানে মাদারীপুর একটি জেলা হলেও তখনকার দিনে মাদারীপুর ছিল একটি মহকুমা মাত্র। গোটা বরিশাল জেলায় একটি মাদরাসাও ছিল না। মাদারীপুরের সন্নিকটে ইসলামিয়া মাদরাসায় তিনি প্রাথমিক পড়া শেষ করেন।
মাদারীপুর হতে ঢাকায় গমন
মাদারীপুর থেকে দাখিল (এস.এস.সি) পাশ করে নেছারউদ্দীন আহমদ ঢাকায় হাম্মাদিয়া মাদরাসায় আলিম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এই মাদরাসায় কতদিন ছিলেন এবং কোন পর্যন্ত পড়াশুনা করে ছিলেন, তাহা নিশ্চিতরূপে জানা যায় নাই।
ঢাকা হইতে কলকাতায় গমন
ঢাকা হইতে তিনি কলকাতা আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হয়েছিলেন। কলকাতার এই আলিয়া মাদ্রাসায় নেছারুদ্দীন আহমদ কতদিন অধ্যয়ন করেছেন তাহাও সঠিকরূপে জানা যায় নাই। তবে এই মাদরাসায়ও তিনি দীর্ঘদিন লেখাপড়া করেন নাই। এর পর হুগলী মাদরাসায় ভর্তি হয়ে নেছারুদ্দীন আহমদ লেখাপড়া শেষ করেন।
তরিকায় ছবক গ্রহণ ও খিলাফাত লাভ
তৎকালীন সময়ের অন্যতম ইসলামি চিন্তাবিদ আধ্যাত্মিক রাহবার হযরত মাওলানা শাহ্ ছুফী আব্দুল্লাহ ওরফে মোহাম্মদ আবু বকর ছিদ্দিকী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হুগলি পাশে পাশ্ববর্তী অঞ্চলে একটি জলসায় আসেন। সেখানে নেছারুদ্দীন আহমদ বিশেষ আগ্রহ নিয়ে ওয়াজ শুনিতে গেলেন। মাগরিবের নামাজবাদ নেছারুদ্দীন আহমদ মাহফিলের সামনে বসলে হজরত আবু বকর ছিদ্দিকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁকে দেখতে পান এবং অনেক ঘটনার পর তিনি হজরত আবু বকর ছিদ্দিকী রহমাতুল্লাহি আলাইহির নিকট বায়াত গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তাঁর নিকট থেকেই খিলাফাত লাভ করেন।
মক্কা শরীফ হিজরত
তিনি খিলাফাত লাভের পর নিজ মাতৃগৃহে ফিরে আসেন। দেশে আসার পর তিনি বসন্ত রোগে আক্রান্ত হন। রোগোক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই তিনি মক্কা শরীফ যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। রোগ মুক্তির পর তিনি মক্কা শরীফে হিজরত করিবার দৃঢ় সংকল্প করেন। মাতা, স্ত্রী ও জেষ্ঠ্য পুত্র এবং ছোট ভগ্নিপতিসহ জাহাজ যোগে হজব্রত পালনে পবিত্র মক্কা শরীফ গমন করেন। মক্কা শরীফ অবস্থানকালে তাঁর স্ত্রী ছাহেরা খাতুন ও বড় পুত্র শাহ মোহাম্মদ মুজাহার ইন্তেকাল করেন। এই ঘটনার পর মায়ের পরামর্শে হজপর্ব শেষ করে মাকে নিয়া দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। নেছারুদ্দীন আহমদ পবিত্র মক্কা শরীফ হতে দেশে ফিরে নিজ মোরশেদের সহচর্যে চলে যান। তাঁর অনুমতি নিয়ে তিনি দ্বীন-ইসলামের খেদমতে ব্রতী হন।
ইসলামের খেদমতে আত্ম-নিয়োগ
এই মহান মুর্শিদ তালিম ও তরবিয়াত দিয়ে যেমন একদল খলীফা তথা দ্বীনের কামেল সেবক তৈরি করে গেছেন তেমনি দেশের বিভিন্ন স্থানে ইলমে দ্বীনের মাদ্রাসা ও ইলমে তাসাউফের অগণিত খানকা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। মোট কথা, দেশের সর্বত্র বিশেষ করে দক্ষিণ বাংলায় তিনি দ্বীনের পুনর্জাগরণ সৃষ্টি করে গেছেন। যার আলো ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র বাংলাদেশের অলিতে-গলিতে। নিজের জীবনে এবং তাঁর অনুগামী ও অনুসারীদের পরিপূর্ন রূপে সুন্নাতে নববির ইত্তেবায় গঠন করতে আজীবন মহা সাধনা করে গেছেন।
লেবাস, পোষাক, চাল-চলন, খাওয়া-দাওয়া, আমল-আখলাক, লেনদেন, মোয়ামালাত-মোয়াশারাত-এক কথায় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিটি কাজে সুন্নাতের পাবন্দিতে তিনি ছিলেন অত্যন্ত কঠোর ও আপোসহীন। ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাতে মুআক্কাদাতো বটেই, এমনকি নফল, মোস্তাহাব ও মোস্তাহসানও তরক করা থেকে বিরত থাকতেন তিনি এবং তাঁর অনুসারীদেরকেও এ বিষয়গুলোর ব্যাপারে কঠোর তাগিদ দিতেন। তিনি ছিলেন শিরক-বিদাআত ও কুসংস্কার নির্মূলের এক সংগ্রামী মর্দে মুজাহিদ, কঠোর সাধক, আবেদ, জাহেদ, মহান সুফী দরবেশ।
মানুষের মাঝে ইলমে দ্বীনের প্রচারের পাশাপাশি লেখালেখির কাজও করেন। তাঁর রচিত মাসআলা-মাসাইলের প্রসিদ্ধ কিতাব হলো- তরিকুল ইসলাম। এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত পত্রিকা হলো ‘পাক্ষিক তাবলীগ’।
বিবাহ ও আওলাদ:
হযরত পীর সাহেব কেবলা সর্বমোট তিনটি বিবাহ করেন। তাঁর প্রথম বিবাহ ছিল স্থানীয় সিকদার পরিবারে। এই ঘরে তাঁর দুই ছেলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। প্রথমা স্ত্রী ইন্তেকাল করার পর দ্বিতীয় বিবাহ করেন ফরিদপুরের কুশলা গ্রামে। এই ঘরে তার তিন ছেলে ও ছয় কন্যা- সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি আরো একটি বিবাহ করেছিলেন এবং সেই ঘরে কেবলমাত্র একটি কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মরহুম শাহ আবূ জাফর মুহাম্মদ ছালেহ রহ. ছিলেন দ্বিতীয় ঘরের সন্তান।
তাবলীগ ও হেদায়াত:
মোর্শেদের কাছ থেকে অনুমতি পেয়ে দেশে ফিরে মঠবাড়িয়া হতে তিনি তার দাওয়াত কাজ শুরু করেন। তিনি তার সারাটি জীবন এ কাজে ব্যয় করেছিলেন। হাদীসের আলোকে তাবলীগে দীনের জন্য এক ব্যাপক কর্ম পন্থা গ্রহণ করেছিলেন তিনি। কেবল ওয়াজ নসীহত করেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘ছারছীনা দারুস্সুন্নাত আলীয়া মাদ্রাসা’সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদ্রাসা মকতব, খানকাহ, মসজিদ।
সমাজ সেবা:
হযরত পীর সাহেব কেবলার যেমনি নাম ছিল নেছারুদ্দীন, তেমনি তিনি ছিলেন ধর্ম ও সমাজের জন্য উৎসর্গকৃত। ধর্ম ও সমাজের জন্য তিনি অসংখ্য প্রতিষ্ঠান কায়েম করেছেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ছারছীনা দারুস্সুন্নাত আলীয়া মাদ্রাসা, লিল্লাহ বোডিং, কুতুবখানা, হেমায়েতে ইসলাম ফান্ড, এহইয়ায়ে সুন্নাত তহবিল, মক্কা- মদীনা শরীফ রিলিফ তহবীল ও মুসাফির খানা, সাধারণ দান তহবিল, পঞ্চগ্রাম সাহায্য সমিতি, বরিশালের লংগরখানা (১৩৫০),বার্ষিক ঈসালে সওয়াব মাহফিল, সিদ্দিকীয়া ফান্ড ও সিলেট রেফারেন্ডাম।
পুস্তক প্রণয়ন:
সকল বিদয়াতী ও গোমরাহী মতবাদের মোকাবিলা করতে পুস্তক প্রণয়ন আবশ্যক। এ সত্যটি বুঝতে পেরে তিনি অনেকগুলো বই লিখেছেন। তার লিখিত পুস্তকসমূহ হলো- তরীকুল ইসলাম (চৌদ্দ খ-), ইজহারুল হক (জুমার বাহাছ), মোসলেম রতœহার, নূরুল হেদায়েত, মাছায়েলে আরবায়া, তা’লীমে মা’রেফাত, জুমার সংক্ষপ্ত দলীল, গঞ্জেহক্ব, ফুটবলের ফতোয়া, নসবনামা, অসীয়ত নামা, দাঁড়ি ও ধুমপান, মজহাব ও তকলীদ, জামেউল উসূল, সমাজ দর্পণ, পীর- মুরীদি দ্বীধাভঞ্জন, আল-জুমুআ, মাসায়েলে ছালাছা, নারী ও পর্দা ইত্যাদি। এছাড়াও তিনি শেষবার হজ্জে যাওয়ার সময় ‘তাবলীগ’ নামে একটি পাক্ষিক পত্রিকা প্রকাশ করে যান।
সংগঠন প্রতিষ্ঠা:
কুরআন ও হাদীসের আলোকে সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার জন্য ১৯৪৩ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন “আঞ্জুমানে আল ইসলাম” নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। কিছুদিন পরে এর নাম রাখা হয় ‘হিযবুল্লাহ জমইয়াতুল মুজাহেদীন”। ১৯৫০ সালে এর নাম পুন:পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘পাকিস্তান জমিয়তে হিযবুল্লাহ’ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর নাম রাখা হয় ‘বাংলাদেশ জমইয়তে হিযবুল্লাহ’। আর অঙ্গ সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘জমইয়তে তোলাবায়ে হিযবুল্লাহ’ । ১৯৮৭ সনে আধুনিকায়ন করে নাম রাখা হয় ‘বাংলাদেশ ছাত্র হিযবুল্লাহ’।
হজ্জব্রত পালন:
হযরত পীর সাহেব কেবলা মোট তিনবার হজ্জ পালন করেন। প্রথমবার বাংলা ১৩০৮ সালে (১৯০১-০২ইং) স্ব- পরিবারে হজ্জ আদায় করেন। এরপরে মধ্যবয়সে একবার এবং বাংলা ১৩৫২ সনে ১৪০১ জন সঙ্গী নিয়ে শেষ হজ্জ পালন করেন।
ইবাদত বন্দেগী:
হযরত পীর সাহেব কেবলা প্রায় সব সময়ই ইবাদত বন্দেগীতে কাটিয়ে দিতেন। ফরয ও ওয়াজিবতো আদায় করতেনই, নফল ইবাদতেও তিনি এত মশগুল থাকতেন যে, মনে হত যেন তিনি কেবল এ কাজের জন্যই দুনিয়াতে এসেছিলেন। অসুস্থ থাকা অবস্থায়ও তিনি নফল নামাজ, রোজা, কুরআন শরীফ তেলাওয়াত, ওজীফা পাঠ, মোরাকাবা-মোশাহা দা নিয়মিত করতেন।
জীবন যাপন:
হযরত পীর সাহেব কেবলা সহজ-সরল অনাড়ম্বর জীবন-যাপন করতেন। সাধারণ কাপড়ের কল্লীদার জামা- পায়জামা অথবা সেলাই বিহীন লুঙ্গী এবং পাগড়ী পরিধান করতেন।
ইন্তেকাল
১৯৫২ সালের ৩১ জানুয়ারি (ইফা), আবার কেউ কেউ বলেন ১৯৫২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার মোতাবেক মাঘ মাসের ১৬ তারিখ রাত ৯-৪৫ মিনিটে ৮৭ বৎসর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন। আমাদেরকেও তাঁর জীবনের উত্তম ও হক কথা ও আমলগুলো আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন।
সুত্র : মুজাদ্দিদে জামান শাহ সূফী নেছারুদ্দীন আহমাদ (রহ) একটি জীবন একটি আদর্শ গ্রন্থ।
রেজাউল করিমসহ বিভিন্ন লেখকের লেখা থেকে প্রাপ্ত।