ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে হামলা-ভাংচুর ও চারটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ সরকার দলীয়দের এ হামলায় যুবদল ও ছাত্রদলসহ তাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন- উপজেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক মিলন নক্তি , উপজেলা যুবদল নেতা ফজলে রাব্বি, যুবদলের সহ-তথ্য গবেষণা সম্পাদক জহির উদ্দিন সাদ্দাম সাইমুন, উপজেলা যুবদলের নেতা সৈকত মালতিয়া, উপজেলা মৎস্য দলের সভাপতি সোহেল খান, উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফ, ওমরপুর ইউনিয়ন যুবদলের নেতা বেল্লাল মোস্তসন, আছলামপুর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির, মনপুরা উপজেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মেহেদী ফরাজি, নুরাবাদ যুবদলের নেতা বাবুল পাটওয়ারি, আমিনাবাদ যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোবারক উল্লাহ।
আহত অন্যদের নাম জানা যায়নি। তারা প্রথমিক চিকিৎসা শেষে যার যার নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। আহতরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের বরিশাল পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টায় চরফ্যাশন পৌরসভার ৬নং ওযার্ডের সাবেক সংসদ সদ্য নাজিম উদ্দিন আলমের বাসভবনে যুবদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছিল। কেক কাটার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আশরাফ উদ্দিন দিপু ফরাজির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন (টেলিকনফারেন্সর মাধ্যমে) সাবেক সংসদ নাজিম উদ্দিন আলম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন আলমগীর মালতিয়া, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আ ন ম আমিরুল ইসলাম মিন্টিজ মিয়া, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জাকির হোসেন বাবলু, চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোফরান মহাজন, চরফ্যাশন পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সোহেল, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম আক্তার ময়িন।
উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক আলমগীর মিয়া, উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ছিদ্দিক মাতব্বর, উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মো. কাউছ মিয়া, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মীর সাহাদাত হোসেন ছায়েদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শেষপর্যায়ে নেতাকর্মীরা বের হয়ে যার যার কর্মস্থলে যেতে শুরু করেন; ঠিক সেই সময় উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লবের নেতৃত্বে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যুবদল নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। সেই হামলায় প্রায় ৫০ জন যুবদল নেতাকর্মী আহত হন। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও তাদের নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে।
চরফ্যাশন উপজেলা যুবদল সভাপতি আশরাফুল ইসলাম দীপু জানিয়েছেন, সাবেক এমপি নাজিম উদ্দিন আলমের বাসায় সকাল ১০টার দিকে যুবদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা চলছিল। এ সময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ সরকারদলীয় লোকজন তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং এমপি নাজিম উদ্দিনের বাসায় ভাংচুর চালায়। এমনকি পুলিশের কাছ থেকে নেতাকর্মীদের ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়।
তিনি আরও জানান, আহতদের মধ্যে উপজেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক মিলন, যুগ্ম সম্পাদক রাব্বি, কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান, সাদ্দাম, মোবারক, বাবলু, মেহেদী, আনোয়ার, জাকির, ফয়সাল ও বিল্লালসহ ২৫-৩০ জনের অবস্থা গুরুতর।
এ ঘটনা নিয়ে চরফ্যাশন থানার ওসি মোরাদ হোসেন জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এখনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।