দীর্ঘ দিন লকডাউন থাকার পর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত উন্মুক্ত করে দেয়ায় পর্যটকদের সমাগম ঘটতে শুরু করেছে সূর্য উদয় এবং সূর্য অস্তের বেলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে। বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারনে গতো পহেলা এপ্রিল থেকে সারা দেশের পর্যটন কেন্দ্র গুলো বন্ধ ঘোষনা করে সরকার। দীর্ঘ সাড়ে চার মাস পরে খুলে দেয়া হয়েছে পর্যটন কেন্দ্র গুলো,সস্থি ফিরেছে কুয়াকাটার স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাঝে। সরকারের কঠোর লকডাউন ঘোষণার নিদর্শনা অনুযায়ী এক মাত্র পর্যটন শিল্পের সাথে জরিত পেশাজীবিরাই সঠিক ভাবে নির্দেশনা পালন করেছে।
সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫০ ভাগ আসন খালি রেখে স্বাস্থ্য বিধি মেনে সিমিত পরিসরে পর্যটন কেন্দ্র চালু করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কুয়াকাটার সকল হোটেল, মোটেল,রেস্তোরাঁ,শুটকি,ঝিনুক শামুক,আচারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো দুয়ে মুছে পরিস্কার পরিছন্ন করে স্বাস্থ্য বিধি মেনে সেবা দিতে প্রস্তুত করা হয়েছে।
পর্যটন কেন্দ্র খোলার তৃতীয় দিনে আজ সরজমিনে ঘুরে কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসা পর্যটক সহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, মাদারীপুর থেকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভ্রমনে আসা শুভ হাওলাদার বলেন, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা শুনে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে কুয়াকাটায় ভ্রমণে এসেছি। লকডাউনের কারনে ঘরথেকে কোথাও বেরহতে পারিনি তাই বন্ধুরা মিলে বেরাতে আসেছি খুবই ভালো লাগতেছে এখানে এসে নিজের মন মানসিকতার সস্থি বোধ করতেছি উন্মুক্ত পরিবেশ। সমুদ্রের বিশাল জলরাশির আর সকালের সূর্য উদয় এবং বিকেলের সূর্য অস্তের সৌন্দর্য উপভোগ করে যেকোনো পর্যটক মুগ্ধ হবে এখানে। এর আগেও কুয়াকাটায় ভ্রমণে এসেছি কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন দীর্ঘ দিন লকডাউন থাকায় পর্যটন স্পট গুলো জনশূন্য থাকায় প্রকৃতি তার আপন রুপ ফিরে পেয়েছে। সৈকতে বেড়েছে লাল কাকড়া আর প্রাকৃতিক বন গঙ্গামতী লেকের দু’ধারে পাখিদের কলতান ভোরের সূর্য উদয়ের সাথে সাথে উপলব্ধি করা যাচ্ছে আগের থেকে অনেক বেশি।
সৈকতে আচার দোকানি মোঃ জহির বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছি। যেহেতু অনেক পর্যটক আসা শুরু করেছে কুয়াকাটায় তাই আমাদের দাবি আর যেন পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ না করা হয়।
ট্যুরিস্ট গাইড আঃ জলিল বলেন, এতো দিন মানুষ লকডাউন এর জন্য কোথাও বেরহতে পারেনি আশাকরি আস্তে আস্তে সৈকতে পর্যটকের সংখ্যা আরো বারবে। আমারা গাইডরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্যুর গাইড পরিচালনা করছি।
বীচ পারে স্পিড বোট ও ওয়াটার বাইক (Waverunner) এর মালিক মোঃ লিটন খান বলেন লকডাউনে কুয়াকাটার পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় আমরা খুবই কষ্টের ভিতর দিন কাটিয়েছি। পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ায় কুয়াকাটায় বেরাতে আসতে শুরু করেছে পর্যটক আমরা প্রস্তুত রয়েছি নৌ পথে সমুদ্র ও বন ভ্রমণের সেবা দিতে। আশাবাদী সমনের দিকে আর লকডাউন না দিলে কিছুটা হলেও আর্থীক সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবো।
বীচওয়ে ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ,ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, আমরা সরকারি নির্দেশ মোতাবেক স্বাস্থ্য বিধি মেনে ট্যুর পরিচালনার জন্য বুকিং নিয়ে সেবা দেয়া শুরু করেছি এবং যারা আমাদের মাধ্যমে কুয়াকাটা ভ্রমণে আসার আগ্রহ প্রকাশ করছে তাদেরকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে ভ্রমণে আসার পরামর্শ দিচ্ছি। এরই মধ্যে আমরা বেশ কিছু বুকিং পেয়েছি আশাকরি আগামী দিন গুলোতে আরো বেশি বুকিং পাবো যেভাবে গেস্টদের সারা পাচ্ছি তাতে কিছুটা হলেও আর্থীক ক্ষতি পুষিয়ে উঠা যাবে।
ট্যুর অপারেটরস্ এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক)’র প্রেসিডেন্ট , রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, কুয়াকাটার সৌন্দর্যই পর্যটকদের কুয়াকাটায় টেনে নিয়ে আসে এটা আল্লাহতালার ঐশ্বরিক দান। আশাকরি স্বাস্থ্য বিধি মেনে ভ্রমণ প্রিয় আরো অনেক বেশি পর্যটক কুয়াকাটা বেড়াতে আসবে এবং কুয়াকাটার পর্যটন শিল্পের সাথে জরিত পেশাজীবিরা স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য বিধি মেনে সেবাদিতে প্রস্তুত রয়েছে।