আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পন্ড সম্মেলন, ১০ দিনেও ঘোষনা আসেনি কমিটির
প্রকাশ: ৯ নভেম্বর, ২০২২, ৫:১৯ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : বরগুনার আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ৩০অক্টোবর। এখনো ঘোষনা আসেনি কমিটির। কবে নাগাদ এই কমিটির ঘোষনা আসতে পারে সে বিষয় কেউ স্পষ্ট ধারনা দিতে পারছে না। অবশ্য কেন্দ্রীয় নেতারাও এ ব্যপারে কথা বলতে নারাজ। যানা গেছে, গত ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়েছে আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন। দিনব্যাপী এই সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও স্থানীয় আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পন্ড হয়ে যায় প্রথম সেশন। সেদিন কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনেই এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এতে সাংবাদিক সহ প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা কর্মী আহত হয়। এরপর থেকেই শহরজুড়ে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। সম্মেলনের দিন কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারনে ইতিমধ্যে কয়েকজন চিহ্নিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় আওয়ামিলীগ। ধারণা করা হচ্ছে যারা এই বিশৃঙ্খলার সাথে জরিত তাদের বড় কোন দায়িত্বে রাখা হবে না। স্থানীয় আওয়ামীলীগের একাধিক সূত্র বলছে সম্মেলনকে বিতর্কিত করতেই পরিকল্পিত ভাবে এ হামলা চালানো হয়েছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছে সম্মেলনের দিন সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান মাইকে সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ করলেও তারা নিভৃত হয় নি। চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বাদল খানের উসকানিমূলক বক্তব্যের সূত্র ধরে আমতলী পৌরসভার সাবেক মেয়র নাজমুল আহসান নান্নু, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম মুসা ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জি এম হাসান পরিস্থিতি অশান্ত করে তোলেন। এ বিষয়ে আওয়ামীলীগের এক অংশের নেতা সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকান বলেন, যারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দল করেছে, সেই সব অনুপ্রবেশকারী, হাইব্রিড ব্যতিত যে কাউকে নেতা মানতে আমাদের সমস্যা নেই। সাবেক পৌর মেয়র নাজমুল আহসান নান্নুকে কয়েকবার ফোন করলেও তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। উল্লেখ্য যে, গত ৩০ অক্টোবর আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলন শুরু হওয়ার কিছুক্ষন পরেই বরগুনা ১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেনের সামনেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রীয় নেতারাও তাদের নিভৃত করতে না পেরে সমাবেশ স্থল ত্যাগ করেন। কিছুক্ষণ বিরতির পর বিকেলে আবারও ২য় সেশনে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন ইউনিয়নের সভাপতি- সম্পাদকদের নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট এম এ কাদের মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান, ইউনিয়নের বিভিন্ন চেয়ারম্যানগন, কাউন্সিলর, ডেলিগেটর সহ প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সকল নেতাকর্মী সভায় উপস্থিত ছিলেন। সেই সভাতেই বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, আমি দীর্ঘ ৯ বছর দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছি। প্রতিটি ওয়ার্ডের কর্মী থেকে শুরু করে আওয়ামীলীগের সকল পর্যায়ের নেতাদের ভালোবাসা পেয়ে আসছি। এই হামলার পরিকল্পনার সাথে যুক্ত ছিলেন আমতলী উপজেলা পরিষদের বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকার ও বিএনপি জামাত থেকে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত সাবেক মেয়র নাজমুল আহসান নান্নু, তিনি আরো বলেন, সম্মেলনের দিন হামলাকারীরা অধিকাংশই পটুয়াখালী জেলার ছাত্রদলের নেতাকর্মী। আমি দক্ষতার সাথে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই বিএনপির ক্যাডার দিয়ে এই হামলা করা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট এম এ কাদের মিয়া বলেন, জিএম ভাইর মৃত্যুর পর দক্ষতার সাথে দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছি, মতি আর আমি দলের প্রতিটি কর্মীর সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখি। দলের সাথে আছি জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত দলের সাথেই থাকব। এ বিষয়ে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, আমারা তালিকা পেয়েছি, জেলার নেতাদের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যেহেতু আগামী ১৬ তারিখ জেলার সম্মেলন তাই তার আগেই কমিটি দেয়া হবে। আর যারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য এডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এমপিকে বারবার ফোন করেলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।