প্রতিবেদক ॥ সরকার নির্ধারিত মুল্যে বিক্রি করতে না পারার কারনে আলু শুন্য নগরীর পাইকারী বিক্রেতার আড়ত। বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে আলু শুন্য হতে থাকে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা। শুক্রবার সকাল থেকে কোন আড়তে আলু ছিলো না। কবে থেকে আবার আলু বিক্রি শুরু হবে কোন আড়তদার সেই বিষয়ে কিছু জানাতে পারছে না। তাদের বক্তব্য সরকার ভালো বলতে পারবেন।
নগরীর পিয়াজ পট্টির মেসার্স সাজ্জাদ হোসেন এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, ব্যবসার জন্য বেচা কেনা করবে। কেউ তো লস দিয়ে বিক্রি করবে না। সরকার যে মুল্য নির্ধারন করে দিয়েছে, সেই দামে পাইকাররা কিনতে পারে না। তাই আলু আনে না। তিনি জানান, এক আড়তদার ৩৮ টাকা পাইকারী দরে আলু কিনে এনে বিক্রি শুরু করেছিলো। ভোক্তা সংরক্ষন অধিদপ্তর এসে বেশি দামে কিনে বিক্রি করায় জরিমানা করেছে। তাই কেউ আলু ক্রয় করে না।
ভোক্তা অধিদপ্তর জানিয়ে দিয়েছে সরকার নির্ধারিত দামে কিনতে পারলে আলু আনতে বলেছে। তা না হলে আনতে নিষেধ করে দিয়েছে।
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তারা যদি সরকারী রেটে এনে দেয়। আমরা বিক্রি করবো।
এখানের আড়তের জন্য মুন্সীগঞ্জ ও উত্তরবঙ্গ থেকে আলু নিয়ে আসে পাইকাররা জানিয়ে সাজ্জাদ বলেন, পাইকাররা আলু আনছে না। তাই বিক্রি করতে পারছি না।
মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী জুয়েল খান জানান,পিয়াজ পট্টির আড়তের সিংহভাগ পাইকার মুন্সীগঞ্জের। সেখান থেকে যে দামে কিনে, এখানে এনে বিক্রি করে লস হয়। তাই তারা আনে না।
তিনি বলেন, সরকার পাইকারী বাজারে ২৬-২৭ টাকা ও খুচরা বাজারে ৩২-৩৫ টাকা দরে বিক্রি করতে বলেছে। কিন্তু এ দামে পরতা হয় না।
তাই বিক্রি করেন না জানিয়ে জুয়েল খান বলেন, সরকার যদি ওই দামে দেয় “আমরা বিক্রি করবো”।
তিনি আরো বলেন, কোল্ড ষ্টোরে পর্যাপ্ত আলু মজুদ রয়েছে। আলুর সংকট নেই।
মেসার্স কৃষি বানিজ্যলয়ের কর্মচারী মো. আলেক জানান, সরকারী রেটে আলু কিনতে পারছে না। তাই পাইকাররা আলু আনছে না। ওই রেটে এনে লস দেবে।
তিনি জানান, সরকার খুচরা বাজারে ৩৬ টাকা দরে বিক্রি করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু পাইকারী বাজারেই ওই দরে আলু নেই।
পিয়াজ পট্টি এলাকায় ৩৫ টি আড়ত রয়েছে। এ সকল আড়ত থেকে প্রতিদিন দেড় হাজার থেকে দুই হাজার বস্তা আলু বিক্রি হয়। আলু না থাকায় আড়তদারদের চেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন এখানকার শ্রমিকরা। দিনভর একশ টাকাও আয় হয়নি জানিয়ে শ্রমিক হারুন ফকির জানান, প্রতিটি আড়তে তিন থেকে চারজন শ্রমিক কাজ করেন। মজুরী ভিত্তিকসহ ৪০০ শ্রমিক রয়েছেন। তারা এখন বেকার হয়ে পড়েছেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী বলেন, গত সপ্তাহে প্রতিদিন আমরা পিয়াজ পট্টির তদারকি করেছি। বেশি দামে আলু ক্রয় করে বিক্রির করায় কোন জরিমানা করা হয়নি। শুধুমাত্র মুল্যতালিকা না থাকায় জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, আমরা আলু সরবরাহ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছি। সঠিক ভাউচার রাখার পরামর্শ দিয়েছি। বেশি দামে কেনা-বেচা করতে নিষেধ করিনি। জেলা প্রশাসন থেকে কঠোর নজরদারী করা হয়েছে। তাদের বার্তা হয়তো আমাদের বলে ভুল করেছে যোগ করেন অপূর্ব অধিকারী।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোহেল মারুফ বলেন, বৃহস্পতিবার তো ছিল। আজ নেই, বিষয়টি জানি না। এখনই খবর নিচ্ছি।