২২ ঘণ্টা পর গহীন সুন্দরবনে ফিরে গেছে শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি স্টেশনের চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়িতে অবস্থান নেয়া তিন বাঘ। শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে ফাঁড়ির পুকুরপাড়ে প্রথমে দুটি বাঘের দেখা মিলে। পরে তাদের সঙ্গে আরও একটি বাঘ যোগ দেয়। শনিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত ফাঁড়ি চত্বরে তিনটি বাঘ ঘুরে বেড়িয়েছে, বিশ্রাম নিয়েছে। শনিবার বেলা ২টার আর বাঘ তিনটিকে দেখা যায়নি। এই ২২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন ওই ফাঁড়ির সাত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ।
চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়ির বনরক্ষী তরুণ মজুমদার জানান, চান্দেশ্বর ফাঁড়ির পাশেই বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য। শুক্রবার বিকালে হঠাৎ করে দুটি বাঘ একসঙ্গে ফাঁড়ির ভেতরের পুকুরপাড়ে চলে আসে। তারা ঘোরাঘুরি করতে থাকে। এই পুকুরে প্রাণীরা স্বাদু পানি পান করে থাকে। ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক শেখ প্রথমে বিষয়টি লক্ষ্য করেন।
পরে তিনি অন্যদেরও ডেকে দেখান। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরাপদ দূরত্বে থেকেই বাঘগুলোকে দেখছিলেন। তারা এ সময় বাঘের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ করেন। কিছু পরে দুটি বাঘের সঙ্গে আরেকটি বাঘ এসে যোগ দেয়। তিনি বলেন, এখন বাঘের প্রজনন মৌসুম। তাই তারা একসঙ্গে চলাচল করছে।
এই টহল ফাঁড়ির আশপাশে পায়ের ছাপের দেখা মিললেও সশরীরে বাঘের দেখা খুব একটা পাওয়া যায় না বলে জানান এই বন রক্ষী।
তিনি বলেন, অনেক বছর পর টহল ফাঁড়ির ভেতরে বাঘের দেখা মিলল। প্রায় ২২ ঘণ্টা বাঘ তিনটি আর টহল ফাঁড়ির বাইরে বের হয়নি। আজ বেলা ২টার পর বাঘ তিনটি নিজেরাই বনের গহীনে ফিরে গেছে।
তিনি বলেন, বাঘগুলো যদি কোনো ধরনের হিংস্র আচরণ করত তাহলে তারা ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের বনের ভেতরে পাঠানোর চেষ্টা করত। বাঘগুলো শান্ত ও স্বাভাবিক আচরণ করায় বনকর্মীরা তাদের দৈনন্দিন বিচরণ ও জীবনাচারণ উপভোগ করেছে।
এ বিষয়ে খুলনার বয়রা সরকারি মহিলা কলেজের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. এসএম আলী আশরাফ বলেন, নভেম্বর মাস বাঘের প্রজননকালীন সময়। তাই এই সময়ে এরা একত্রে ঘোরাফেরা করে। তবে এ সময় এদের মেজাজ অনেক কড়া থাকে। তাই কেউ এদের বিরক্ত করলে ক্ষেপে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।