সাংবাদিক নোমানীকে খুনের পরিকল্পনা : কিলিং মিশনে অংশ নেয় ৮ জন
প্রকাশ: ৯ জুন, ২০২২, ৬:৪০ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
*কারাগারে -১ :
* গডফাদাররা ধরা ছোয়ার বাইরে:
* দেশ ও দেশের বাইরে তোলপাড় :
স্টাফ রিপোর্টার : মামুনুর রশীদ নোমানী। স্বজ্জন সদালাপী ও সাদা মনের একজন সৎ সাংবাদিক। মানুষের বিপদে আপদে ছুটে চলেন। প্রতিবাদী এই সাংবাদিক কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেনি। রাজাপুরের চল্লিশ কাহনিয়ায় অর্ধশত বছরের একটি পুরাতন কবরস্থান ও কালেমা, আল্লাহু এবং মুহাম্মদ লেখা একটি তোরন ভাঙ্গার জন্য একটি পক্ষে উদ্যোগ নেয়। অপর পক্ষ ভাঙ্গার বিরোধীতা করে। কবর স্থান ও তোরন এর ব্যাপারে সাংবাদিক মামুনুর রশীদ নোমানী ৩১ মার্চ’২২ তারিখ একটি সংবাদ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভের সূত্র ধরে। সংবাদ প্রকাশই কাল হলো নোমানীর। সংবাদ প্রকাশের পরে কুখ্যাত খুনিরা নোমানীকে খুনের পরিকল্পনা করে দফায় দফায় মিটিং করে। তাদের টার্গেট কখন বরিশাল থেকে নোমানী বাড়ি আসে। ওৎ পেতে থাকে ওরা। খুনের পরিকল্পনাকারীরা বর্তমানে রাজাপুর থানায় নোমানীকে হত্যা প্রচেস্টা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী । আসামীরা হলো দেলোয়ার,ফেরদৌস,আলম,দুলাল, কালু মোল্লা,ফজলে হক,আমিনুল,হোসেন আলী।
এদের পিছনে কলকাঠি নাড়ছে তিন গফাদার। এপ্রিল’২২ এর প্রথম সপ্তাহে দফায় দফায় মিটিং করে। খুন করার জন্য গডফাদাররা দ্বায়িত্ব প্রদান করে দেলোয়ার, কালু মোল্লা,হোসেন আলী,ফজলে হককে। এই চার জন মিলে দেশীয় অস্ত্র ,ধারালো অস্ত্র ও লাঠি,আয়রন রড রুমিয়ান ফকির বাজারের একটি দোকানে মওজুদ করে।
স্থানীয় একাধিক লোকজন জানায়, দেলোয়ার, কালু মোল্লা,হোসেন আলী,ফজলে হকসহ অন্যান্যদের সাথে বিরোধ নাই নোমানীর।তবে খুনের পরীকল্পনাকারীদের এক কথা কেন নিউজ করলো তোরন ও কবর উচ্ছেদ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে।
এই চক্রটি জাল টাকা ব্যবসার সাথে জড়িত।
কালু মোল্লার পুত্র বাবু একাধিকবার ঢাকায় জালটাকা ও মাদকসহ আটক হয়েছিল। কালু মোল্লাও জাল টাকা ব্যবসার সাথে জড়িত। এদের রয়েছে বিশাল এক সিন্ডিকেট। বাবু মোল্লার সহযোগী ঢাকা ও ঝালকাঠীতে বসে জাল টাকা তৈরী করতো।
এলাকার একটি দোকানে জাল টাকা দিতে গিয়ে ধরাও পড়েছিল।
এদিকে এসব কর্মকান্ডের জন্য স্থানীয় লোকজন ঐ খুনি চক্র জালটাকা -ব্যবসায়ীদের ভয়ে থাকে। থাকে আতংকে। দৃশ্যমান কোন আয় নাই অথচ লাখ লাখ টাকা সুদের ব্যবসা ও বিল্ডিং নির্মানে খরচ করছে। একই ভাবে আলম ওরফে চোরা আলম ঢাকা থেকে চুরি করে দেশে এসে মুসুল্লী সেজে একের পর এক অপকর্ম করে আসছে। ঢাকার একাধিক থানায় জাল টাকা ও চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা রয়েছে।
জাল টাকার গরমে এলাকায় মারপিট,হামলা, ভাংচুর ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছে।
চলতি বছরের ৩১ মার্চ বরিশাল খবরে একটি সংবাদ প্রকাশ করলে জাল টাকা -ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
এর পরই দৈনিক শাহনামার প্রধান বার্তা সম্পাদক ও মেট্রোপলিটন প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক মামুনুর রশীদ নোমানীকে খুনের পরিকল্পনা করে।
৩ জুন নোমানী বাড়ি থেকে বরিশালে আসার পথে তার ওপর উপরে বর্বরোচিত হামলা চালায়। এতে তার মাথায় অনেক ক্ষত হয়ে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়েছে। বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশন শেষে সার্জারী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিল সাংবাদিক নোমানী।
এ হামলায় তার বৃদ্ধা মা পারুল বেগম এবং বোন লিপি আক্তারও গুরুতর আহত হয়েছেন।
৩ জুন শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে ঝালকাঠীর রাজাপুরের চল্লিশকাহানিয়া শাহরুমীর বাজারে এই হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলাকার চিহ্নিত জাল টাকা -ব্যবসায়ী, মাদক ব্যবসায়ী ও দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মুনসুর মোল্লার ছেলে দুলাল ও আলম, ফেরদাউস, ফজলে হক, কালু মোল্লা, হোসেন আলী, দেলোয়ার সহ প্রায় ১৫/২০ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ আগে থেকেই ওৎ পেতে ছিল। সাংবাদিক নোমানী ঘটনাস্থলে গেলেই তার উপরে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। খবর পেয়ে নোমানীর মা ও বোন তাকে বাঁচাতে গেলে তাদেরকেও কোপায় সন্ত্রাসীরা। তারা তিনজনই মুমূর্ষূ অবস্থায় শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাদের অবস্থা গুরুতর। সিটি স্ক্যান ও এক্সরে রিপোর্টে মারাত্মক ক্ষতের চিন্থ পাওয়া গেছে।
কি ছিল সেই সংবাদে :
কালিমা তাইয়েবা ,আল্লাহু ও মুহাম্মদ লেখা একটি তোরণ ও অর্ধশত বছরের একটি কবর ভাঙ্গার উদ্যোগ নেয় ঐ গ্রুপ। এলাকার সচেতন মহল এর বিরোধীতা করে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ করে ৩০ মার্চ। আর এই সংবাদ প্রকাশ করে সাংবাদিক নোমানী ৩১ মার্চ ।
কবরস্থান ও তোরণটি ভাঙ্গতে না পেরে ক্ষিপ্ত হয় তারা। দীর্ঘ পরিকল্পনার মাধ্যমে অবশেষে এই হামলার ঘটনা ঘটায় ৩ জুন বিকেলো।
আহতের স্বজনরা বলেন, তারা নোমানী ও তার মাকে কুপিয়ে মৃত ভেবে ফেলে রাখে। হত্যা করার উদ্যেশেই তারা এভাবে কুপিয়েছে। বর্তমানে তাদের চিকিৎসা চলছে।
এ ব্যাপারে রাজাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন নোমানীর বোন লিপি আক্তার। অপর দিকে জাল টাকা ব্যবসায়ী ও কুখ্যাত খুনিচক্ররা নিজেদের বাঁচাতে একটি কাউন্টার মামলা দায়ের করে।
এ ব্যাপারে রাজাপুর থানার ওসি পুলক চন্দ্র রায় বলেন, সংঘর্ঘের পরই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এঘটনায় মামলা হয়েছে।
এদিকে এই বর্বর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার ও কঠোর বিচার দাবি জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ, বরিশাল অনলাইন সাংবাদিক ইউনিয়ন, অনলাইন প্রেস ইউনিটি,অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন,বাংলাদেশ মানবাধিকার সমিতি,বাংলাদেশ অনলাইন রিপোর্টার্স ইউনিটি,এনপিপি,বরিশাল প্রকাশক ও সম্পাদক পরিষদ,সচেতন নাগরিক আন্দোলন,বাংলাদেশ অনলাইন জার্নালিষ্ট এ্যাসোসিয়েশন, নতুনধারা,বাংলাদেশ মিডিয়া ফোরাম। আন্তর্জাতিক গনমাধ্যম সংগঠন সিপেজে,আর্টিকেল ১৯সহ অসংখ্য গনমাধ্যম সংগঠন,সামাজিক সংগঠন,ব্যক্তি।