ভোটে বিজয়ী হয়ে শপথ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে বসছেন এক মাস ধরে। শুধু ইউনিয়ন না তৃতীয় লিঙ্গের এই চেয়ারম্যানের কর্মের দিকে তাকিয়ে রয়েছে পুরো দেশবাসী। কারণ তিনি অন্য আট-দশজন চেয়ারম্যানের মতো না। তিনি দেশের প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ঋতু।
পরিষদের বাইরের বারান্দায় ও পরিষদ ভবনের তার নিজের চেয়ারে উভয় জায়গাই চলছে একের পর এক শালিশ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে তিনি সাধারণ মানুষের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছেন। কঠোরতার সঙ্গে এবং সতর্কভাবে তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন তার ইউনিয়ন পরিষদ। বেশীরভাগ বিচার প্রত্যাশীরাই খুশি তৃতীয় লিঙ্গের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ঋতুর কর্মে।
শাহজান আলী নামে এক বাসিন্দা বলেন, আমরা এখনও কোন ধরনের স্বজনপ্রীতি বা দুর্নীতি দেখিনি। তিনি দিনের পর দিন মানুষের কাছে ছুটে চলেছেন। এভাবে চললে অবশ্যই এই ইউনিয়ন বাংলাদেশের মধ্যে অনন্য ইউনিয়ন হবে।
পরিষদ কর্মকর্তা হামিুদল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষ তার কাছে যেতে পারছেন খুব সহজেই। তিনি দল-মত নির্বিশেষে সকলকেই সমান অধিকার দিচ্ছেন। সঠিক বিচার পেতে শুরু করেছে জনগণ।
কালীগঞ্জ ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ঋতু বলেন, যদি কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী দুর্নীতি করে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি নিজেও যদি দুর্নীতি করেন, তা হলে সরকার যে শাস্তি দেবে তাই মাথা পেতে নেবেন। শুনেছি আগে জন্ম নিবন্ধন, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতার কার্ড নিতে হলে বেশি টাকা দিতে হতো। এখন থেকে সরকার নির্ধারিত টাকা ছাড়া ইউনিয়নবাসীর বেশি টাকা গুনতে হবে না। মানুষের সুখে-দুঃখে থাকার চেষ্টা করছেন। যে দলেরই কর্মী হোক না কেন, আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করব। কে কোন দল করে সেটি তিনি দেখতে চান না।
দেশের প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের চেয়ারম্যান হয়ে এই ইউনিয়নকে দেশের মধ্যে এক নম্বরে নিয়ে যেতে চান তিনি। আজীবন জনকল্যাণে কাজ করতে চান। বলেন, আমার সংসার সন্তান নেই কার জন্য দুর্নীতি করব?
উল্লেখ্য, তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রার্থীকে দ্বিগুণ ভোটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন তৃতীয় লিঙ্গের নজরুল ইসলাম ঋতু। ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ধলা দাদপুর গ্রামের আব্দুল কাদের ও ফাতেমা বেগম দম্পতির সন্তান ঋতু। ৫ ভাই-বোনের মধ্যে ঋতু তৃতীয়।