সোমবার ৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   সোমবার ৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ



শ্রীলংকার মতো সংকটে পড়বে না বাংলাদেশ
প্রকাশ: ২ আগস্ট, ২০২২, ১:১৩ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

শ্রীলংকার মতো সংকটে পড়বে না বাংলাদেশ

দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলংকা একটি গভীর এবং অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে; যা কারণে দেশটির জনগণের মধ্যে বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং দেশটির প্রেসিডেন্টের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

এই অঞ্চলের অন্যান্য উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোতেও একই সমস্যার উদ্ভব হতে পারে কি না তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে আলোচনা।

সম্ভাব্য ঋণ সংকট অথবা আরও খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে এমন কিছু অর্থনীতির দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের নামও আসছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের তথ্যের ভিত্তিতে ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্টের ওয়েবসাইটে সম্প্রতি ২৫টি দেশের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে; যারা ঋণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। রাশিয়া, জাম্বিয়া, সুরিনাম, লেবানন এবং অন্যান্য দেশও সেই তালিকায় রয়েছে। ব্যাংকক পোস্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এছাড়া দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশও রয়েছে বলে সেখানে বলা হয়েছে। এছাড়া ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, ঋণ এবং উচ্চ ব্যয়ের কারণে আরও বেশি বিপদে আছে এক ডজন দেশ। এসব দেশ হল, আর্জেন্টিনা, ইউক্রেন, তিউনিসিয়া, ঘানা, মিসর, কেনিয়া, ইথিওপিয়া, এল সালভেদর, পাকিস্তান, বেলারুশ এবং ইকুয়েডর। তবে আশার কথা সেই তালিকায় নেই বাংলাদেশ।

অবশ্য বাংলাদেশের জন্যও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে অর্থনীতির গতি সমান রাখতে কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে লাগাম, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্সে নগদ প্রণোদনা এবং বিলাসবহুল পণ্যের ওপর করারোপ করা হয়েছে।

সহজেই আমদানির চাহিদা মেটাতে এসব পদক্ষেপ দেশটিকে রিজার্ভ বাড়াতে সহায়তা করছে। এছাড়া রপ্তানি বৃদ্ধি এবং আমদানি হ্রাসে সরকারের নেওয়া নীতি ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের কারণে আরও প্রকট হয়েছে; এসব অস্বীকার করা যায় না। রুশ-ইউক্রেন সংঘাত বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে। একইসঙ্গে বাড়িয়ে দিয়েছে বৈশ্বিক সংকট।

সেখানে বলা হয়েছে, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশকে অবশ্যই রপ্তানি-আমদানির অনুপাতের উন্নতির পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও সমান অগ্রাধিকার দিতে হবে। অবশ্য ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয় পরিশোধের তুলনায় বাংলাদেশের অনেক বেশি রিজার্ভ রয়েছে। তবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটলে রিজার্ভ কমে যাওয়াটা উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ ও পুনরুদ্ধারে একটি ব্যাপক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাজেট ব্যবস্থাপনার সব স্তরে কৌশলগত হস্তক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যয় কমানোর ওপর জোর দিয়ে আসছেন। কীভাবে অতিরিক্ত ব্যয় না করে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো চালিয়ে যাওয়া যায় সে ব্যাপারে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে পরামর্শ দিচ্ছেন শেখ হাসিনা।

এছাড়া শেখ হাসিনা অর্থনীতির ওপর চাপ কমানোর জন্য শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো সম্পন্ন এবং অগ্রাধিকার কম রয়েছে এমন সব প্রকল্প স্থগিত করার ওপর জোর দিয়েছেন। এখনও বাংলাদেশে এমন অনেক বিশ্লেষক আছেন যারা বিশ্বাস করেন যে, শ্রীলংকার মতো একটি সংকটের দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। যা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য জনগণকে রাস্তায় নামিয়ে আনবে। অবশ্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারও বলছে, শ্রীলংকা এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি একেবারে ভিন্ন।

উন্নয়ন সহায়তা সংস্থাগুলোও বারবার বলেছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি শ্রীলংকার সঙ্গে তুলনা করার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। শ্রীলংকার অর্থনীতি পর্যটনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, যা মহামারির কারণে ভেঙে পড়েছে। এর ফলে শুরুতেই দেশটির বৈদেশিক রিজার্ভ কমে যায়।

এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশটির অর্থনীতিতে খড়গ নেবে আসে। আমদানিকৃত জ্বালানি এবং অন্যান্য পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশটির মজুতও প্রায় সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়ে যায়। প্রধান প্রধান বিভিন্ন পণ্যের আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করা হয় এবং জনগণের ক্ষোভ তৈরি হতে শুরু করে। আর এই ক্ষোভ শেষ পর্যন্ত তীব্র আকার ধারণ করে এবং দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাকপাকসে ক্ষমতাচ্যুত হন।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান দুই স্তম্ভ হল তৈরি পোশাক খাত এবং বাংলাদেশি প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা। দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।

মহামারির প্রথমদিকে মনে করা হচ্ছিল রেমিটেন্স প্রবাহ কমে যাবে। কারণ সেই সময় অনেক প্রবাসী তাদের চাকরি হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সাফল্যে অনেক বাংলাদেশি প্রবাসী তাদের কর্মস্থলে ফিরেছেন এবং মহামারি পূর্ববর্তী সময়ের মতো দেশে অর্থ পাঠাচ্ছেন।

বিপদের সময় আমরা যেমন পারিবারিক খরচ কমিয়ে দেই, তেমনি রাষ্ট্রকেও কাটছাঁট করতে হয়। শ্রীলংকা তার সামর্থ্যের চেয়ে বেশি ঋণ করেছে। বিপথগামী নীতি ফসলের উৎপাদন হ্রাস করেছে। তবে বাংলাদেশে তেমন কোনো সংকট নেই বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

প্রধান উপদেষ্টা : প্রফেসর শাহ্ সাজেদা ।

উপদেষ্টা সম্পাদক : সৈয়দ এহছান আলী রনি ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মামুনুর রশীদ নোমানী ।

যোগাযোগ: আদালত পাড়া সদর রোড,বরিশাল।

ইমেইল: nomanibsl@gmail.com

মোবাইল: 01713799669/01711358963

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি।
© বরিশাল খবর সম্পাদক মামুনুর রশীদ নোমানী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

  নলছিটির মগড় ইউনিয়নবাসীর সেবা করতে চান মোঃ সাইফুজ্জামান সুমন তালুকদার   প্রাণ ফিরছে বরিশাল নগরীর ৭ খালে   বেতারের সঙ্গীত শিল্পী (পল্লীগীতি) হিসেবে মনোনীত হলেন অ্যাড: জুয়েল   বরিশালের মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাচারী প্রধান শিক্ষিকা স্ট্যান্ড-রিলিজ !   বরিশাল ল’ কলেজে দুর্নীতি, উন্নয়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ   অনিয়ম দুর্নীতির আতুরঘর বরিশাল বেতার : চলছে জোড়াতালি দিয়ে   বরিশাল ডাকঘরের ক্যাশিয়ার নুরুল কবিরের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ   দেড় লাখ মামলা মাথায় বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মীর   আলু শুন্য বরিশালের পাইকারী বাজার   বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের ওপর মার্কিন ভিসানীতি শুরু   মাদারীপুরের হিমাগারে ৩০ হাজার বস্তা, বাজারে আলুর কৃত্রিম সংকট   যুদ্ধ স্যাংশন সংঘাতের পথ এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর আহবান   Mamunur Rashid Nomani charged with violating Bangladesh’s Digital Security Act   ঝালকাঠিতে রোহিঙ্গা আটক এসেছিলো ভোটার হওয়ার জন্য   সাঈদুর রহমান রিমনকে নিয়ে দিলিপ কুচক্র মহলের ষড়যন্ত্রের জবাব!   বাবুগঞ্জে ইজিবাইক ছিনতাই চক্রের চার সদস্য আটক   নলছিটিতে ৫০তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ   অপরাধ ঘটাতে আগাম ‘রেকি‘ করে গেছেন তারা!   ঝালকাঠি কারাগার: কু-প্রস্তাবের দাম দশ লাখ টাকা! জেলার বহাল তবিয়তে   রাজাপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দুর্নীতির আখড়া